প্রশাসনের অভিযানে কাটা গাছ জব্দ
এম জিয়াবুল হক, চকরিয়া::
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার পাহাড়ি জনপদের ইউনিয়ন সুরাজপুর মানিকপুরে সড়ক বনায়নের বিপুল গাছ কেটে সাবাড় করে লুটে নিয়ে যাচ্ছে কতিপয় চিহ্নিত দুবৃর্ত্তরা। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সেখানকার সড়কে ঠাই দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল আকৃতির শিশু ফুল গাছ (শিশু বট গাছ) কাটা শুরু হলেও তা প্রতিরোধকল্পে বনবিভাগ কিংবা গাছগুলো রক্ষণাবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কার্যকর কোনধরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
এ সুযোগে লুটেরা চক্র অনেকটা ফিল্মিস্টাইলে সড়কের ছায়াবৃক্ষ গুলো কেটে সাবাড় করে গাড়িতে করে লুটে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন পরিবেশবাদি সংগঠন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) চকরিয়া উপজেলা কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি সাংবাদিক এসএম হানিফ।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, সড়কের গাছ কেটে লুটের সঙ্গে জড়িতরা স্থানীয়ভাবে দাপটশালী ও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত। সেকারণে ইচ্ছা করলেও এলাকাবাসী তাদেরকে বাঁধা দিতে সাহস করেনি।
গতকাল সোমবার (৭ এপ্রিল) দুপুরে ইউনিয়নের মানিকপুর ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বড়ুয়াপাড়া এলাকায় সড়কের পাশের গাছ কেটে সাবাড় করার একটি স্থিরচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এ অবস্থায় বিষয়টি চকরিয়া উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসলে তাৎক্ষণিক ইউএনও মোহাম্মদ আতিকুর রহমানের নির্দেশে ঘটনাস্থলে অভিযান পরিচালনা করেছেন সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো: এরফান উদ্দিন। তিনি এসময় ঘটনাস্থল থেকে বেশকিছু কাটা গাছ জব্দ করেছে। পরে গাছগুলো স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের জিন্মায় দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সুরাজপুর মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব নূরউদ্দিন সোহেল।
ইউপি সচিব বলেন, উপজেলা প্রশাসনের অভিযানের সময় গাছ কাটার সঙ্গে জড়িতরা পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থলে গাছ গুলোর ক্রেতা হিসেবে ফিরোজ আহমদ সওদাগর আর বিক্রেতা হিসেবে প্রবাসি ঈদ্রিছ আহমদ এর নাম পাওয়া গেছে।
সড়ক বনায়নের গাছ হলেও এগুলো দেখভালের দায়িত্ব স্থানীয় বনবিভাগের উপরও রয়েছে। জানতে চাইলে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের চকরিয়া উপজেলার ফাসিয়াখালী রেঞ্জ অফিসার মো. মেহেরাজ উদ্দিন বলেন, সড়কের গাছ গুলো মুলত উপজেলা প্রশাসন মালিক। তাই উল্লেখিত বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা নেবে। সেখানে যদি আমাদের সম্পৃক্ত করা হয়, তাহলে বনবিভাগ বিধি অনুযায়ী সহযোগিতা করবে।
জানা গেছে, একযুগের বেশি সময় আগে সুরাজপুর মানিকপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন সড়কে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিআরডি) ও বৃটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি সড়কের দুইপাশে ছায়াবৃক্ষ হিসেবে এসব ফুল গাছ (শিশু বট গাছ) রোপণ করে। পরে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে গাছগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের উপর ন্যস্ত করা হয়।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, মানিকপুরে সড়ক বনায়নের গাছ কাটার খবর শুনে তাৎক্ষণিক নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো: এরফান উদ্দিন ও চকরিয়া থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত চক্রের পরিচয় সনাক্ত করা হচ্ছে। এরপর তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ##