দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে উখিয়া-টেকনাফ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা চলছে সর্বত্রই। এক শফিউল আলম পুরো হিসাব-নিকাশের দৃশ্যপট বদলে দিয়েছেন মূহুর্তের মধ্যে। মিডিয়া, রাজনীতির মাঠ, চায়ের দোকান থেকে সর্বমহলে একটাই আলোচনা তাহলে এখন কে পাচ্ছেন আগামী নির্বাচনে নৌকা প্রতীক।
সূত্রে জানা গেছেে, দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ / জমা দিয়েছেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও বিশ্ব ব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক (সাবেক) মোহাম্মদ শফিউল আলম, টানা ২ বারের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি, বর্তমান সংসদ সদস্য শাহীন আক্তার চৌধুরী, টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ নুরুল বশর, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর পুত্র ও টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মোর্শেদ, সাবেক এমএনএন এডভোকেট নুর আহমেদের পুত্র ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সোহেল আহমদ, সাবেক উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম চৌধুরীর পুত্র ও উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ সভাপতি শাহ আলম চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরীর কন্যা ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী, সমাজকর্মী মনোয়ারা বেগম মুন্নী চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য আবদুল গনির পুত্র ও টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সাইফুদ্দিন খালেদ, উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরীর ছোট ভাই ও উখিয়া উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার জাফর আলম চৌধুরী, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এডভোকেট দুলাল মল্লিক, তাতী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতি সাধনা দাশ গুপ্তা, বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মৌলভী আজিজ, টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সোনা আলী ও টেকনাফ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জাফর আলম।
গত নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে কক্সবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হলেও এখনও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের আস্থা অর্জন করতে পারেননি শাহিন আক্তার। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২য় বারের মতো নৌকার প্রার্থী হওয়ার লক্ষ্যে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন তিনি। তবে এবারের নির্বাচনে শাহিন আক্তারকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান না উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। শাহিন আক্তার চৌধুরীর সঙ্গে এবার দলীয় মনোনয়ন দৌড়ে নেমেছেন আওয়ামী লীগের জেলা ও স্থানীয় পর্যায়ের আরো হেভিওয়েট ১৪ নেতা। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের স্থানীয় একাধিক নেতা জানিয়েছেন, শাহিন আক্তারকে আবার মনোনয়ন দেওয়া হলে প্রয়োজনে তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন।
শাহিন আক্তার চৌধুরীর বিরোধিতার কারণ জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলেন, শাহিন আক্তার আওয়ামী লীগের কেউ নন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের তিনি সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির সুপারিশে আওয়ামী লীগে দলীয় মনোনয়ন বাগিয়ে নেন শাহিন আক্তার এবং এমপি হয়ে যান। কিন্তু নৌকার প্রার্থী হিসেবে এমপি হলেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের তিনি কখনও কাছে টানেননি এবং দলীয় কার্যক্রমে অংশ গ্রহণও করেননি। বিগত ৫ বছরের বেশি ভাগ সময় তিনি এলাকায়ও আসেননি। ফলে ইতিপূর্বে তিনি মনোনয়ন দূরে তেমন সাড়া ফেলতে পারেননি।
সচেতন মহলের মতে, কক্সবাজার-৪ ( উখিয়া-টেকনাফ) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার মূল দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি, উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের টানা ৩ বারের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর পুত্র ও টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মুর্শেদ এবং সাবেক এমএনএন এডভোকেট নুর আহমেদের পুত্র ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর।
উল্লেখ্য, আবদুর রহমান বদি, শাহিন আক্তার, জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী ও জাফর আলম একই পরিবারের সদস্য। তারা সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী,শ্যালক ও শশুর।
সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির রয়েছে আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা। উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় তার সমান জনপ্রিয়তা রয়েছেন।পাশাপাশি দানবীর হিসাবে পুরো জেলা ব্যাপী তার সুখ্যাতি আছে। বদি চাইলে উখিয়া-টেকনাফ আসনের ভোটের হিসার নিকাশ মুহূর্তের মধ্যে বদলে দিতে পারেন বলে দলের অধিকাংশ নেতাকর্মীরা মনে করেন। তবে তার বড় বাধা আইনী জটিলতা ও তার পুত্র দাবীদার মোঃ ইসহাক। আইনী বাধা না থাকলে এলাকার জনসাধারণ সবাই এখনও চাই আবদুর রহমান বদিই হোক আর একবার নৌকার মাঝি।
জেলা যুব লীগের সাবেক সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুরের ভালো গ্রহণ যোগ্যতা থাকলেও টেকনাফ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর বিপক্ষে অবস্থান গ্রহণ করে বিদ্রোহী প্রার্থী নুরুল আলমের পক্ষে কাজ করেন। এছাড়াও তিনি সম্প্রতি শেষ হওয়া ইউপি নির্বাচনে হলদিয়া পালং ইউনিয়নের নৌকার প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহ আলমের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী ইমরুল কায়েস চৌধুরীর পক্ষে কাজ করার অভিযোগও রয়েছে। যেটা দলীয় হাই কমান্ড কোন দৃষ্টিতে দেখতেছেন সেটা বলা মুসকিল ।
উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসাবে এলাকায় ইমেজ ও গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। কিন্তু তিনি যাদেরকে বেশি আপনজন ও শুভাকাঙ্ক্ষী মনে করতেন তারা এখন চুপ হয়ে রয়েছেন। তার পক্ষের লোকদের আবার অনেকে ভিতরে ভিতরে বদির পক্ষে নিয়ে কাজ করছেন। জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরীর পক্ষের বেশি ভাগ দলীয় নেতা কর্মীর ভুমিকা ভাল দেখা যাচ্ছে না বলে রাজনৈতিক বিজ্ঞজনরা মনে করতেছেন। তাদের মতে রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের টানা ৩ বারের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী নিজের স্বকীয়তায় নিয়ে রাজনীতি করে দলকে যেমন সুসংগঠিত করেছেন, তেমনি রাজনীতির মাঠে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করে নিজেকে দলের নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহণ যোগ্য করে তুলেছেন। তবে তার বড় বাধা হিসাবে তার আপন বড় বোন কক্সবাজার-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শাহিন আক্তার চৌধুরী বলে দলের সচেতন নেতাকর্মীরা মনে করেন।
টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মুর্শেদ চৌধুরী মনোনয়ন দৌড়ে থাকলেও তাকে উখিয়া উপজেলার বেশি ভাগ সাধারন মানুষ তাকে চিনেন না। যেটা তার জন্য হয়তো দলের জরিপে কাল হতে পারে সেটাও এলাকার সচেতন লোকজন অনেকেই মনে করেন।
এদিকে হঠাৎ করে অনলাইনে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও পূরণ করে জমা দিয়েছেন সাবেক কেবিনেট সচিব শফিউল আলম। তার মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার বিষয়টি মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে সংসদীয় আসন ২৯৭ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের পুরো ভোটের হিসাব নিকাশ পাল্টে যায় এবং সম্পুর্ণ চিত্র বদলে গেছে। দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহকারী সকল প্রার্থীর মধ্যে আতংক ও মাথা ব্যথার একটাই নাম হয়ে দাঁড়িয়েছেন শফিউল আলম। তাছাড়া সবার মুখে মুখে একটাই কথায় উচ্চারিত হচ্ছে তাহলে কি নৌকায় চড়ে সংসদের যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন বিশ্ব ব্যাংকের সাবেক বিকল্প নির্বাহী পরিচালক ও সাবেক কেবিনেট সচিব শফিউল আলম? তবে আইন বিজ্ঞজনদের মতে, শফিউল আলমের জন্য বড় বাধা হতে পারেন সরকারি চাকরি থেকে অবসরের তিন বছর আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না- গণ প্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) বিধান! পাশাপাশি তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সফিউল আলম বর্তমানে আমেরিকায় অবস্থান করতেছেন। দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার বিষয়টি তিনি ও তার পরিবারের কেউ কিছুই জানেন না। তার স্ত্রী ও সন্তানরা চান তারা স্থানীয় ভাবে আমেরিকায় থাকতে। মূলত সফিউল আলমও মনোনয়ন নির্বাচন করার তেমন আগ্রহী নন।
অভিজ্ঞত রাজনৈতিক মহলের মতে হঠাৎ করে শফিউল আলম মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করায় দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার দৌড় আগে এগিয়ে থাকা প্রার্থীরা অনেকই এখন ছিটকে পড়ে গেছে এবং পিছিয়ে থাকারা আবার এগিয়ে এসেছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সুত্রে জানান গেছে, সব হিসাব নিকাশে শেষে এখন মূলত দলীয় মনোনয়ন পাওয়া দৌড়ে রয়েছেন সাবেক কেবিনেট সচিব শফিউল আলম ও বর্তমান সংসদ সদস্য শাহিন আক্তার চৌধুরী। তাদের মধ্যে যে কোন একজন নৌকায় চড়ে নির্বাচনী বৈরী পার হওয়ার সুযোগ পাবেন। তবে জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী যে একেবারে পিছিয়ে আছে সেটাও বলা যাবে না। এরপরও যে কোন সময়, যে কোন মুহুর্তে ব্যতিক্রম কিছুও ঘটতে পারে দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা মতামত বা সিদ্ধান্তের উপর।
অভিজ্ঞ সুশীল সমাজ মনে করেন, কক্সবাজার-৪ ( উখিয়া-টেকনাফ) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার মূল দৌড়ে এগিয়ে ছিলেন টেকনাফ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি, উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের টানা ৩ বারের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর পুত্র ও টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মুর্শেদ এবং সাবেক এমএনএন এডভোকেট নুর আহমেদের পুত্র ও জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি সোহেল আহমদ বাহাদুর। , সাবেক কেবিনেট সচিব শফিউল আলম দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ বিষয়টি উখিয়া-টেকনাফের নতুন মেরুকরণ বলছেন অনেকে। তাদের মতে, বিগত দিনে উখিয়া-টেকনাফ আসনে যে দলের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন সে দল-ই ক্ষমতায় গিয়েছে। সেজন্য লক্ষ্মী আসনটি নিয়ে সবার গভীর দৃষ্টি রয়েছে। তবে মাঠ পর্যায়ে নানা আলোচনার জন্ম দেওয়া সাবেক সংসদ আব্দুর রহমান বদি-ই ছিলো সর্বশেষ আলোচনায়। হঠাৎ এই আলোচনার ভাটা পেলেছেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমের মনোনয়ন জমার বিষয়টি। তবে কি এমপি হতে যাচ্ছেন শফিউল আলম? এমনটি প্রশ্ন সাধারণ মানুষের।
তবে উখিয়া-টেকনাফ রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় এখানে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা সহ জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা রোহিঙ্গাদের সহায়তা দিয়ে আসছে। বিদেশি উচ্চ পদস্থ প্রতিনিধিদলের নিয়মিত আসা যাওয়া রয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে। তাছাড়া মায়ানমার সীমান্তবর্তী হওয়ায় এ রোহিঙ্গা প্রত্যবাসন নিয়ে আলোচনা আরও সুদৃঢ় করতে আসনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া মাদকের আগ্রাসন কমাতে ও গ্রামাঞ্চলে শিক্ষার আলো ছড়াতে উচ্চ শিক্ষিত সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক(সাবেক) মোহাম্মদ শফিউল আলম সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একজন ব্যক্তিত্ব বলে মনে করছেন সচেতন মহল এবং আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক মহল।
সরকারী একাধিক সুত্রে জানা গেছে, মোহাম্মদ শফিউল আলম ২১তম মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে টানা চার বছর দায়িত্ব পালন করে গেছেন। তাছাড়া তিনি দায়িত্বে থাকাকালীন মেয়াদ বৃদ্ধি করে তাকে পুনরায় দায়িত্ব প্রদানের নজিরও রয়েছে। যা পূর্বে কখনো ঘটেনি। তাছাড়াও তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খুবই বিশ্বস্ত ও ঘনিষ্ঠ।
কর্মজীবন: শফিউল আলম ১৯৮২ সালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস(বিসিএস) পরীক্ষায় প্রশাসন ক্যাডারে উত্তীর্ণ হন এবং ১৯৮৩ সালের ২৭ অক্টোবর সহকারী কমিশনার ও ৩য় শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে চাকুরীতে যোগদান করেন। তিনি ১৯৮৪ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত বান্দরবান জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ১ম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে, ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা ম্যাজিষ্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ঢাকায় রাজউক-এর ১ম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবেও তিনি চার মাস কাজ করেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময় গুরুত্বপূর্ণ পদে যথাক্রমে, মাগুরা ও ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের এমডিএস, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের এবং বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান, রাজশাহী বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের (বর্তমান সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়) অতিরিক্ত সচিব, রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিব, ভূমি আপীল বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে তিনি বাংলাদেশের ২১তম মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৩ অক্টোবর ২০১৯ থেকে ৩ বছরের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।দায়িত্ব শেষে তিনি বর্তমানে অবসরে রয়েছেন।
মোহাম্মদ শফিউল আলম ১৯৫৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের রুমখাঁপালং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছৈয়দ হোসাইন ও মাতার নাম আলমাছ খাতুন। পিতা সৈয়দ হোছাইন ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক ও মাতা আলমাস খাতুন একজন গৃহিণী। আট ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি পঞ্চম। তাঁর বড় ভাই এটিএম জাফর আলম সিএসপি মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও প্রথম সারির শহীদ। ছোটভাই মো. শাহ আলম হলদিয়া পালং ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন এবং ভাতিজা মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান।