কক্সবাজারের আলোচিত উপজেলা উখিয়ায় র্যাবের পৃথক অভিযানে অপহরণ ও মানবপাচার চক্রের দুই মূলহোতাকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বুধবার রাতে উখিয়ার মরিচ্যা ও পালংখালী এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের নতুন পল্লান পাড়ার মৃত সিরাজুল ইসলামের ছেলে আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ (৪৬) ও পালংখালী ইউনিয়নের নাজির হোছনের ছেলে জিয়াবুল হক (৩৫)।
র্যাব-১৫ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (ল’ এন্ড মিডিয়া) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আবু সালাম চৌধুরীর স্বাক্ষরিত পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে র্যাব-১৫, কক্সবাজারের আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, উখিয়া থানাধীন ৩নং হলদিয়াপালং ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ মরিচ্যা এলাকায় একজন ব্যক্তি অস্ত্রশস্ত্র ও মাদক ক্রয়-বিক্রয় বা অন্যত্র সরবরাহের উদ্দেশ্যে অবস্থান করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে একটি চৌকস আভিযানিক দল বর্ণিত স্থানে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের লক্ষ্যে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযান পরিচালনাকালে র্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টাকালে আভিযানিক দলের নিকট আরিফ নামে একজন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ধরা পড়ে। উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত ব্যক্তির দেহ তল্লাশি করে তার হেফাজতে থাকা একটি দেশীয় তৈরি এলজি ও ২ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আরিফকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আরিফ টেকনাফের নতুন পল্লান পাড়া ও লেঙ্গুর বিল এলাকার অপহরণ ও মানবপাচার চক্রের অন্যতম মূলহোতা। আরিফ এবং তার অন্য দুই ভাই মুহিত কামাল ও কুলু মিলে বর্ণিত এলাকার সমস্ত অপহরণ ও মানবপাচার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সম্প্রতি তার ভাই মুহিত কামাল র্যাব-১৫ কর্তৃক পাঁচজন সহযোগীসহ গ্রেপ্তার হয়।
উল্লেখ্য, গ্রেফতারকৃত আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে ২টিসহ ৪টি মামলা রয়েছে।
অপরদিকে বুধবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে কক্সবাজার সিপিএসসি’র একটি চৌকস আভিযানিক দল উখিয়া থানাধীন পালংখালী এলাকায় অপহরণ, মুক্তিপণ ও মানবপাচার মামলার এজাহারভুক্ত আসামি গ্রেফতারের লক্ষ্যে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। ওই অভিযানে র্যাবের আভিযানিক দল বর্ণিত এলাকা থেকে জিয়াবুল হক নামের একজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত জিয়াবুল কক্সবাজারের উখিয়ায় অপহরণ ও মানবপাচারের একটি চক্রের অন্যতম মূলহোতা। সে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের সাথে যোগসাজসে অপহরণ, মুক্তিপণ ও মানবপাচারের একটি সংঘবদ্ধ নেটওয়ার্ক পরিচালনা করে থাকে।
উল্লেখ্য, ধৃত আসামীর বিরুদ্ধে কক্সবাজার জেলার উখিয়া থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনের ৭/৮/১০ ধারায় মামলা রয়েছে।
উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও কার্তুজসহ অস্ত্রধারী সন্ত্রাসি ও মামলা মোতাবেক অপর আসামির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণার্থে উখিয়া থানায় তাদের হস্তান্তর করা হয়েছে।