বনবিভাগের বিট কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান হত্যাকান্ডের ঘটনায় প্রধান আসামী ঘাতক ডাম্পারের চালক বাপ্পীকে সোমবার (৮ এপ্রিল) চট্টগ্রামের বন্দর থানা থেকে গ্রেফতার করেছে।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বাপ্পি জানিয়েছে ঘটনার সময় চালক বাপ্পির পাশের আসনে ছিলেন এ মামলার ১০ নং আসামী রাজাপালংয়ের হরিণমারা এলাকার শাহ আলমের ছেলে কামাল উদ্দিন ড্রাইভার এবং ঘটনার ২ দিন আগে কামাল উদ্দিন ড্রাইভারসহ হরিণমারা থেকে আরো কয়েকটি ডাম্পার আটক করে মামলা দেয় নিহত বনকর্মকর্তা সাজ্জাদ।
সেকারণেই কামাল উদ্দিন ড্রাইভারসহ এ মামলার আসামীরা আগে থেকেই পরিকল্পনা করতে থাকেন বনকর্মকর্তা সাজ্জাদকে দায়িত্বপালনকালীন যেখানে পাবে হত্যা করবে, সর্বশেষ ৩১ মার্চ ভোররাত ৩ টার দিকে হরিণমারা এলাকায় সাজ্জাদ অভিযানে যায়। বন থেকে পাহাড়ের মাটি নিয়ে বের হতে দেখা ডাম্পারটিকে থামার জন্য সংকেত দেন, কিন্তু চালক বাপ্পি গাড়ি না থামিয়ে সাজ্জাদকে চাপা দিয়ে হত্যা করে ডাম্পারটি নিয়ে পালিয়ে যায়।
ডাম্পারটি নিয়ে পার্শ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার পাহাড়ী এলাকায় রেখে পালিয়ে যায় আসামী বাপ্পি।পরে সেখান থেকে উখিয়া থানা পুলিশ হত্যায় ব্যবহৃত ডাম্প ট্রাকটি (ডাম্পার) নাইক্ষ্যংছড়ি থেকে জব্দ করে ঘটনার দিন দুপুরে থানায় নিয়ে আসে।
পু্লিশ আরও জানায়, চালক বাপ্পি ঘটনার পরপর তার মোবাইল এবং সিম নষ্ট করে ফেলে দিয়ে সে চট্টগ্রামে আত্নগোপনে চলে যায়, পুলিশ সেখান থেকেই তাকে গ্রেপ্তার করে।
উখিয়ার হরিণমারায় নিহত বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জমান সজলের হত্যা মামলার প্রধান আসামী মোঃ বাপ্পি (২৩) আটকের ঘটনার পর মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সকালে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ( উখিয়া সার্কেল) মোঃ রাসেল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
গত ৩১ মার্চ ভোররাতে উখিয়ার রাজাপালংয়ের হরিণমারা এলাকায় পাহাড় কেটে মাটি ডাম্পার করে পাচারের সংবাদ আসে নিহত বনকর্মকর্তা সাজ্জাদের কাছে, তিনি সাথে সাথে সেহেরি শেষ করে রেঞ্জের বনরক্ষী মোঃ আলীসহ মোটরসাইকেল নিয়ে হরিণমারায় অভিযানে যান। সেখানেই ডাম্পারের চাকায় পিষ্ট করে সাজ্জাদকে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় ১ এপ্রিল উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা বাদী হয়ে উখিয়া থানায় ১০ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেন। এছাড়াও অজ্ঞাত দেওয়া হয় আরও ৫/৬ জনকে। এ মামলায় এখন পর্যন্ত দুইজন আসামী আটক হয়েছে। মামলার ৫নং আসামী ছৈয়দ করিম (৩৫) ও প্রধান আসামী ডাম্পারের চালক বাপ্পি (২৩), ছৈয়দ করিম এর আগে আটক হন, তিনি এখন জেলে আছেন।
নিহত বনকর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান সজল উখিয়া রেঞ্জের দৌছড়ির বিট কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
তাঁর বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার ভিটিকান্দিতে। তিনি ২০২০ সালে বনবিভাগে যোগ দেন।