ঢাকা, ১৪ ফেব্রুয়ারি – চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরকে শারীরিক লাঞ্ছনা, ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ১২ ছাত্রীসহ ১৩ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ।
আজ বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স, হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিন কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিকেল তিনটায় উপাচার্যের দপ্তরের সম্মেলনকক্ষে এ সভা হয়। সভা শেষে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, সহকারী প্রক্টরকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগে আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী আফসানা এনায়েত এমিকে স্থায়ী বহিষ্কার ও তার সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া ৯ জনকে ২ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। ধর্ম অবমাননার মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির দায়ে একজনকে ২ বছরের জন্য এবং আরেকজনকে ১ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানান, ‘অভিযোগ অনুযায়ী তদন্তের ভিত্তিতে শেখ হাসিনা হলের ১০ জন ও ধর্ম অবমাননার দায়ে দুজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
বহিষ্কারাদেশের তালিকায় নাম আসা ক্রিমিনোলজি বিভাগের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী জান্নাতুল মাওয়া মিথিলা বলেন, ‘ভিসি বাংলোর সামনে গেলে দুজন সহকারী প্রক্টর ওখানে গাড়ি নিয়ে আসেন। পূর্বপরিচয় না থাকায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থী জানতো না যে তারা প্রক্টর এবং গাড়ি থেকে নেমেই তারা তুই-তোকারি করা শুরু করেন। এই অবস্থায় সবাই ক্ষুব্ধ হন। তখন আমি শুধু বলেছিলাম, স্যার আপনি আমাদেরকে তুই করে বলতে পারেন না। এই একটা কথায় তো কাউকে বহিষ্কার করা ঠিক হয়নি। এমনকি তদন্ত কমিটিতেও বলা হয়েছিল যে, আমার বিরুদ্ধে গেট ভাঙা থেকে শুরু করে অন্যান্য কোনো অপরাধের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। এরপরেও এই ধরনের সিদ্ধান্তের কোনো ব্যাখ্যা খুঁজে পাচ্ছি না।’
গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলে ছাত্রীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির বাগ্বিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। ওই হলের সামনে রাখা নৌকা আকৃতির বসার স্থান ভাঙচুর করা নিয়ে প্রথমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে সহকারী প্রক্টরের গায়ে হাত তোলেন শেখ হাসিনা হলের শিক্ষার্থী আফসানা এনায়েত এমি। শিক্ষার্থীরা ওই হলের ছাত্রীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগও করেছিলেন। পাশাপাশি ভিডিও ধারণ করতে যাওয়া ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকদেরও লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছিল। পরে এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
সূত্র : সমকাল