শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৮:৫৯ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

বন্যায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের ব্যাপক ক্ষতি

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: বৃহস্পতিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৩

জলাবদ্ধতা ও বন্যায় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক স্থানে রেললাইন ভেঙে নিচ দিয়ে পানি চলাচল করছে। আবার কোথাও রেললাইনের পাথর সরে গেছে, সেতু ধসে গেছে। তবে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর যাচাই করবেন বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এদিকে, স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, নির্মাণাধীন এ রেললাইনের কারণে দক্ষিণ চট্টগ্রামে এবার বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়েছে।

টানা বর্ষণে নির্মাণাধীন এই রেলপথের পটিয়া শ্রীমাই খালের ওপরের সেতুর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সেতুটির রেলিং ভেঙে নিচে পড়ে গেছে। পটিয়া রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘সেতুটি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিষয়টি কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। বিষয়টি রেলওয়ের যান্ত্রিক বিভাগ দেখাশোনা করে।’

দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, ‘টানা বর্ষণে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে রেললাইনের ক্ষতি হয়েছে বলে জেনেছি। তবে কী ধরনের ক্ষতি হয়েছে তা পানি কমার পর জানা যাবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইতোমধ্যে দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন ৯০ কিলোমিটার দৃশ্যমান। প্রকল্পের কাজ ৮৭ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে রেললাইনের কাজ সম্পন্ন করে ট্রেন চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। গত কয়েক দিন বন্যার কারণে রেললাইনের কাজ করা যায়নি। পানি কমছে। যেসব স্থানে সমস্যা হয়েছে তা সারানো হবে।’

সাতকানিয়া উপজেলার কেউচিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা এনামুল হক বলেন, ‘এবারের বন্যায় দক্ষিণ চট্টগ্রামে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি। অপরিকল্পিতভাবে দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন নির্মাণের কারণে বন্যা পরিস্থিতি এত ভয়াবহ হয়েছে। মানুষ কষ্ট পেয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি বেড়েছে। রেললাইনটি বেড়িবাঁধের মতো উঁচু করে নির্মাণ করা হয়েছে, যে কারণে পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। পর্যাপ্ত কালভার্ট-ব্রিজ রাখা হয়নি। এ কারণে বন্যা পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে।’

১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পের এই কাজ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল দোহাজারী-রামু-কক্সবাজার ও রামু-ঘুমধুম পর্যন্ত মিটারগেজ রেলপথ নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মধ্যে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে রামু পর্যন্ত ৮৮ কিলোমিটার এবং রামু থেকে কক্সবাজার ১২ কিলোমিটার রেললাইন রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের প্রায় সাত বছর পর ২০১৮ সালে ডুয়েল গেজ এবং সিঙ্গেল ট্র্যাক রেললাইন প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু হয়। চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার রামু পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণে প্রথমে ব্যয় ধরা হয় এক হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। ২০১৬ সালে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। অর্থায়ন করেছে এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বাংলাদেশ সরকার।


আরো খবর: