রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:২৩ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

কক্সবাজারে দুইশ কোটি টাকার ক্ষতি

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই, ২০২৪

শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতা তৈরি হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কারফিউ জারি করে সরকার। এতে চলমান কারফিউয়ের কারণে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ে কক্সবাজার।

এ অবস্থায় পর্যটনশিল্পে প্রতিদিনই কয়েক কোটি টাকার ক্ষতিতে পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক রেস্তোরাঁ।

গেল এক সপ্তাহে এ শিল্পে ২০০ কোটি টাকারও বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসীরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে এ ক্ষতির পরিমাণ দ্বিগুণ হতে পারে বলেও দাবি তাদের। ব্যবসায়ীরা জানান, যারা কক্সবাজার বেড়াতে আসার জন্য রুম বুকিং রেখেছিলেন তারা বুকিং বাতিল করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কক্সবাজার সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা এবং লাবণী পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায় সৈকতের ফটোগ্রাফার, বিচ বাইক-ওয়াটার বাইকচালক ও ঘোড়াওয়ালারা অলস সময় পার করছেন। পর্যটকহীন খালি পড়ে আছে কিটকটগুলো।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা কালবেলাকে বলেন, গেল এক সপ্তাহে ক্ষতির পরিমাণ ২০০ কোটি টাকার ওপরে হতে পারে বলে আশঙ্কা করছি আমরা। শুধু হোটেল ব্যবসা নয়, এখানে রয়েছে রেস্তোরাঁ, শামুক ঝিনুক, শুঁটকি, পর্যটক বহনকারী গাড়ি, ইজিবাইক, ঘোড়া, ফটোগ্রাফার, কিটকট, ওয়াটার বাইক এবং ভাসমান হকারসহ বিভিন্ন রকমের ব্যবসা। এসব শিল্পের সঙ্গে জড়িত কয়েক লাখ মানুষ।

হোটেল সাইমান বিচ রিসোর্টের সিনিয়র কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান নুর বলেন, প্রতিদিন আমাদের ২৩ লাখ টাকার অধিক লোকসান হচ্ছে। সে হিসেবে গেল ৭ দিনে শুধু সায়মান বিচ রিসোর্টে ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। এতে সরকার প্রায় ২৪ লাখ টাকার রাজস্ব হারিয়েছে।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বলেন, কক্সবাজারে সাড়ে ৪০০ হোটেলে ও গেস্ট হাউসে ম্যানেজমেন্টের যে ব্যয়, তা পুষিয়ে নিতে ব্যবসা বন্ধ করে রাখা ছাড়া আর কোনো উপায় খুঁজে পাচ্ছি না। আমরা যখন একটু ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি, তখনই একটা খারাপ পরিস্থিতি সামনে আসে। পর্যটনশিল্প ব্যবসার জন্য এটি খুবই আতঙ্ক এবং উদ্বেগের।

রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম ডালিম বলেন, আমাদের সমিতিভুক্ত ১২০টি রেস্তোরাঁ রয়েছে। এর মধ্যে ১০০টির মতো বন্ধ হয়ে গেছে। এর বাইরেও রয়েছে ৩০০টির মতো। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে লোকসান কমাতে মালিক পক্ষ অনেকে শ্রমিক ছাঁটাই করতে পারেন বলেও জানান তিনি।

কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকে কক্সবাজার ছেড়েছে পর্যটকরা। যারা আটকে ছিল তাদের অনেকে বিলও পরিশোধ করতে পারেননি। সর্বশেষ মঙ্গলবার সেনাবাহিনীর পাহারায় বাকিরাও ফিরে গেছেন। বলতে পারেন কক্সবাজার এখন পর্যটকশূন্য।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আতাউল গনি ওসমানী কালবেলাকে বলেন, হঠাৎ করে দেশে এক ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হলে কক্সবাজারে আটকা পড়েন পর্যটকরা। সেনাবাহিনীর পাহারায় তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে কক্সবাজার নিরাপত্তা চাদরে ঢাকা রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছে।


আরো খবর: