আজ শনিবারও (২২ জানুয়ারি) বিশ্বে বায়ু দূষণে প্রথম স্থান দখল করেছে রাজধানী ঢাকা।
আজও বেলা ১২টার দিকে ঢাকার বায়ু দূষণের মাত্রা সবার উপরে উঠেছে। একইভাবে গত কয়েকদিন ধরেই দূষণের মাপকাঠিতে দিনের কোনও না কোনও একটা সময়ে ঢাকা শীর্ষ অবস্থানে চলে আসছে। শুষ্ক মৌসুমের পাশাপাশি শিল্পকারখানার দূষণ, রাস্তা নির্মাণ ও মেরামতের কাজ, মেট্রোরেলের কাজ, ইটভাটা এবং যানবাহনের দূষণ বেড়ে যাওয়া এর বড় কারণ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ছাড়াও এর সঙ্গে সরকারের কোনও উদ্যোগ না থাকাকেও দায়ী করছেন তারা।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বের বায়ুমান যাচাই বিষয়ক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘এয়ার ভিজ্যুয়াল’ এর বায়ুমান সূচক (একিউআই) অনুযায়ী ঢাকায় আজ বায়ু দূষণের মানমাত্রা ২৭৯৷ গত কয়েকদিন গড়ে ঢাকাএ দূষণের মাত্রা ২০০ থেকে ২৮০ এর মধ্যে অবস্থান করছিল। এই মাত্রার অর্থ হলো বাতাসের মান ‘অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে রয়েছে।
একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০ হলে স্বাস্থ্য সতর্কতাসহ তা জরুরি অবস্থা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ অবস্থায় শিশু, প্রবীণ ও অসুস্থ রোগীদের বাড়িতে অবস্থানের এবং অন্যদের বাড়ির বাইরের কাজে গেলে মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা।
সূচকে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে পাকিস্তানের করাচি ও কাজাখস্তানের নুর সুলতান শহর, যাদের দূষণের মাত্রা যথাক্রমে ২২৪ ও ২০৮।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছয় ধরনের পদার্থ এবং গ্যাসের কারণে ঢাকায় দূষণের মাত্রা সম্প্রতি অনেক বেড়ে গেছে। এরমধ্যে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ধূলিকণা অর্থাৎ পিএম ২ দশমিক ৫ এর কারণেই ঢাকায় দূষণ অতিমাত্রায় বেড়ে গেলেই পরিস্থিতি নাজুক হয়ে উঠছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক আব্দুস সালাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বায়ু দূষণের মাত্রা কয়েকদিন ধরেই অনেক বেশি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাষ্ট্রের দুইটি বিশ্ববিদ্যালয় মিলে ঢাকা শহরের ৩৫টি জায়গায় বায়ুর মানমাত্রা রিয়েল টাইম অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টাই পরিমাপ করছে। আজ শনিবার সকাল থেকে ৩৫টির মধ্যে ১২টির মাত্রা ২৫০ এর মধ্যেই আছে। শুধু ঢাকা নয়, বঙ্গোপসাগরের কাছে যে যন্ত্র আছে; সেখানেও অনেক বেশি দূষণের মাত্রা দেখাচ্ছে। টঙ্গী এবং নারায়ণগঞ্জেও আমাদের মেশিন বসানো আছে; সবগুলোতেই মাত্রা অনেক বেশি।
এর কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সবসময় আমরা যা বলি, আসলে পরিস্থিতি তাইই। শিল্পকারখানার দূষণ, রাস্তা নির্মাণ ও মেরামতের কাজ, ইটভাটা এবং যানবাহনের দূষণ বেড়ে যাওয়া বড় কারণ। এর সঙ্গে সরকারের কোনও উদ্যোগ না থাকাটাও একটা বড় বিষয়। এই বিষয়ে আরও ভালোভাবে মনোযোগ দেওয়া দরকার। নাহলে ভবিষ্যতে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে।
বাংলা ট্রিবিউন