উখিয়া উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরীর জানাযার নামাজ শুক্রবার (২৪ মে) বিকেল ৩ টায় উখিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাযায় নামাজে শোকাহত লাখো মানুষের ঢল নামে। পরে উখিয়া কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কবর স্থানে মরহুমের লাশ দাফন করা হয়।
মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে জানাজার নামাজের পূর্বে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের মাননীয় হুইপ সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, মহেশখালী-কুতুবদিয়া আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেন, উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শামিম হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান, কক্সবাজার পৌর সভার মেয়র মাহবুবুর রহমান, কক্সবাজার জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী, উখিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এড. শাহ জালাল চৌধুরী, সাবেক উপজেলার চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরী, কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল আবছার, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনুল হক চৌধুরী মার্শাল, পরিবারের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন পরিবারে অন্যতম অভিভাবক মরহুমের ছোট ভাই সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা জাফর আলম চৌধুরী, মরহুমের ছোট ভাই আমিনুল হক চৌধুরী, মরহুমের একমাত্র পুত্র ইশতিয়াক মাহমুদ আসিফ চৌধুরী।
বক্তারা বলেন, তাঁর মৃত্যুত্বে উখিয়াবাসী একজন দক্ষ, স্পষ্টবাদী, জ্ঞানী, বিচক্ষণ বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদকে হারালো।
উল্লেখ্য, দ্বিতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন উখিয়া সদরের ফলিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মরহুম বদিউর রহমান চৌধুরীর পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম নুরুল ইসলাম চৌধুরী।
২০০৪ সালের ২৩ মে (রবিবার) বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন সীমান্ত উপজেলার জনপ্রিয় এই রাজনীতিবিদ।
২০ বছর পর একই দিনে ২৩ মে (বৃহস্পতিবার) সকাল ১১ টা ৩০ মিনিটে ঢাকার ল্যাব এইড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করলেন তাঁর ছোট ভাই উখিয়া উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লিভার রোগে ভুগছিলেন।
১৯৬৩ সালের ২২ জুন জন্মগ্রহণ করা বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদের মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিলো ৬১ বছর।
পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়া হামিদুল হক চৌধুরী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগ হতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন।
তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক, পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মৃত্যুকালে স্ত্রী, কন্যা-পুত্র সহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি, তার মৃত্যুতে উখিয়ায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
হামিদুর হক চৌধুরী উখিয়ার একমাত্র উচ্চ পর্যায়ের নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ, উখিয়া স্টেশন জামে মসজিদ ও ওয়াকফ্ এস্টেট পরিচালনা কমিটির সেক্রেটারি। এছাড়াও তিনি দীর্ঘ দেড় যুগের মতো সময় দলের দু:সময়ে উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি দায়িত্ব সফলতার সাথে পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি কক্সবাজার রোহিঙ্গা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও উখিয়া প্রেস ক্লাবের আজীবন (দাতা) সদস্য হিসাবে দায়িত্ব ছিলেন।
অধ্যক্ষ হামিদুর হক চৌধুরী আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আস্থাভাজন ও বিশ্বস্ত একজন রাজনৈতিক নেতা ছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে অধ্যক্ষ হামিদুর হক চৌধুরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় সফর সঙ্গী হওয়ার সুযোগ পেয়ে ছিলেন।
অধ্যক্ষ হামিদুর হক চৌধুরী কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের ফলিয়া পাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি উখিয়া-টেকনাফ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য শাহিন আক্তার, উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী ও জেলা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক হুমায়ুন কবির চৌধুরী মন্টু চাচা। সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম চৌধুরী ও আসন্ন উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী জাফর আলম চৌধুরী ছোট ভাই। সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদি ও সাবেক সংসদ সদস্য আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদের চাচা শশুর। উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ছেনুয়ারা বেগম এর দেবর। উখিয়া উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নিগার সুলতানা’র স্বামী।