শিরোনাম ::
পাঠ্যবইয়ে হাসিনা ও আ.লীগের নাম বাদ দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস উখিয়া ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সরকারি মহিলা কলেজের বার্ষিক সাহিত্য, ক্রীড়া,সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা ও পুরুস্কার বিতরণ সম্পন্ন বিএনপি আরেকটি ১/১১ চাইছে দুই পর্বে ইজতেমা করবেন জুবায়েরপন্থীরা নিজের কথা ও সুরে সিনেমার গানে কণ্ঠ দিলেন মোশাররফ ইন্টারনেটের ওপর বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহারের বিষয়ে উপদেষ্টা নাহিদের পোস্ট শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে নতুন তথ্য দিলো আবহাওয়া অধিদপ্তর জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং প্রতিবেদন ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের ঋণের কিস্তি ছাড় পেছাল আইএমএফ ‘পরবর্তী ২০ বছর দেশের রাজনীতিতে তরুণদের প্রভাব অব্যাহত থাকবে’
শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:৪৯ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

পাঠ্যবইয়ে হাসিনা ও আ.লীগের নাম বাদ দিয়ে গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫


ঢাকা, ২৩ জানুয়ারি – অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে সংশোধিত পাঠ্যবই নিয়ে একের পর এক বিতর্ক চলছে। এরমধ্যে ‘আদিবাসী’ শব্দটি নিয়ে বিতর্ক সংঘর্ষেও রূপ নিয়েছে। সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন গুরুতর আহত হওয়ার পর তা নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলছে নানা প্রতিবাদও। প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত বিভিন্ন পাঠ্যবইয়ে বেশকিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে চলতি শিক্ষাবর্ষে। বইয়ে কোথাও তথ্য ভুল, কোথাও আবার তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্কও।

গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন পাঠ্যবইয়ে গত জুলাই-অগাস্টের ছাত্র আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন নিয়ে নানা ইতিহাস যুক্ত করা হয়েছে।

তবে এর মধ্যেই কোনো কোনো বইয়ে এই অভ্যুত্থানের ইতিহাস অংশে আওয়ামী লীগ কিংবা শেখ হাসিনার নাম বাদ দেয়া নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ। আবার আন্দোলনে নিহতদের নাম নিয়েও ভুল ধরা পড়েছে। কয়েকটি পরিবর্তন নিয়ে বিতর্ক ওঠার পর কিছু কিছু বইয়ে সংশোধনীও আনা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিমার্জন করতে কিছু কিছু পরিবর্তন এমনভাবে করা হয়েছে যেটি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড বা এনসিটিবি’র চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেছেন, এবার ভুলের পরিমাণ কম, কিন্তু বিতর্ক বেশি। বিতর্ক মানে দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য বা দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা। এখন এটা কি আপনারা টলারেন্স দিয়ে মোকাবিলা করবেন নাকি এটাকে সংঘাত দিয়ে মোকাবিলা করবেন, সেটিই হচ্ছে মূল বিষয়।

গণঅভ্যুত্থানের গল্প ও প্রবন্ধ নিয়ে প্রশ্ন

পাঁচই অগাস্ট ঢাকার রাস্তার অবস্থাও উঠে আসে এই প্রবন্ধের বর্ণনায়। সেখানে লেখা হয়- পতন অত্যাসন্ন টের পেয়ে স্বৈরাচারী সরকারপ্রধান পালিয়ে যান দেশ ছেড়ে। অভাবনীয় এক গণঅভ্যুত্থান দেখে সারা দুনিয়ার মানুষ।

সাম্প্রতিক সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন উঠেছে নবম-দশম শ্রেণির এই প্রবন্ধে কোথাও স্বৈরশাসক হিসেবে ‘শেখ হাসিনা’ কিংবা তার দল ‘আওয়ামী লীগে’র নাম লেখা হয়নি।

