গাজী মোহাম্মদ আবু তাহের, মহেশখালী::
মহেশখালী উপজেলার শাপলাপুর ইউনিয়নের ষাইটমারা এলাকায় গভীর রাতে চিংড়িপ্রজেক্টে দূর্বৃত্তদের হানা,মনির আহমেদ (৫০) নামের এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা।
০৩ নভেম্বর (রবিবার) রাত আনুমানিক সাড়ে ৩ টায় শাপলাপুর ইউনিয়নের ষাইটমারার পূর্বে পাট্টাচরি নামক মাছের প্রজেক্ট এই ঘটনা ঘটে।
রাতেই আহত অবস্থায় মনির আহমদকে উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার সময় ওই প্রজেক্টের পাশ্ববর্তী ঘেরে অবস্থান করা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী প্রজেক্ট শ্রমিক জানান, রাত আনুমানিক সাড়ে ৩টার দিকে ৮-১০ জনের একদল দূর্বৃত্ত পাট্টাচরি প্রজেক্টে গুলি করে। গুলির শব্দ শুনে বের হয়ে দেখে দূর্বৃত্তরা চিংড়ী প্রজেক্টের আহরণ কৃত মাছ নিয়ে চলে যেতে দেখা যায়। দূর্বৃত্তদের ছুটা গুলি মনির আহমদ এর মাথায় লাগে তাকে উদ্ধার করে চকরিয়া হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
নিহত মনির আহমদ এর পরিবার সূত্রে জানা যায়,
গত দুমাস ধরে মনির আহমদকে মুঠোফোনে এবং সরাসরি হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। এমন কি তাকে বাড়িতে ঢুকে যেকোনো সময় হত্যা করার কথাও বলা হয়েছিলো। মনির আহমদ পাট্টাচরি ওই প্রজেক্টের সর্দ্দার ও ব্যবসায়ী অংশীদার,জমি কিংবা প্রজেক্ট মালিক না হওয়ায় প্রতিপক্ষের হুমকিতে তিনি বিচলিত ছিলেন না।
নিহতের স্বজন রুহুল আমিন জানান, এটি একটব পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। দু’এক কেজি চিংড়ী মাছের জন্য ডাকাতদল মানুষকে এতো নির্মমভাবে হত্যা করবে তা ধারণার বাইরে। প্রজেক্ট নিয়ে একাধিক পক্ষের দ্বন্দ্ব আছে,তবে মনির আহমদ কোনো পক্ষের না সে ওই প্রজেক্টের ইজারাদার ব্যবসায়ী। তাকে দ্বন্দ্বের বলী করে হত্যা করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ কায়সার হামিদ জানান, চিংড়ী মাছের প্রজেক্টে এক ব্যবাসায়ীকে গুলি করে হত্যার খবর পেয়েছি। লাশ উদ্ধার পরবর্তী ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হচ্ছে। কে বা কারা এই হ’ত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শাপলাপুরে ষাইটমারার ওই পাট্টাচরি চিংড়ী প্রজেক্ট নিয়ে বর্তমান মালিকানাধীন অংশীদারের সাথে কালারমারছড়ার ঝাপুয়ার ১টি পক্ষের বিরোধ চলে আসছিলো।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর কালারমারছড়া ইউনিয়নের ঝাপুয়া ও চালিয়াতলীর কিছু ভাড়াটিয়া অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দিয়ে ওই প্রজেক্ট দখল নিতে কয়েক দফা দখল-বেদখল নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল এবং ওই চিংড়ী প্রজেক্টে ইতিপূর্বে কয়েকবার গোলা-গুলির ঘটনা ঘটেছিল উভয় পক্ষের মধ্যে। উক্ত বিষয় নিয়ে স্থানীয় ভাবে বিরোধ নিষ্পত্তি করার জন্য একাধিক সালিসি বৈঠক হয়েছিল।