কক্সবাজারের উখিয়ায় দেশীয় মুরগী পালন করে দারিদ্রতা বিমোচনে সফল হয়েছে সাজেদা বেগম। স্বাবলম্বী হয়ে পুরো পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে । মুক্তি কক্সবাজার নামক এনজিও সংস্থার সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে উক্ত সংস্থার দেওয়া দেশীয় মুরগী পালন করে করে ১২৫৬টি পরিবার স্বাবলম্বী হয়েছে ।
উখিয়া উপজেলার রাজা পালং ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বটতলী গ্রামের মৃত নুর আহমদের স্ত্রী সাজেদা বেগম জানান , স্বামীর অকাল মৃত্যু হলে ৫ ছেলে মেয়ে নিয়ে সংসারে অভাব অনটন শুরু হয়। এনজিও মুক্তি কক্সবাজারের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ ও উক্ত সংস্থার দেয়া দেশীয় মুরগী পালন করে এখন স্বাবলম্বী হয়েছে । বর্তমানে তার রয়েছে ৫০ টির মত মোরগ-মুরগী। বাজারে বিক্রি করে আয়কৃত অর্থ দিয়ে সবজি ও ধান চাষ করে অভাব অনটন দূর হয়েছে। আর্থিক স্বচ্ছলতা ফিরে আসায় ছেলেমেয়েদেরও লেখাপড়া শিখানো সম্ভব হয়েছে ।
একই এলাকার মৃত আব্দুল হালিমের স্ত্রী জারিয়া খাতুন বলেন দেশীয় মুরগী পালন করে স্বাবলম্বী হয়ে গবাদি পশু পালন শুরু করেছি। শুধু তাই নয় এভাবে রোকেয়া বেগম সাবেকুন্নাহার সহ অনেকে জানান, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জন করে দেশীয় মুরগী পালন করে দারিদ্র বিমোচনে সফলতা পেয়েছে। তাদের পরিবারে হাসি ফুটেছে । ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার সুযোগ হয়েছে। তারা আরও জানান মুরগী পালনে সফল হয় তাদের পরিবারে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ, বাড়ির আসবাবপত্র সংগ্রহ ও ছাগল গরু ক্রয় করেছে। এমনকি ধান চাষ ও সবজি ক্ষেত করার জন্য জমি লিজ নিয়েছে এ সব পরিবার ।
এনজিও সংস্থা মুক্তি কক্সবাজার এর প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর মোহাম্মদ ওসমান গনি জানান , জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের অর্থায়নে আইপিসিওএসও কর্মসূচির আওতায় রোহিঙ্গা অধ্যুষিত ক্ষতিগ্রস্ত অতি দরিদ্র পরিবারকে স্বাবলম্বী করতে এ প্রোগ্রাম শুরু করে। এ পর্যন্ত রাজাপালং ও পালংখালী ইউনিয়নের ১২৫৬ পরিবারকে উপকারভোগী হিসাবে নির্বাচিত করে দেশীয় মুরগি প্রদান করা হয় । প্রতিটি পরিবারকে ১৬ টি মুরগী ও ৪ টি মোরগ দেয়ার পাশাপাশি ২ তলা বিশিষ্ট মুরগী পালনের ঘর, খাবারের পাত্র ও ২০ কেজি মুরগীর খাবার বিতরণ করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, প্রত্যেক পরিবার দেশীয় মুরগী পালন ও বাজারে বিক্রি করে প্রতিমাসে ২ হাজার ৫ শত টাকা থেকে ২ হাজার ৮ শত টাকা আয় করতেছে।
স্থানীয় সচেতন নাগরিকদের মতে , দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে মুক্তি কক্সবাজার এনজিও সংস্থার এ ধরনের কর্মসূচি ব্যাপক সফলতা পেয়েছে।
প্রজেক্ট অফিসার লিজা আরফিন জানান বিগত ২০১৯ সাল থেকে শুরু হওয়া ২০২৩ সাল পর্যন্ত চলমান এ কর্মসূচির আওতায় দরিদ্র পরিবারগুলো কে স্বাবলম্বী করতে দেশীয় মুরগি পালনের মাধ্যমে উদ্যোক্তা সৃষ্টির পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন প্রয়োগে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে । এছাড়াও খামারের মুরগী বিক্রি করতে মার্কেটিং লিংকেইজ করা হয়।