এর একটি ব্যাখ্যা তুলে ধরে পরিমার্জন কমিটির দায়িত্বে থাকা সাজ্জাদুর রহমান বলেছেন, নাইনের বইয়ে শেখ হাসিনা বা আওয়ামী লীগের নাম না থাকলেও অষ্টম শ্রেণির বইয়ে দুটি নামই আছে। শেখ হাসিনা বিনা ভোটে জিতেছেন, গুম খুন করেছেন – সে সবই অষ্টম শ্রেণির বইয়ে আছে। বিচ্ছিন্নভাবে একটা টেক্সট দিয়ে সব পাঠ্যবইয়ের যদি মূল্যায়ন করতে চান, তাহলে তো মানদণ্ড ঠিক হয় না।

সপ্তম শ্রেণির বাংলা বইয়ে জুলাই-অগাস্টের আন্দোলন নিয়ে হাসান রোবায়েত নামে একজন কবির একটি কবিতা ছাপা হয়েছে। ‘সিঁথি’ শিরোনামে ছাপা কবিতার শব্দ চয়ন নিয়ে নানা সমালোচনা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। “ভাই মরল রংপুরে সেই/রংপুরই তো বাংলাদেশ’ নুসরাতের আগুন দিল, দোজখ যেন ছড়ায় কেশ। কওমি তরুণ দাঁড়ায়া ছিল, কারবালারই ফোরাতে, শাহাদাতের আগুন দিয়া, খুনির আরশ পোড়াতে।

মো. মাসুদ নামে একজন ফেসবুকে পোস্টে লিখেছেন, “এই কবিতার মাঝে ভাষা বানান মাত্রা ছন্দ সবকিছুর মাঝে ত্রুটিবিচ্যুতি আছে। কবিতাটি স্বজন প্রীতির কারণে পাঠ্য বইয়ের মাঝে স্থান পেয়েছে! মানের কারণে এই কবিতাটি পাঠ্য বইয়ের মাঝে স্থান পায়নি!”

তবে, সেই কবিতাটি প্রসঙ্গে পরিমার্জনের দায়িত্বে থাকা সাজ্জাদুর রহমান বলেন, আমরা সাধ্য অনুযায়ী কাজটা করেছি। আমাদের লিমিটেশন আছেই। ভালো করে খুঁজলে হয়তো আরো কিছু পেতে পারতাম।

নতুন পাঠ্যপুস্তকে কয়েকটি জায়গায় বিতর্ক ওঠার পর কিছু কিছু জায়গায় এরইমধ্যে অনলাইন বইয়ে সংশোধন এনেছে এনসিটিবি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সাহিত্য নিয়ে যেসব বিষয়ে প্রশ্ন আছে সেব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানাচ্ছে এনসিটিবি।

মুক্তিযুদ্ধ, শেখ মুজিব ও গণঅভ্যুত্থান নিয়ে যে পরিবর্তন

গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত পাঠ্যবইয়ে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। পাঠ্য বইয়ে শেখ মুজিবুর রহমান নিয়ে কিছু গল্প প্রবন্ধ বাদ দেয়া হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস যুক্ত হয়েছে।

দ্বিতীয় শ্রেণির বাংলা বইয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর লেখা ‘সোনার ছেলে’ বাদ দেওয়া হয়েছে।

তৃতীয় শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের একক জীবনী বাদ দিয়ে সেখানে ‘আমাদের চার নেতা’ নামে নতুন একটি অধ্যায় যুক্ত করা হয়েছে। এতে চার নেতা হিসেবে স্থান পেয়েছেন এ কে ফজলুল হক, আবদুল হামিদ খান ভাসানী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এবং শেখ মুজিবুর রহমান।

চতুর্থ শ্রেণির বাংলা বই থেকে বাদ গেছে শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে মমতাজউদদীনের লেখা ‘বাংলার খোকা’ এবং নির্মলেন্দু গুণের লেখা ‘মুজিব মানে মুক্তি’ কবিতাটি।

ষষ্ঠ শ্রেণির ইংলিশ ফর টুডে বই থেকে ‘সন অব দ্য সয়েল’ এবং ‘মুজিব ইন স্কুল ডেজ’সহ তিনটি লেসনও বাদ দেয়া হয়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণির চারুপাঠ বইয়ে ‘কার্টুন ব্যঙ্গচিত্র ও পোস্টারের ভাষা’ নামে জুলাই আন্দোলনের ওপর ভিত্তি করে লেখা একটি গদ্য যোগ করা হয়েছে। বাদ দেওয়া হয়েছে রোকনুজ্জামান খানের লেখা ‘মুজিব’ কবিতাটি। একই শ্রেণির বাংলা ব্যাকরণ ও নির্মিতি বই থেকে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ প্রবন্ধটি বাদ দেয়া হয়েছে।

সপ্তম শ্রেণির ইংলিশ ফর টুডে বইয়ে ‘বঙ্গমাতা: আওয়ার সোর্স অব ইন্সপিরেশন’, ‘বঙ্গবন্ধু’স লাভ ফর স্পোর্টস’ এবং ‘বঙ্গবন্ধু’স রেসপন্স টু ন্যাচারাল ক্যালামিটিস’ নামে তিনটি লেসন বাদ দেওয়া হয়েছে। জুলাই বিপ্লবের ওপর লেখা ‘আ নিউ জেনারেশন’ এবং ‘আওয়ার উইনার ইন দ্য গ্লোবাল এরেনা’ নামে দুটি নতুন লেসন যুক্ত করা হয়েছে।

অষ্টম শ্রেণির ইংলিশ ফর টুডে বই থেকে ‘বঙ্গবন্ধু অ্যান্ড বাংলাদেশ’ নামে একটি লেখা বাদ দেওয়া হয়েছে। সেখানে দুটি লেখা যুক্ত করা হয়েছে। এর একটি হলো জুলাই বিপ্লবের ওপর লেখা ‘উইমেন’স রোলস ইন আপরাইজিং’। অষ্টম শ্রেণির সাহিত্য কণিকা বইয়ে জুলাই বিপ্লবের ওপর লেখা সংকলিত গদ্য ‘গণ অভ্যুত্থানের কথা’ যুক্ত করা হয়েছে।

নবম-দশম শ্রেণির বাংলা সাহিত্যবিষয়ক বইয়ে যুক্ত হয়েছে জুলাই অভ্যুত্থানের ওপর লেখা একটি সংকলিত গদ্য। এছাড়াও ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞান নামে কোনো বই এবারে থাকছে না। ওই বইয়ে ‘বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু: মানবতাবাদী ধারণা ও অসাম্প্রদায়িক চেতনা’ নামে অধ্যায় ছিল। একই শ্রেণির ইংরেজি বইয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের গ্রাফিতি নিয়ে লেখাসহ নতুন তিনটি অধ্যায় যুক্ত হয়েছে।

উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির বই থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ‘বায়ান্নর দিনগুলো’ এবং ইংলিশ ফর টুডে বই থেকে ‘দ্য আনফরগেটেবল হিস্ট্রি’ অধ্যায়টি বাদ পড়েছে। এছাড়া বাংলা বইয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মজীবনী ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র একটি অংশ একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে ছিলো, যা এবার সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

বিতর্ক থেকে সংঘর্ষ

পাঁচই অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর ২০১২ সালের শিক্ষাক্রমের আলোকে পাঠ্যবই পরিমার্জনের কাজ শুরু করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড। এজন্য ৪১ জন বিশেষজ্ঞ দিয়ে ৪৪১টি পাঠ্যবই পরিমার্জন করা হয়। এর মধ্যে কিছু বই শিক্ষার্থীদের হাতে দেয়া হলেও অর্ধেকের বেশি বই এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের হাতে দেয়া সম্ভব হয়নি।

পরিমার্জন করতে গিয়ে নবম-দশম শ্রেণির ‘বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি’ বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে জুলাই-অগাস্টের গণঅভ্যুত্থানের একটি গ্রাফিতি ছবি যুক্ত করা হয়। যেখানে ‘আদিবাসী’ শব্দটি ছিল। এরপরই এর প্রতিবাদ জানিয়ে তা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে ‘স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি’ নামে একটি সংগঠন। ওই সংগঠনের দাবির মুখে সেই গ্রাফিতি বাদ দিয়ে নতুন গ্রাফিতি যুক্ত করে এনসিটিবি।

