বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫১ অপরাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে সপ্তাহে সপ্তাহে

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: রবিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২২

জ্বালানির দাম বৃদ্ধির সঙ্গে টাকার মান কমায় বাড়ছে সব ধরনের পণ্যের দাম। এ দুই কারণে নিত্যপণ্যের বাজারে উত্তাপ বেড়েই চলেছে। জ্বালানির দামের কারণে দ্রুত বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। প্রথম ধাক্কা আসে সবজিতে। এক দিনের ব্যবধানে সব সবজির কেজিতে দাম বেড়ে যায় ১০ থেকে ২০ টাকা। এর দু-তিন দিন পর চাল, ব্রয়লার মুরগি, ডিম, চিনি, পেঁয়াজ, রসুন, আদাসহ কয়েকটি খাদ্যপণ্যের দাম আরেক দফা বেড়ে যায়। স্বল্প আয়ের মানুষের জন্য ভরসা ছিল ব্রয়লার মুরগি ও ডিম। সেখানেও ত্রাহি অবস্থা। দাম নাগালের বাইরে চলে গেছে।

গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম কেজিতে ৫০ টাকা বেড়ে ২১০ টাকা এবং ডিমের ডজন ৩০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। নগরীর কয়েকটি কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ ব্যবসায়ী ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ২১০ টাকা দরে। তবে কোনো কোনো ব্যবসায়ী ১৯৫-২০০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি করছেন। এ ছাড়া দেশি মুরগির কেজি ৪৮০ টাকা এবং সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ টাকায়। অন্যদিকে ফার্মের মুরগির ডিমের দাম রেকর্ড বৃদ্ধি হয়েছে। বর্তমানে প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়।

আমিন নামে একজন ক্রেতা জানান, ডিজেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাতে প্রত্যেক নিত্যপণ্যের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। মুরগির বাজার অনেক দিন ধরে বাড়তি ছিল। কিন্তু এখন হঠাৎ করে বেড়েছে ডিমের দাম। ডিম তো গরিবের খাবার। এখন সেই ডিমের দামই বেড়ে গেল।

খুচরা বিক্রেতারা বলছেন সব পণ্যের দাম সপ্তাহে সপ্তাহে বাড়ছে। জ্বালানির দাম বৃদ্ধির কারণে পরিবহন খরচ বেড়েছে, একই সঙ্গে বেড়েছে ডলারের দাম। ডিটারজেন্ট পাউডার থেকে শুরু করে সাবান সব পণ্যের দাম আরেক দফা বেড়েছে। আগামী এক সপ্তাহ পর পরিস্থিতি আরও পরিষ্কার হবে।

গত সপ্তাহে চিনির কেজি বিক্রি হয়েছিল ৭৮ থেকে ৮০ টাকায়। পাঁচ থেকে ছয় টাকা বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৮৪ থেকে ৮৫ টাকা দরে। পরিবহনসহ অন্যান্য খরচ হিসাব করলে ৮৫ টাকার কমে বিক্রি করা যায় না। এর মধ্যেই ডলারের দাম বাড়ায় চিনির দাম আরও বাড়ানোর জন্য সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে চিনি পরিশোধনকারী মিল মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন।

সপ্তাহখানেক আগে দেশি পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ এবং আমদানি করা পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় কেনা যেত। কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে এখন দেশি পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ আর আমদানির পেঁয়াজে ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। আরও ১০ টাকা বেড়ে দেশি রসুন ৭৫ থেকে ৮৫ এবং আমদানি করা রসুন ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

দাম স্থিতিশীল রাখতে চাল আমদানির অনুমতি, শুল্ক্ক হ্রাস, বাজারে অভিযানসহ নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তবে তাতে খুব বেশি সুফল মেলেনি। সরকার ১০ লাখ টনের বেশি চাল আমদানির অনুমতি দিলেও আমদানি হয়েছে খুবই কম। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যমতে, এ পর্যন্ত মাত্র ১৯ হাজার টন চাল আমদানি হয়েছে বেসরকারিভাবে।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্যমতে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে ৪ থেকে ৬ শতাংশ। সংস্থাটির তথ্যে আরও দেখা যায়, ২৬টি পণ্যের মধ্যে ২৫টির দাম বেড়েছে। বাজারে কিছু ব্যবসায়ীকে ভোজ্যতেলে বাড়তি দাম নিতে দেখা গেছে। আবার কোনো কোনো এলাকায় তেলের সংকটও দেখা গেছে।

মাছের বাজারও চড়া। সাধারণত স্বল্প আয়ের মানুষ সবচেয়ে বেশি কেনেন পাঙাশ, কই ও তেলাপিয়া জাতীয় মাছ। কিন্তু এসব মাছের দামও বাড়তি। গড়ে কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে এসব মাছের দাম। বাজারে এখন পাঙাশের কেজি ১৮০ থেকে ১৯০, তেলাপিয়া ১৮০ থেকে ২০০ এবং কই মাছ ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া রুই ও কাতলার কেজি আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি দরে। কোরবানির পর গরুর মাংসের কেজি কয়েক দিন ৭০০ টাকার নিচে নেমেছিল। বেশিরভাগ বাজারে ৬৫০ টাকায় কেনা গেছে। এখন ৭০০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না।


আরো খবর: