ওয়াশিংটন, ১৯ জুলাই – গ্রেফতার হতে পারেন এমন আতঙ্কে রয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে দাঙ্গা তদন্তে এবং ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করার দায়ে তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে বলে তিনি মনে করছেন। খবর বিবিসির।
সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, রোববার রাতে সরকারের বিশেষ কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথ তাকে জানিয়েছেন যে তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, একটি গ্র্যান্ড জুরির কাছে তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আসলে এর মানে দাঁড়ায় অভিযোগ দায়ের এবং গ্রেফতার।
তবে এ নিয়ে বিশেষ কৌঁসুলি জ্যাক স্মিথ তাৎক্ষণিকভাবে গণমাধ্যমের প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি। ফৌজদারি অপরাধের জন্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এটাই হবে তৃতীয় কোন অভিযোগ। এর আগে তার বিরুদ্ধে গোপনীয় সরকারি দলিল অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়। এজন্য জ্যাক স্মিথের আইনজীবী দল গত জুনে সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।
এর বাইরে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালে নিউইয়র্কে পর্ন তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসের মুখ বন্ধ রাখার জন্য তাকে গোপনে অর্থ প্রদানের ব্যাপারে মিথ্যাচারের অভিযোগও আনা হয়। তার বিরুদ্ধে ওই মামলায় বিচার শুরু হবে আগামী বছরের মার্চে।
অন্যদিকে গোপন দলিল সংক্রান্ত মামলার তারিখ ঠিক করা নিয়ে প্রেসিডেন্টের আইনজীবীরা এখনও সরকারি কৌঁসুলিদের সঙ্গে দরকষাকষি করছেন। তার নিজস্ব ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এক পোস্টে ট্রাম্প দাবি করেন তাকে একটি চিঠি পাঠানো। সেখানে ট্রাম্প বলেন, গত ৬ জানুয়ারির গ্র্যান্ড জুরি তদন্তে আমাকে টার্গেট করা হয় এবং আমাকে গ্র্যান্ড জুরির কাছে আত্মসমর্পণের জন্য মাত্র চার দিন সময় দেওয়া হয়েছে। সবসময় এর অর্থ গ্রেফতার এবং অভিযোগনামা দায়ের।
ট্রাম্প গত শরতে প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করবেন এমন ঘোষণার পরপরই মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড স্মিথকে বিশেষ কাউন্সিল পদে নিয়োগ করেন।
তার দায়িত্ব হচ্ছে, প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়ার পর ট্রাম্প কীভাবে গোপনীয় দলিলের অপব্যবহার করেছেন, কীভাবে ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল হিলে আক্রমণে সমর্থন দিয়েছেন এবং কীভাবে তিনি ও তার উপদেষ্টারা ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফলকে উল্টে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তা খতিয়ে দেখা।
ক্যাপিটল হিলে হামলা ঘটনা নিয়ে স্মিথের তদন্তে সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স এবং ট্রাম্পের আইনজীবী রুডি জুলিয়ানিসহ ট্রাম্প প্রশাসনের কয়েক ডজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার সাক্ষাতকার নেওয়া হয়।
পাশাপাশি ২০২০ সালের নির্বাচন নিয়ে সরকারি কর্মকর্তাদেরও বক্তব্য নেওয়া হয়। সেখানে তারা জানিয়েছেন, ফলাফল বাতিল করার জন্য ট্রাম্প তাদের ওপর চাপ দিয়েছিলেন।
সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে কোন নির্দিষ্ট ফৌজদারি লঙ্ঘন বিবেচনা করা হচ্ছে রাষ্ট্রের বিশেষ কৌঁসুলির কার্যালয় তা নিয়ে কোনো বক্তব্য দেয়নি।
অ্যাটর্নি জেনারেল গারল্যান্ড জ্যাক স্মিথকে ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর ক্ষমতার বৈধ হস্তান্তরে হস্তক্ষেপ করার কিংবা ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের সার্টিফিকেট প্রদানে হস্তক্ষেপ প্রচেষ্টার তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।
সূত্র: জাগো নিউজ
আইএ/ ১৯ জুলাই ২০২৩