নয়াদিল্লি, ১২ আগস্ট – পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সহিংসতা নিয়ে সরব হলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর তার নিশানা হলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। শনিবার (১২ আগস্ট) ভারতীয় জনতা পার্টি পশ্চিমবঙ্গ ক্ষেত্রীয় পঞ্চায়েতীরাজ পরিষদের সম্মেলনের অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী।
এসময় তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় তৃণমূল কংগ্রেস রক্তের খেলা খেলেছে। তৃণমূলের কৌশল হলো নির্বাচনের জন্য সময় না দেওয়া। নির্বাচনের দিন এমনভাবে ঘোষণা করবে যে, প্রস্তুতি-মনোনয়ন জমা দেওয়ার সুযোগই মিলবে না। বিজেপি বা কোনো বিরোধী দল যেন মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারে, তার জন্য সব ধরনের চেষ্টা চালানো হয়। কেউ যদি বুদ্ধি করে মনোনয়নপত্র জমাও দেন, তবে তাদের প্রচারণা চালাতে দেওয়া হয় না। পাশাপাশি, ভোটারদের ভয় দেখানো, বিজেপি কর্মীদের পারিবারকে বাড়ি থেকে বের হতে দেওয়া হয় না।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোট চুরির অভিযোগ তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের সময় ছাপ্পা ভোট দেওয়া তৃণমূলের কাজ। এই তোলাবাজির দল তখন ছাপ্পাবাজির দল হয়ে যায়। গুণ্ডাদের কন্টাক্ট দেওয়া হয় পোলিং বুথ দখলের জন্য। ব্যালট বক্স জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া, কাউন্টিংয়ের সময় বিজেপি কর্মীদের সেখান থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া তৃণমূল কংগ্রেসের কাজ।
তিনি আরও বলেন, এত অত্যাচারের পরেও পশ্চিমবঙ্গের জনগণ বিজেপির প্রার্থীদের ভোট দিয়ে জয়ী করেছে। বিজেপির প্রার্থীরা বিজয় মিছিল বের করলে তাতেও হামলা চালানো হয়।
আদিবাসী সম্প্রদায়ের ওপর হামলার কথা উল্লেখ করে নরেন্দ্র মোদী বলেন, পশ্চিমবঙ্গে আমাদের আদিবাসী ভাইবোনদের কীভাবে প্রতারণা ও অত্যাচার করা হয় আমরা তা ভালোভাবে জানি। এই পরিস্থিতিতে বিজেপির প্রার্থীরা যেভাবে বিজয়ী হয়েছে, তাদের ও পশ্চিমবঙ্গের মানুষদের অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।
প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীর এই আক্রমণের জবাব দিতে দেরি করেননি মমতা ব্যানার্জী। কয়েক ঘণ্টা পরেই তৃণমূল সুপ্রিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী কোনো প্রমাণ ছাড়াই কথা বলছেন। তিনি চান দেশবাসী কষ্টে ভুগুক, মারা যাক, শুধু বিজেপির সমৃদ্ধি হোক। বিজেপি এই চিন্তাধারা দিয়ে সাধারণ মানুষকে বোকা বানাতে পারবে না।
মোদীর উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আপনি দুর্নীতির ইস্যুতে বলতে পারেন না। কারণ আপনি নিজেই একাধিক ইস্যুতে ঘিরে রয়েছেন। আবাস থেকে শুরু করে রাফায়েল- এগুলো ভুলে যাবেন না। আপনি কখনো কখনো সাধারণ মানুষকে বোকা বানাতে পারেন, কিন্তু সব সময় পারবেন না।
তিনি বলেন আচরি ধর্ম পরেরে শেখাও। আপনি নিজের দলের লোকদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেন না, যারা দুর্নীতিতে জড়িত, চরিত্র নিয়ে আক্রমণ করে। সব জায়গায় অশান্তি হচ্ছে। আপনার কর্মীরা পশ্চিমবঙ্গে ১৬ থেকে ১৭ জনকে খুন করেছে। আর আপনি হাওয়া দিচ্ছেন।
সূত্র: জাগো নিউজ
আইএ/ ১২ আগস্ট ২০২৩