ইসলামবাদ, ১০ আগস্ট – ক্রিকেটের ময়দান থেকে রাজনীতির পিচে অবতরণ। তারপর সেনার আশীর্বাদধন্য হয়ে প্রধানমন্ত্রিত্ব প্রাপ্তি। অবশেষে গদিচ্যুত হয়ে গারদে। ইমরান খানের জীবন যেন টানটান নাটকের প্লট। আর এই প্লটে আমেরিকার ভূমিকা কতটা তা সবার জানা। এহেন প্রেক্ষাপটে প্রকাশ্যে এসেছে এক বিস্ফোরক রিপোর্ট। সেখানে দাবি করা হয়েছে, মার্কিন অঙ্গুলি হেলনেই নাকি গদি হারিয়েছেন পিটিআই প্রধান!
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ইন্টারসেপ্ট’-এ প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধে ‘নিরপেক্ষ’ থাকার মাশুল গুনতে হয়েছে ইমরান খানকে। ৭ মার্চ, ২০২২ সালে হওয়া এক বৈঠকে ইমরানকে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরাতে পাকিস্তান সরকারের উপর চাপ দেয় মার্কিন বিদেশ দপ্তর। শর্ত মানলে ইসলামাবাদকে অনেক কিছু ‘পাইয়ে দেওয়ার’ কথাও নাকি বলা হয়। ‘দ্য ইন্টারসেপ্ট’-এর দাবি, পাক সেনার এক আধিকারিকের মাধ্যমেই তাদের হাতে একটি গোপন নথি এসেছে। সেখানে আমেরিকায় নিযুক্ত পাকিস্তানের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত আসাদ মাজিদ খান ও মার্কিন বিদেশ দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক বিভাগের সহ-সচিব ডোনাল্ড লু-র মধ্যে হওয়া বৈঠকের উল্লেখ রয়েছে। তাৎপর্যপুর্ণ ভাবে, ওই বৈঠকের এক মাস পরেই পাক পার্লামেন্টে ইমরানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়।
বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, সেনার সঙ্গে বনিবানা না হওয়ায় গদি হারাতে হয়েছে ইমরান খানকে (Imran Khan)। আর কাপ্তানকে সরানোর জন্য রাওয়ালপিন্ডিতে কলকাঠি নেড়েছে আমেরিকা। কারণ, রাশিয়া ও চিনের সঙ্গে পিটিআই প্রধানের সখ্য কিছুতেই মানতে পারছিল না ওয়াশিংটন। তাছাড়া, আমেরিকা বিদ্ধেষ কখনও গোপন করেননি ইমরান। গদি হারানোর আগে আমেরিকার উদ্দেশে তিনি সাফ বলেছিলেন, “আপনাকা ভাবেন কি? আমরা গোলাম, যা বলবেন তাই করব। আমরা রাশিয়ার বন্ধু। চিনেরও বন্ধু। আমরা সবার বন্ধু।”
উল্লেখ্য, গত বছর অনাস্থা প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী পদ হারানোর পর থেকেই পাক সেনা ও আমেরিকার দিকে আঙুল তুলেছেন ইমরান। তাঁর অভিযোগ, বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন তিনি। কয়েকদিন আগেই তোষাখানা মামলায় তিন বছরের জেল হয়েছে প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর। আগামী পাঁচ বছরের জন্য তাঁর নির্বাচনে লড়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। সবমিলিয়ে, অর্থাৎ ‘কাপ্তান’ সাহেবের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন উঠে গেল।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
আইএ/ ১০ আগস্ট ২০২৩