শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ০২:১৮ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

উখিয়ায় প্রশাসন অনুমোদিত ফুটবল টুর্নামেন্ট বন্ধ : অনুমোদন বিহীন টুর্নামেন্ট চলছে : পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
আপডেট: মঙ্গলবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

ফুটবল খেলার টুর্নামেন্টকে কেন্দ্র করে কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত বালুখালী এলাকায় ২ গ্রামবাসীর মাঝে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে দুই পক্ষের মধ্যে । যে কোন সময় খেলার উত্তেজনা নিয়ে দুই গ্রামবাসীর মাঝে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছে স্থানীয় এলাকাবাসী।

স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, গত ২৫ শে জানুয়ারি পশ্চিম বালুখালী ক্রীড়া পরিষদের ব্যানারে উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার অনুমতি নিয়ে পশ্চিম বালুখালী গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে একটি পক্ষ। আয়োজক কমিটির দক্ষতায় সুন্দর ভাবে টুর্নামেন্ট পরিচালিত হয়ে আসছিলো। কিন্তু টুর্নামেন্ট চলার কিছুদিন পর একটি কুচক্রী মহল ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য “রোহিঙ্গা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা নিয়ে অভিযোগ করলে চলমান টুর্নামেন্টটি বন্ধ করে দেয় পুলিশ প্রশাসন। এতে বিরাট একটি ক্ষতির সম্মুখীন হয় আয়োজক কমিটি।

কিন্তু চলমান একটি অনুমোদিত টুর্নামেন্ট বন্ধ করে দেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে বালুখালী এলাকার বহু অপকর্মের হোতা ও মাদক সহ বিভিন্ন মামলার আসামি ফজল কাদের ভুট্টোর নামে একই স্থানে, একই মাঠে আরেকটি টুর্নামেন্ট অনুমোদন দেওয়া হয় বলে জানা যায় এবং উক্ত টুর্নামেন্টের সিংহভাগ দল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী নিয়েছেন বলে সূত্রে জানা যায়।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত কিছুদিন আগেও রোহিঙ্গা এবং স্থানীয়দের মাঝে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা ছিলো৷ রোহিঙ্গা এবং স্থানীয়দের খেলাকে কেন্দ্র বড় ধরনের ঝগড়াঝাটিতে পরিনত হয় যা স্থানীয়দের সহযোগিতায় মিমাংসা করা হয় এবং এর কিছুদিন পরপরই নতুন প্রজন্মের মধ্যে মাদকের আগ্রাসন ঠেকাতে এবং খেলাধুলায় মনযোগী করার লক্ষে খেলার পরিবেশ শুরু হয় পশ্চিম বালুখালী গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের। কিন্তু সেখানে রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে যাওয়ার আশংকা এবং স্থানীয়দের জন্য হুমকির কথা বিবেচনা করে প্রশাসন কর্তৃক এই খেলা বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু এর কয়েকদিন পরপরই একই এলাকায় একই মাঠে নতুন করে রহস্যজনক ভাবে টুর্নামেন্ট পরিচালনা অনুমোদন দেওয়াকে ভিন্ন চোখে দেখছেন সচেতন মহল।

সচেতন মহল বলছেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর কারণে যদি একটি চলমান টুর্নামেন্ট বন্ধ করা হয়ে থাকে, তবে একই স্থানে অন্য একটি টুর্নামেন্ট অনুমোদন কিভাবে দেয় পুলিশ বা প্রশাসন। উখিয়ায় অবস্থানরত পুলিশের সিনিয়র এক কর্মকর্তার পক্ষপাতিত্ব মূলক আচরণ ও নাটের গুরুর ভূমিকার কারনে সাধারণ মানুষের মাঝে পুলিশ সম্পর্কে কি ধারণা জন্ম দিচ্ছে? তাহলে কি প্রভাবশালীদের নিয়ন্ত্রণে কি চলে পুলিশ প্রশাসন?

উখিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাঈদ মুহাম্মদ আনোয়ার বলেন, বালুখালীতে একই মাঠে একটি অনুমোদিত চলমান ফুটবল টুর্নামেন্ট বন্ধ করে দিয়ে আরেকটি অনুমোদন বিহীন নতুন ফুটবল টুর্নামেন্ট কার ইশারায় পরিচালনা করতে দেওয়া হয়েছে? খেলার নামে আসলে এসব কি হচ্ছে? প্রতিযোগিতার পরিবর্তে প্রতিহিংসা কি কারণে ? জোর যার মুলুক তার, এমন পরিবেশ কেন?

প্রশাসনের বহুমুখী সিদ্ধান্তে যদি কোন কারণে শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট ঘটে, তার দায়ী কে নিবে? স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন শান্ত উখিয়াতে অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টির পায়তারা করছে কার স্বার্থে? খেলাধুলার যথাযথ অনুমোদন কর্তৃপক্ষ আসলে কে? এমন নানান প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সচেতন জনমনে।

এ ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, আমার সাথে কোনো পরামর্শ না করে পালংখালী ইউনিয়নে এই খেলা পরিচালনা করছে তবে আমি এটা বিপক্ষে কারণ এখান থেকে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা করা যাচ্ছে৷ রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে বলতে আমি এখন পাগল হয়ে গেছি৷ রোহিঙ্গারা এখন সারাদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যাচ্ছে৷ তার খেলা দেখা বা বাজারের বাহানা দিয়ে ক্যাম্প থেকে বের হয়ে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে৷

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, এ বিষয়ে অবগত হয়েছি, এ ধরণের খেলার জন্য আমাদের থেকে অনুমতি নেওয়া হয়নি৷ এই খেলা খুব শিগগিরই বন্ধ করে দেওয়া হবে৷

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন সজিব জানান, ফজলে কাদের ভূট্টোর নামে কোন টুর্নামেন্ট উপজেলা ক্রীড়া সংস্থা অনুমোদন দেইনি। রোহিঙ্গাদের নিয়ে খেলা পরিচালনা করার অনুমতি কাউকে দেওয়া হয়নি যদি কেউ প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে এমন কর্মকাণ্ড করে থাকলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷

এ বিষয়ে জানতে উখিয়া-টেকনাফের (সার্কেল)  এডিশনাল এসপি শাকিল আহমেদকে একাধিকবার ফোন করা হলেও কল রিসিভ  না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।


আরো খবর: