বিয়ে করতে সাগরপথে নৌকায় করে মালয়েশিয়া যাচ্ছিলেন রোহিঙ্গা নারীরা। তাদের অনেকের বিয়ে ঠিক হয়েছে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত রোহিঙ্গা যুবকদের সঙ্গে। এছাড়া অনেক নারীর স্বামী দীর্ঘদিন ধরে মালয়েশিয়ায় আছেন। এ কারণে বাংলাদেশ থেকে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে যাওয়ার জন্য দালালদের মাধ্যমে চেষ্টা করেন তারা। কিন্তু দালালরা তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সোনাদিয়া দ্বীপে নামিয়ে পালিয়ে যায়।
সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঐ রোহিঙ্গাদের উদ্ধারে অভিযান চালায় পুলিশ। বিকেল ৫টা পর্যন্ত নারী-পুরুষসহ ১৪৯ জনকে উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী।
কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নাছিমা আকতার বলেন, মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত এক রোহিঙ্গা যুবকের সঙ্গে আমার বিয়ে ঠিক হয়েছে। আমার পাসপোর্ট করার কোনো সুযোগ না থাকায় স্বামী সাগরপথে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য প্রথম দফায় দালালদের ৩০ হাজার টাকা দিয়েছি।
বালুখালী ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নারী খদিজা বেগম বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে ১০ বছর আগে। গত সাত বছর ধরে স্বামী মালয়েশিয়ায় থাকেন। আট বছরের এক মেয়েকে নিয়ে মালয়েশিয়া নেয়ার চেষ্টা করেন আমার স্বামী। ট্রলার দুর্ঘটনায় আমি প্রাণে বাঁচলেও আমার মেয়েটিকে বাঁচাতে পারিনি। তার সঙ্গে এক ননদকেও হারিয়েছি আমি।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম জানান, সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া পাঠানোর কথা বলে উখিয়ার বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গা নাগরিকদের বের করে আনে দালাল চক্র। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে সোনাদিয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।
মহেশখালীর কুতুবজুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শেখ কামাল জানান, মালয়েশিয়ার কথা বলে রোহিঙ্গাদের সোনাদিয়া দ্বীপে নামিয়ে দেয় দালাল চক্র। তারা দ্বীপের এদিক-ওদিক ঘোরাঘুরি করলে সন্দেহ হওয়ায় বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করা হয়।
সোমবার রাতে উদ্ধারকৃত রোহিঙ্গাদের সোনাদিয়া থেকে ৩টি বোটে করে কক্সবাজার ৬নং ঘাটে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বাস করে চট্টগ্রাম বোট ক্লাবে নেয়া হয়। মঙ্গলবার রোহিঙ্গাদের ভাসানচর পাঠানো হয়।