ঢাকা, ১৪ ফেব্রুয়ারি – বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, স্থানীয় নির্বাচন আগে নাকি সংসদ নির্বাচন আগে এটা যারাই বলছেন বা যাকে দিয়ে বলাচ্ছেন- এতে সামনে সেন্টারিস্ট (মধ্যপন্থা) রাজনীতি বিপদে পড়তে যাচ্ছে কি না এমন শঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক শক্তিকে যদি খাটো করে দেখেন তাহলে চরমপন্থার উত্থান হতে পারে। চরমপন্থা শুধু বাম দিক দিয়ে আসে না, ডান দিক দিয়েও আসে। এটা মাথায় রাখতে হবে।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পবিত্র শবে বরাত উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, রাজনীতিবিদদের বিশ্বাস না করা অর্থাৎ বিরাজনীতিকরণ। এই বিরাজনীতিকরণ করতে করতে গণতন্ত্রের আজ ভঙ্গুর অবস্থা। এটার মধ্য দিয়েই ফ্যাসিবাদের উত্থান হয়েছে।
তিনি বলেন, ড. ইউনূস আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তি। তিনিও শেখ হাসিনা দ্বারা নির্যাতিত। তিনি ন্যায়সঙ্গত কাজ করবেন, তার নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে এবং গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক শক্তি বিকশিত হবে। দেশে অনেক রাজনৈতিক দল আছে, রাজনীতিবিদ আছেন। গণতান্ত্রিক পন্থায় তারা ক্ষমতায় আসবে এই ব্যবস্থাটা আগে করুন। যারাই ক্ষমতায় আসুক তাদের মাধ্যমেই দেশ চলবে, স্থানীয় নির্বাচন হবে। আরও সংস্কার হবে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক করছে। স্থানীয় নির্বাচন আগে হতে হবে তারপরে সংসদ নির্বাচন হবে। কেন? রাজনীতি কে করবে, কে ক্ষমতায় আসবে এটা নির্ধারণ করবে জনগণ। জনগণের সেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যই তো গত ১৭ বছর আন্দোলন সংগ্রাম হয়েছে। জনগণের যে ক্ষমতা শেখ হাসিনা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ধ্বংস করেছিল তা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্যই তো এত রক্ত ঝরেছে। জনগণের কাছে সেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্বই তো অন্তর্বর্তী সরকারের। সুতরাং স্থানীয় নির্বাচন আগে নাকি সংসদ নির্বাচন আগে এই কথাগুলো আসছে কেন?
তিনি বলেন, বিএনপি বলেছে সংসদ নির্বাচন একটি জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাজনীতিবিদদের কাছে ক্ষমতা থাকবে। ক্ষমতার উৎস হচ্ছে জনগণ। জনগণের কাছে সেই ক্ষমতা ফিরিয়ে দিলে রাজনৈতিক শক্তি বিকশিত হবে। সেই রাজনৈতিক শক্তির বিকাশের মধ্য দিয়ে যত নির্বাচন আছে সেগুলো হবে। কিন্তু বিতর্ক নিয়ে এসেছে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে নাকি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগে। মাথা আগে নাকি লেজ আগে তা নির্ধারণ করতে হবে। নির্ধারণ করতে হবে কোনটা চালিত শক্তি। মাথা ঠিক থাকলে সবকিছু ঠিক থাকে। জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দলের ক্ষমতায়ন হবে। সেই ক্ষমতায়নের মধ্য দিয়ে অন্যান্য নির্বাচন হবে। এখানে নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষ থাকবে কি না আপনারা সেটা দেখবেন।
দোয়া মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, রংপুর বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী।
সূত্র: জাগো নিউজ
আইএ/ ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