বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২৮ অপরাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

পাহাড় ঘুরে ঢাকায় আসছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইয়াবা

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: রবিবার, ১৩ আগস্ট, ২০২৩

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে নিয়মিত রুটের বদলে ভিন্ন পথ ব্যবহার করছে ইয়াবা কারবারিরা। কক্সবাজার-ঢাকা রুটে কড়া নজরদারির কারণে এখন অনেক চালান দেশের পার্বত্য অঞ্চল ঘুরে আসছে। কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে ইয়াবা প্রথমে যাচ্ছে বান্দরবান, রাঙামাটি বা খাগড়াছড়ি; পরে সেখান থেকে আনা হচ্ছে ঢাকায়। এখান থেকে ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

সর্বশেষ ঢাকায় এক নারী ও তাঁর জামাতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যমতে, টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে তারা ইয়াবা সংগ্রহ করেন। এরপর পার্বত্যাঞ্চল হয়ে ঢাকায় আসেন।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) কর্মকর্তারা বলেন, ঢাকায় গত দুই মাসে বেশ কয়েকটি ইয়াবার চালান জব্দ করা হয়, যেগুলো নিয়মিত রুটে আনা হয়নি। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পার্বত্যাঞ্চল, কোনো কোনো সময় অন্য জেলা ঘুরেও চালান আনা হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে ফাঁকি দিতে এসব কৌশল কাজে লাগাচ্ছে কারবারিরা। তবে তাদের কৌশল ব্যর্থ হচ্ছে। গোয়েন্দা তথ্য ও নজরদারির মাধ্যমে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

ডিএনসি ঢাকা মহানগর উত্তর কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার মেহেদী হাসান সমকালকে বলেন, মাদক কারবারের হোতারা মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে কিছু মানুষকে দিয়ে ইয়াবা বহন করায়। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যরাও এতে জড়িয়ে পড়ছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে কারবারিদের তথ্য অনুযায়ী, এক হাজার পিস ইয়াবা ঢাকায় পৌঁছানোর জন্য ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত পান তারা। একেকটি চালানে সাধারণত ১০ হাজার পিস ইয়াবা থাকে। সেই হিসাবে প্রতি চালানে মেলে কমপক্ষে এক লাখ টাকা। অর্থের মোহে অনেকেই এতে জড়িয়ে পড়ছেন। গ্রেপ্তার এড়াতে তারা অপ্রচলিত পথে ইয়াবা আনছেন।
ডিএনসি সূত্র জানায়, সর্বশেষ গত ১১ আগস্ট গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে মংয়েছা চাকমা ও তাঁর শাশুড়ি চাইন ছিং চাকমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছে পাওয়া যায় ৭ হাজার ২০০ পিস ইয়াবা। ঢাকায় এক মাদক কারবারির কাছে এই চালান হস্তান্তরের কথা ছিল। মংয়েছার বাড়ি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি এবং চাইনের বাড়ি কক্সবাজারের উখিয়ায়। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্য হওয়ায় তাদের কেউ সন্দেহ করবে না– এমন চিন্তা থেকে তাদের মাদক বহনের কাজে লাগানো হয়। তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এক বড় ইয়াবা কারবারির কাছ থেকে চালান বুঝে নিয়ে প্রথমে চলে যান বান্দরবান। সেখান থেকে ঢাকায় আসেন। এক থেকে দেড় বছর তারা ইয়াবা বহনের কাজ করেন। প্রতি মাসে সাধারণত একটি চালান পৌঁছে দিতেন তারা।
ডিএনসি ধানমন্ডি সার্কেলের পরিদর্শক তপন কান্তি শর্মা সমকালকে বলেন, মংয়েছাকে মাসখানেক আগেও ধরা হয়েছিল। তখন তাঁর কাছে ইয়াবা পাওয়া যায়নি। তাঁর এক সঙ্গী ইয়াবার চালান নিয়ে পালিয়ে যান। তখন থেকেই তাঁর ওপর নজর রাখা হচ্ছিল। এক পর্যায়ে ইয়াবাসহ তাদের আটক করা সম্ভব হয়। তাদের মধ্যে মংয়েছার কাছে তিন হাজার ও তাঁর শাশুড়ির কাছে বাকি ইয়াবা পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এর আগে ১২ জুলাই ঢাকার গাবতলী থেকে ১১ হাজার ইয়াবাসহ সাধন তনচংগ্যাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বাড়ি রাঙামাটি।


আরো খবর: