মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন বৃদ্ধা মাবিয়া খাতুন
বার্তা পরিবেশক::
কক্সবাজার জেনারেল হসপিটালের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ উঠেছে। ভুল চিকিৎসার শিকার বৃদ্ধা মাবিয়া খাতুন (৫০) বর্তমানে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।
মাবিয়া খাতুন রামুর খুনিয়াপালং ইউনিয়নের পূর্ব গোয়ালিয়া গ্রামের মৃত হাজী নুর আহমদের। এই ঘটনায় ওই বৃদ্ধার ছেলে ওসমান সরওয়ার আলম বাদী হয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডাঃ মোঃ আরিফ হোসেন ও তার সহকারি মোহাম্মদ রায়হানের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩-৪ জনের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেছেন।
ওই এজাহার সূত্রে জানা যায়, মাবিয়া খাতুন (৫০) দীর্ঘদিন যাবত পিটে মেরুদন্ডের পাশে একটি টিউমার নিয়ে খুবই অসুস্থতায় ভুগছেন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যার পর ওসমান সরওয়ার আলম তার মাকে দেখানোর জন্য কক্সবাজার শহরের হাসপাতাল সড়ক এলাকার জেনারেল হসপিটালে এফসিফিএস সার্জারী চিকিৎসক মোঃ আরিফ হোসেনের চেম্বারে নিয়ে যায়।
ওই সময় ডাঃ আরিফ হোসেন চেকআপ করার পর বলেন, তিনি ২০/৩০ মিনিটের মধ্যে মাবিয়া খাতুনের উক্ত টিউমার অপারেশন করতে পারবে এবং হাসপাতালে কোন ভর্তি হতে হবে না।
এসময় তিনি অপারেশন খরচ বাবদ ১৪ হাজার টাকা লাগবে বলে জানান। পরে অপারেশন করানোর জন্য রাজি হলে মাবিয়া খাতুনকে গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিকেলে জেনারেল হসপিটালে ডাঃ আরিফ হোসেনের চেম্বারে নিয়ে যাওয়া হয়।
উক্ত লিখিত এজাহারে ওসমান সরওয়ার আলম আরো উল্লেখ করেন-১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় ডাঃ আরিফ ওনার মাকে কোন ধরণের পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই সরাসরি অপারেশন করানোর জন্য উক্ত হাসপাতালের অপারেশন কক্ষে নিয়ে যায়। সাথে ডাক্তারের নির্দেশে তার সহকারি মোহাম্মদ রায়হানসহ অজ্ঞাতনামা আরো ৩/৪ জন আমার মায়ের হাত, পা চেপে ধরে কোন ধরণের অ্যানাসথেসিয়া ইনজেকশন না দিয়ে কিংবা অচেতন অবস্থা না করে গরু-ছাগল জবাই করার মত পিটের টিউমার স্থলে কেটে ফেলে।
ফলে মাবিয়া খাতুন প্রচন্ডভাবে মরণযন্ত্রণায় ছটফট করতে করতে প্রায় অসাঢ়-অচেতন হয়ে পড়ে। ভুল চিকিৎসার মাধ্যমে আমার মায়ের শংকটাপন্ন অবস্থা দেখে এ ব্যাপারে ডাঃ আরিফকে জিজ্ঞেসা করলে তিনি ওসমান সরওয়ারের সাথে খারাপ আচরণ করেন।
ওসমান সরওয়ার আলম অভিযোগ করেন, ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা অনুমান ৭টার দিকে জেনারেল হসপিটাল কর্তৃপক্ষ তার মাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলে ছাড়পত্র প্রদান করেন। বর্তমানে মাবিয়া খাতুনের অবস্থা অত্যন্ত শংকটাপন্ন। তিনি যেকোন সময় মৃত্যুবরণ করতে পারেন বলে আশংকা পরিবারের।
ডাঃ আরিফ হোসেনের সহকারী মোহাম্মদ রায়হান মুঠোফোনে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন-এখানে কোন ধরণের ভুল চিকিৎসা করা হয়নি।
অন্যদিকে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডাঃ আরিফ হোসেনের ব্যবহৃত মুঠোফোনে (০১৮১৮-৬৫০৪৬৩) কল করা হলে রিসিভ করে ব্যস্ত আছেন পরে কথা বলবেন বলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এরপর একাধিকবার কল করার পরও তিনি আর ফোন রিসিভি করেননি।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) সেলিম উদ্দিন জানান, এই সংক্রান্ত একটি লিখিত এজাহার ২০ সেপ্টেম্বর রাতে তিনি পেয়েছেন। যার বাদী ওসমান সরওয়ার আলম। তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।