বান্দরবানে মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে সৎ পিতার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাব্যুনাল আদালত।
আজ বুধবার দুপুরে বান্দরবান সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাব্যুনালের বিচারক জেবুন্নাহার আয়শা আদালত এ রায় দেন।
আদালত ও আইনজীবী সূত্রে জানা গেছে, রোয়াংছড়ি উপজেলার থোয়াইঅংগ্যা পাড়া এলাকার বাসিন্দা সাজাপ্রাপ্ত আসামি আপুইমং (৬৫) এর সঙ্গে দীর্ঘ ১২ বছর পূ্র্বে ধর্ষিতা শিশুর মায়ের বিবাহ হয়। মায়ের বিবাহের পর তিন বছর বয়সে মায়ের সঙ্গে আসামি বাড়িতে চলে আসে।
ভিকটিম এক প্রকার আসামির বাড়ীতে বড় হয় এবং ভিকটিক আসামিকেই নিজের বাবা হিসেবে চিনে। মায়ের অনুপস্থিতিতে আসামি সৎ পিতা ২০২০ সালের গত ১৫ নভেম্বর ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভিকটিম সৎকন্যাকে ধারাবাহিকভাবে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে ভিকটিম গর্ভবতী হয়ে তার আপন ভাই হ্লা মং সিং বাড়ীতে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করে।
পরবর্তীতে এ ঘটনাটি জানাজানি হলে ভিকটিমের মা আসামির স্ত্রী মেসাচিং মারমা ২০২১ সালের ৮ জুলাই বাদী হয়ে রোয়াংছড়ি থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনায় রাস্ট্রপক্ষের ১০ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য আদালতে উপস্থাপন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন স্পেশাল পি পি এড. বাসিংথুয়াই মার্মা। আসামি পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এড. উম্যাসিং মারমা।
আদালত মামলার সকল কাগজপত্র, স্বাক্ষী, বাদী, ভিক্টিম সকলের বক্তব্য শ্রবণক্রমে বিচারক আসামি আপুইমং মারমাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লক্ষ টাকা জরিমানা এবং জরিমানা টাকা অনাদায়ে আরও এক বছর কারাদন্ডের রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্ত আসামি রোয়াংছড়ি থোয়াই অংগ্য পাড়ার বাসিন্দার মৃত সাপ্রুঅং মারমার পুত্র। বিষয়টি নিশ্চিত করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী স্পেশাল পি পি এড. বাসিংথুয়াই মারমা জানান, মামলা প্রাথমিক তথ্য বিবরণী, এজাহার ও চার্জশীট ইত্যাদি পর্যালোচনা করে আদালত কন্যাকে ধর্ষণের দায়ে সৎ পিতার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাব্যুনালের বিচারক জেবুন্নাহার আয়শা আদালত। রায় প্রদানের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর আসামিকে পুনরায় জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।