মুন্সীগঞ্জ, ১৬ মার্চ – মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রী মাজেদা বেগমকে (৩০) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।
আজ রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মুন্সীগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক কাজী আব্দুল হান্নান এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. হোসেন।দণ্ডপ্রাপ্ত মাজেদা বেগম শ্রীনগর উপজেলার পুটিমারি গ্রামের অলিউল্লাহ মোল্লা স্ত্রী।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদীর ভাই অলিউল্লাহ মোল্লা সৌদি আরব প্রবাসী। তিনি মাঝে মাঝে বাড়িতে আসতো। তিন সন্তান নিয়ে তার স্ত্রী মাজেদা বেগম আলাদা থাকেন। সর্বশেষ অলিউল্লাহ সৌদি আরব থেকে দেশে আসার পর তার স্ত্রী মাজেদা বেগমের সঙ্গে সাংসারিক বিষয়াদি নিয়ে মনমালিন্য হয়। ২০১৭ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি রাতের খাবার খেয়ে সৌদি প্রবাসী অলিউল্লাহ তার বসত ঘরে ঘুমিয়ে যান। পরের দিন সকাল ৬টার দিকে অভিযুক্ত মাজেদা বেগম তার দুই ছেলেকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।
এ সময় মাজেদা বেগমের ভাসুর ও মামলার বাদী কোথায় যাওয়া হচ্ছে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান তার স্বামীর টিকেটের টাকা সংগ্রহ করার জন্য বাইরে যাচ্ছেন। পরে দুপুর ১২টার দিকে অলিউল্লার বাসায় পুলিশ ও লোকজন দেখে তার বড় ভাই মামলার বাদী পুলিশ প্রতিবেশী ও আত্মীয়ের সহায়তায় অলিউল্লাহর ঘরের দরজা খুলে ভেতরে অলিউল্লাহর মরদেহ গলায় কাপড়ের ওড়না পেঁচানো ও হাতে পায়ে রশি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরে স্থানীয়রা ও পুলিশ জানতে পারে অলিউল্লাহর খাবারের সঙ্গে তার স্ত্রী মাজেদা বেগম অন্যান্যদের সহযোগিতায় ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করে গলায় ফাঁস দিয়ে অলিউল্লাহকে হত্যা করেছেন।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মো. হালিম হোসেন জানান, ২০১৭ সালে শ্রীনগর উপজেলায় সৌদি প্রবাসী ওয়ালিউল্লাহকে তার স্ত্রী মাজেদা বেগম খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে সচেতন করে ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় অলিউল্লাহর ভাই আহসানুল্লাহ বাদী হয়ে শ্রীনগর থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে মুন্সীগঞ্জ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালত আসামি মাজেদা বেগমকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন। আদালত মামলা পর্যালোচনা করে সঠিক রায় দিয়েছেন। আদালতের রায়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট পোষণ করছি।
সূত্র: আমাদের সময়
আইএ/ ১৬ মার্চ ২০২৫