সেন্টমার্টিন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও রাশেদ খান মেননের আলোচনা প্রসঙ্গ তুলে ধরে নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন,”এতো আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যেও তিনি আবার ক্ষমতায় থাকতে পারেন যদি সেন্টমার্টিন দিয়ে দেন।
শনিবার (৮ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা মোহাম্মদ আকরাম খাঁ হলে সমমনা পেশাজীবী গণতান্ত্রিক জোট আয়োজিত ‘গণতন্ত্র নির্বাচন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট শীর্ষক’ আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মান্না বলেন, এখন এক নাম্বার এজেন্ডা এই সরকারের পদত্যাগ। যদি পদত্যাগ না করে তাহলে করতে বাধ্য করতে হবে। বড় রাজনৈতিক দল সবাইকে নিয়েই সেই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে এগিয়ে যেতে হবে। যেখানে থাকবে রাষ্ট্র বদলের লড়াই সমাজ বদলের লড়াই।
এজন্য আমরা এক দফার আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। খুব শীঘ্রই তার যৌথ ঘোষনা দেয়া হবে। আমরা এতগুলো দল নিয়ে জোট করেছি এ দেশটা এবং এ দেশের মানুষকে বাঁচানোর জন্য। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে রক্ষা করার জন্য। আমরা আন্দোলন করবো আর ছাড় নয় যারা নির্যাতন করেছে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না
তিনি আরো বলেন, আমাদের এখন বক্তব্য দিয়ে বলতে হয় না এই সরকার কত খারাপ। মানুষ নিজেই জানে। কাঁচামরিচ ১০০০ টাকা। বাজারে গেলে, রাস্তায় বের হলে মানুষ টের পায়।তাই মানুষ মনে করছে আন্তর্জাতিক থেকে থেকে শুরু করে দেশের সব মানুষ এখন এই সরকারের বিরুদ্ধে সেটি এখন দেশের জনগণ বুঝে গেছে।
সাবেক ডাকসুর এই নেতা বলেন, ‘এখানে ব্যানারে উল্লেখ আছে গুম, খুন, সীমান্ত হত্যা মুক্ত বাংলাদেশ চাই। শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, এই জুলাই মাস হতে পারে স্বৈরতন্ত্র পতনের মাস। আমি বলতে চাই জানি না হয়তো জুলাই মাসেও হতে পারে যেহেতু ১৪-১৫ বছর যাবত একই রকম অপরাধ করেই যাচ্ছে সরকার। অপরাধের সীমা দিনের পর দিন বেড়েই যাচ্ছে। তাই আমি বলব জুলাই মাসেও যদি না হয় আগস্টেই হোক, অথবা সেপ্টেম্বরে হোক, অথবা ডিসেম্বরের মধ্যেই হোক, যদি হয় দেশের জনগণ খুশি হবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন হয়। আমি মনে করি শেখ হাসিনার জন্য এটি কল্যাণকর। আপনারা জানেন শুধু বাংলাদেশি তার ওপর চাপ নেই।
আমেরিকাসহ বিদেশের বিভিন্ন দেশ থেকে তার প্রতি চাপ সৃষ্টি হয়েছে। এবং বলা হচ্ছে বাংলাদেশে একটি জাতীয় অবাধ নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হওয়া উচিত।’তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে আমিও বলতে চাই, আপনি দয়া করে পদত্যাগ করুন এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ,বিএনপির জামায়াতের প্রায় হাজার খানেক লোক গুমের শিকার। আমার আত্মীয়দের মধ্যে একজন হুম হয়েছেন এখনো তিনি ফিরেননি। আমার রাজ পথের যোদ্ধা ইলিয়াছ এখনো ফিরে আসেননি। যারা এখনো আসেনি তার সন্তান জানেন না তার বাবা কিংবা প্রিয়জন আছে কিনা। যদি মারা যায় তার জন্য দোয়া মিলাদ পড়বে কিনা। এই জমানার অপমৃত্যুর জন্য প্রধানমন্ত্রীর কোনো অনুতাপ হয় না
বিএনপির এই নেতা বলেন, সীমান্তের দিকে তাকালেই বুঝা যাবে এটা কি গণতান্ত্রিক দেশ নাকি কর্তৃতবাদী শাসকের দেশ। এখানে ফেলানীকে মেরে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রাখা হয়। মানুষ মুক্তি চায়, গণতান্ত্রিক শাসকের দেশে ফিরে আসতে চায়।
হুশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, যে কোন মুহূর্তে সরকারের পতন হবে ।হাজারে হাজারে লাখো লাখো মানুষ রাস্তায় নেমে আসবে। এরশাদ এবং আইয়ুব খান বুঝতে পারে নাই এ সরকারে বুঝতে পারবে না।এখনো পর্যন্ত আমরা ভালোভাবে আগাচ্ছি। তবে আমরা সে পথে নাও আগাতে পারি। জুলাই মাস স্বৈরাচার সরকারের পতনের মাস হতে পারে।
নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন বলেন, আমাদের দেশের লোক গণতন্ত্রের কথা বলে,ঐক্যের কারনে আমরা হেরে যাই,আমাদের দেশে যখনই ঐক্যের ডাক আসে তখন বিবেধ তৈরি করা হয়। এবার ঐক্যের ডাক এসেছে। আমাদের এর সঙ্গে থাকতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী মো. সাইদুর রহমান বলেন ,জননেতা তারেক রহমান যখন বললেন সরকারকে সরাতে হবে। তখনি ফ্যাসিবাদ এই সরকারের সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম রাজপথে সহযোগিতা করতে আমরা এই সংগঠন গড়ে তুলি। স্বৈরাচার সরকারের পতন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন, সহকারি সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মাইনুদ্দিন মজুমদার, সাবেক ছাত্রনেতা ও রাষ্ট্রচিন্ত্যক এম নাজমুল হাসান, জাতীয়তাবাদি গণতান্ত্রীক দলের সভাপতি আমির হোসেন বাদসা, গুম হওয়া চৌধুরী আলমের ভাই খোরশেদ আলম মিন্টু, গুম থেকে ফিরে আসা সাবেক ছাত্রনেতা তারেক প্রমুখ।