বর্তমানে এনসিটিবির ওয়েবসাইটে ঢুকে দেখা যায় ওই বইয়ে ‘আদিবাসী’ যুক্ত থাকা গ্রাফিতি পরিবর্তন করে ‘বল বীর/ চির উন্নত/ মম শির’ লেখা নতুন গ্রাফিতি যুক্ত করা হয়েছে। পাঠ্যবই থেকে গ্রাফিতি প্রত্যাহারের প্রতিবাদে গত ১৫ই জানুয়ারি ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা’ বিক্ষোভ করে। এসময় তাদের ওপর হামলা চালায় এক দল লোক।

হামলাকারীরা স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি সংগঠনের নেতাকর্মী ছিল বলেও অভিযোগ ওঠে। এতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বেশ কয়েকজন আহত হন।

পরদিন ১৬ই জানুয়ারি আরেক দল শিক্ষার্থী বুধবারের হামলার প্রতিবাদ করতে গেলে তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বই নিয়ে বিতর্ক বা এসব সংঘর্ষের ঘটনার রেশ এখনো কাটেনি বাংলাদেশে। এ নিয়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ও নানা কর্মসূচি দেখা গেছে গত কয়েক দিনে।

১৯শে জানুয়ারি ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি বাদ দেওয়া ও মিছিলে ওপর হামলার প্রতিবাদে সমাবেশ করে ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজ’। হামলাকারীদের বিচার না হলে আরও কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন সমাবেশের বক্তারা। ‘আদিবাসী’ শব্দ লেখা গ্রাফিতি তুলে নেয়ার নিন্দা জানিয়ে ২১শে জানুয়ারি পাঁচ শতাধিক নাগরিক বিবৃতি দেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, “শিক্ষাবোর্ডের এই পদক্ষেপ বাংলাদেশের আদিবাসীদের পরিচয় এবং অধিকারের প্রতি অবজ্ঞাকেই কেবল স্পষ্ট করে না, বরং এটি জুলাই-অভ্যুত্থানের বৈষম্যবিরোধী চেতনার সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিকও”।

বই সংশোধনের প্রসঙ্গে এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, পাঠ্যবইয়ে একাত্তরকে যেভাবে নষ্ট করা হয়েছে অতিরঞ্জন ও অতিকথনের মধ্যে দিয়ে, সেটা যেন জুলাই অভ্যুত্থানের ক্ষেত্রে না ঘটে সেটা ছিল আমার অবস্থান। পাঠ্যপুস্তক পরিমার্জন করতে গিয়ে আমরা এমন কোনো বাধ্যবাধকতা করিনি যে এটা দিতেই হবে বা অমুককে ঘৃণা করতে হবে। দেশের জন্য যার যতটুকু অবদান ততটুকুই আমরা বইতে দিতে চাই। আমরা কাউকে ঘৃণাও করতে চাই না, কাউকে প্রশংসায়ও ভাসাতে চাই না।

‘আদিবাসী’ এই বিষয়টি কেন যুক্ত করা হলো, আবার কেনই বা তা বাদ দেয়া হলো এ নিয়ে প্রশ্ন করলে অধ্যাপক হাসান বলেছেন, যখন আমরা দেখলাম এটা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, তখন বিতর্ক এড়ানোর জন্য এই বিষয়টিকে বাদ দিয়েছি। এক্ষেত্রে ভালো-মন্দ বিচার করার বিষয় ছিল না। এটা নিয়ে যেহেতু বিতর্ক হয়েছে সে কারণে এটাকে আমাদের বাদ দিতে হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “বিতর্ক খারাপ কিছু নয়। যেসব বিষয় নিয়ে বিতর্ক উঠেছে আমরা অনেক কিছুই সংশোধন করেছি। আমরা যদি একটা বহুবাচনীক রাষ্ট্র চাই, বহুত্ববাদী সমাজ চাই তাহলে আমাদের সহনশীলতার চর্চা করতে হবে। কিন্তু বিতর্ক শেষ পর্যন্ত যেন মারামারির পর্যায়ে না যায়, সংঘাত হানাহানিতে রূপান্তরিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি।

সূত্র: বাংলাদেশ জার্নাল
আইএ/ ২৩ জানুয়ারি ২০২৫



আরো খবর: