মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৫২ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

ডলার সংকটে আমিরাতকে করাচি বন্দর ইজারা দিচ্ছে পাকিস্তান

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: বুধবার, ২১ জুন, ২০২৩
ডলার সংকটে আমিরাতকে করাচি বন্দর ইজারা দিচ্ছে পাকিস্তান


ইসলামাবাদ, ২০ জুন – ডলার সংকটে ধুঁকতে থাকা পাকিস্তান তার প্রধান সামুদ্রিক বন্দর করাচি বন্দরের ইজারা সংযুক্ত আরব আমিরাতকে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ দিনকে দিন অনিশ্চিত হতে থাকায় জরুরি তহবিল যোগাড় করতে বাধ্য হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।

সোমবার পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার সভাপতিত্ব হওয়া সেই বৈঠকে আমিরাতের সরকারের সঙ্গে এ সংক্রান্ত আলোচনা এগিয়ে নেয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে এক প্রতিবেদেনে জানিয়েছে পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। কমিটির প্রধান হবেন পাকিস্তানের সমুদ্রসম্পদ বিষয়ক মন্ত্রী ফয়সাল শাবসওয়ারি।

এছাড়া অর্থমন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দুই অতিরিক্ত সচিব, করাচি বন্দরের চেয়ারম্যান ও মহাব্যবস্থাপকও সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন সেই কমিটিতে।

আমিরাতের সরকারের সঙ্গে বন্দরের কার্যক্রম, বিনিয়োগ, রক্ষণাবেক্ষণ ও উন্নয়নসংক্রান্ত আলোচনা ও এ সংক্রান্ত চুক্তি সম্পাদন নতুন এই কমিটির প্রধান দায়িত্ব।

প্রসঙ্গত, গত বছর পাকিস্তানের সরকারকে করাচি বন্দর ইজারা নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল আমিরাতের সরকার। এই প্রস্তাবের কিছুদিন পর প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের নেতৃত্বাধীন সরকার পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল কন্টেইনার্স টার্মিনাল অ্যাক্ট (পিআইসিটি) আইন পাস হয় দেশটির আইনসভায়। সেই আইনের আওতায়ই করাচি বন্দরের ইজারা দেওয়া হচ্ছে আমিরাতকে।

পাকিস্তানে এই প্রথম সুনির্দিষ্ট আইনের ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় কোনো সম্পদ অন্য দেশকে ইজারা দেয়া হচ্ছে।

৩টি সমুদ্রবন্দর রয়েছে পাকিস্তানের। একটি সিন্ধু প্রদেশের করাচি ও কার্শিতে ২টি এবং বেলুচিস্তানের গাওদায় একটি। তবে কার্শি ও গাওদার বন্দর দু’টি গভীর সমুদ্রের বন্দ্রর। করাচির বন্দরটিই এখনও পাকিস্তানের প্রধান বাণিজ্যিক সমুদ্রবন্দর এবং দেশটির মোট বৈদেশিক বাণিজ্যের ৬০ শতাংশ এই বন্দরের মাধ্যমেই পরিচালিত হয়।

বছরের পর বছর ধরে দুর্নীতি-অপচয় এবং অব্যবস্থাপনার কারণে তলানিতে ঠেকেছে পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত। একটি দেশের অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে হলে যেখানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অন্তত ৩ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো ডলারের রিজার্ভ থাকতে হয়ে, সেখানে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকে মাত্র দু’সপ্তাহের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো মজুত রয়েছে।

তাই স্বাভাবিকভাবেই চরম ভারসাম্যহীন অবস্থায় রয়েছে দেশটির অর্থনীতি; মূল্যস্ফীতিও বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। গত মাসে দেশটির মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৩৮ শতাংশ।

আইএমএফের কাছে এর আগে ২৬০ কোটি ডলার ঋণের জন্য আবেদন করেছিল পাকিস্তান। তারমধ্যে জরুরিভিত্তিতে চাওয়া হয়েছিল ১১০ কোটি ডলার। কিন্তু আইএমএফ থেকে এখনও এ সম্পর্কিত কোনো সবুজ সংকেত আসেনি।

এই ঋণ যোগাড়ের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তানের সরকার। আইএমএফের কাছে পাকিস্তানের পক্ষে সুপারিশ করার জন্য সোমবার দেশটিতে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।

সোমবারের সেই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জাপান, চীন, সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূতরা উপস্থিতি ছিলেন বলে জানিয়েছে দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

এন এ/ ২০ জুন





আরো খবর: