শনিবার, ০৬ জুলাই ২০২৪, ০৪:১৩ অপরাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

চকরিয়ায় চিংড়িজোন থেকে চার অস্ত্রধারী গ্রেফতার, ১০ টি দেশীয় তৈরি বন্দুক উদ্ধার

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০২৪

এম জিয়াবুল হক, চকরিয়া::

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার চিংড়িজোনে
অবৈধ অস্ত্রের মাধ্যমে ঘের মালিক চাষীদের জিম্মি করে ঘের জবরদখল, মাছ ও মালামাল লুটপাট এবং ঘের কর্মচারীদের অপহরণসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত মূলহোতাসহ চার জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫। এসময় তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দেশীয় তৈরি ১০টি লম্বা বন্দুক। সোমবার দিবাগত রাতে উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের কোরালখালী এলাকার চিংড়িজোনে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব কক্সবাজারের একটি চৌকস টিম অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

এবিষয়ে গতকাল দুপুরে কক্সবাজারে প্রেসবিফ্রিং করেছেন র‌্যাবের গণমাধ্যম ও আইন শাখার পরিচালক কমাণ্ডার আরাফাত ইসলাম। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উপকূলীয় অঞ্চলের বিলুপ্তপ্রায় সুন্দরবন তথা চিংড়ি জোনে সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের তাণ্ডব ও লুটপাটের কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ গত ১৯ জুন দিবাগত রাতে চিরিঙ্গা ইউনিয়নের চরণদ্বীপ মৌজার গোলদিয়ায় ১০ একর বিশিষ্ট সাতটি ঘেরে (৭০ একর) হানা দেয় একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল। এ সময় তারা অন্তত শতাধিক ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে। অস্ত্রের মুখে ঘের কর্মচারীদের জিম্মি ও হাত-পা বেঁধে মারধর ও বিভিন্ন ভাবে নির্যাতন করে। এরপর ঘেরগুলো জবরদখলে নেয় সন্ত্রাসীরা।

তিনি বলেন, এ ঘটনার প্রেক্ষিতে সশস্ত্র সন্ত্রাসী ও ডাকাত দলকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে চিংড়িজোন এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারির পাশাপাশি অভিযান তৎপরতা জোরদার করে র‌্যাব। এরইধারাবাহিকতায়
সোমবার (১ জুলাই) দিবাগত রাতে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১৫ কক্সবাজারের এর একটি আভিযানিক দল যৌথভাবে চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের কোরালখালীর চিংড়িজোন এলাকায় অভিযান চালিয়ে দৈশীয় তৈরি অস্ত্রসহ চারজন অবৈধ অস্ত্রধারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন চকরিয়া উপজেলার সাহারবিল ইউনিয়নের কোরালখালী এলাকার আকবর আহমদ এর ছেলে বেলাল হোসেন (৪৫), তাঁর ভাই কামাল আহমদ (৩৮), আব্দুল মালেক (৩২) ও তাদের সহযোগী মৃত জহির আহমদ এর ছেলে নুরুল আমিন (৩৫)। অভিযানের সময় তাদের হেফাজত থেকে উদ্ধার করা হয়েছে দেশীয় তৈরি ১০টি আগ্নেয়াস্ত্র, ১২ বোর ৪০ রাউন্ড, ৭.৬২ মিঃ মিঃ ১০ রাউন্ড এবং ৭.৬৫ মিঃ মিঃ ২ রাউন্ড কার্তুজ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা চিংড়িজোনে ডাকাতি, চিংড়ি ঘের দখল ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে তাদের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে তথ্য দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন র‌্যাব সদর দপ্তরের পরিচালক (আইন ও গণমাধ্যম) কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।

আরাফাত ইসলাম আরও বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র। গ্রেফতারকৃত বেলাল, কামাল এবং মালেক আপন তিন ভাই। তারা চিংড়িজোনে অস্ত্রধারী ডাকাতদের নিয়ে “বেলাল বাহিনী” গড়ে তুলে মাছের ঘের দখল, লুটতরাজ, অপহরণসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছিলেন। এই বাহিনীর সশস্ত্র ডাকাত সংখ্যা ১৮ থেকে ২০ জন। গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন যাবৎ চকরিয়া উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী উপকূলীয় অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, জমি দখল, চিংড়ি ঘের দখল, লবণের মাঠ ও আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল।
তাদের মধ্যে গ্রেফতারকৃত বেলালের বিরুদ্ধে ৯টি, তাঁর ভাই কামালের বিরুদ্ধে ৬টি, মালেক ও নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় একটি করে মামলা রয়েছে।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, উপজেলার চিংড়িজোন থেকে চারজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী গ্রেফতার হয়েছে বলে শুনেছি। তবে গতকাল রাত সাতটা পর্যন্ত তাদেরকে চকরিয়া থানায় পাঠানো হয়নি। ##


আরো খবর: