শিরোনাম ::
নিজের কথা ও সুরে সিনেমার গানে কণ্ঠ দিলেন মোশাররফ ইন্টারনেটের ওপর বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহারের বিষয়ে উপদেষ্টা নাহিদের পোস্ট শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে নতুন তথ্য দিলো আবহাওয়া অধিদপ্তর জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং প্রতিবেদন ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশের ঋণের কিস্তি ছাড় পেছাল আইএমএফ ‘পরবর্তী ২০ বছর দেশের রাজনীতিতে তরুণদের প্রভাব অব্যাহত থাকবে’ ২৮ জানুয়ারি থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধের হুঁশিয়ারি রেলকর্মীদের হাসিনার বিদ্বেষমূলক বার্তা প্রচার করলে আইনি ব্যবস্থা শেখ হাসিনার ‘নিশি রাতের ভোট’ নিয়ে অনুসন্ধানে দুদক দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত সমন্বয়ক শহীদ
বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:১১ অপরাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

হাজার কোটি টাকা ব্যাংক ঋণ নিয়ে শাহীন-সাখী দম্পতির কানাডায় চম্পট!

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০২৪


চট্টগ্রামের জাহাজ ভাঙার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মিশম্যাক গ্রুপের মালিকেরা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে লাপাত্তা। এই প্রতিষ্ঠানের মালিক তিন ভাই মিজানুর রহমান শাহীন, মুজিবুর রহমান মিলন ও হুমায়ুন কবির। ৯টি ব্যাংকে তাদের খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ১০০০ কোটি টাকা বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া শাহীনের স্ত্রী কামরুন নাহার সাখীর বিরুদ্ধে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের শেয়ার জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে। তিনি এনআরবি ব্যাংকের সাবেক পরিচালক। জানা গেছে, বিভিন্ন ব্যাংকের পাচার করা অর্থ দিয়ে কৌশলে স্ত্রী কামরুন নাহার সাখীকে ব্যাংকের পরিচালক করেছিলেন শাহীন। সূত্র জানায়, শাহীন-সাখী দম্পতি কানাডার টরন্টোতে থাকেন। তার ভাই মিলন আছেন সিঙ্গাপুরে।

দুদক সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম মহানগরীর চকবাজার এলাকার বজলুর রহমানের ছেলে মিজানুর রহমান শাহীন। তিনি ২০০৯-১০ সালের দিকে ইস্পাত, শিপ ব্রেকিং ও আবাসন ব্যবসার নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তারা তিন ভাই মিশম্যাক গ্রুপের মালিক। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে তারা বড় অঙ্কের ঋণ নেন। সেটা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ২০১২ সালের পর অর্থঋণ আদালতে মামলা শুরু করে বিভিন্ন ব্যাংক। প্রথম দিকে তারা ঋণগুলো পুনঃতফসিল করে আরও ঋণ নেন। ওইসব টাকা কানাডা, দুবাই ও সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করে তারা অবশেষে আত্মগোপন করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি শাহীন ও মিলনের আটটি প্রতিষ্ঠানকে খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে-মিশম্যাক শিপ ব্রেকিং, ফয়জুন শিপ ব্রেকিং, বিআর স্টিল মিলস, মুহিব স্টিল অ্যান্ড শিপ রি-সাইক্লিং, এমআরএম এন্টারপ্রাইজ, এমআর শিপিং লাইনস, আহমেদ মোস্তফা স্টিল ইন্ডাস্ট্রি ও সানমার হোটেলস লিমিটেড। এসব কোম্পানি সিলভিয়া গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। তাদের সবচেয়ে বেশি ২৯৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ঋণ দিয়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংক। এছাড়া অগ্রণী ব্যাংক দিয়েছে ২২৩ কোটি ২০ লাখ, ব্যাংক এশিয়া ১৫১ কোটি ৩৭ লাখ, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ৮৫ কোটি ৫৭ লাখ, ইস্টার্ন ব্যাংক ৪৮ কোটি, প্রিমিয়ার ব্যাংক ৪৭ কোটি ৭ লাখ, ঢাকা ব্যাংক ২৩ কোটি ৪৫ লাখ, শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংক ৭ কোটি ২০ লাখ ও যমুনা ব্যাংক দিয়েছে ৫ কোটি ১১ লাখ টাকা।

দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, পর্যাপ্ত জামানত ছাড়া বেআইনিভাবে তাদের ঋণ দিয়ে সহায়তা করেন মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চট্টগ্রাম শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক নন্দ দুলাল ভট্টাচার্য। শাহীন ও নন্দ দুলাল ভট্টাচার্য পরস্পর যোগসাজশে নিজেরা লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে প্রতারণা, জালিয়াতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে ঋণের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচার করেছেন। ঋণ আত্মসাতের প্রক্রিয়ায় নন্দ দুলাল ভট্টাচার্য গ্রাহককে প্রয়োজনীয় জামানত ছাড়া অনুমোদনের পূর্বে ঋণপত্র খুলে ও জামানতকৃত সম্পত্তির অতিরিক্ত মূল্যায়ন দেখিয়ে ঋণ দেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, মিশম্যাক শিপ ব্রেকিং ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক শাহীন স্ক্র্যাপ জাহাজ আমদানি ব্যবসার আড়ালে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ করে সব টাকা দেশের বাইরে পাচার করেন। পরবর্তী সময়ে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে পাচার করা অর্থের একটি অংশ তার স্ত্রী কামরুন নাহার সাখীর নামে বাংলাদেশে পাঠিয়ে এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার কিনেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন পরিদর্শনে ব্যাংকটিতে ৬৩ কোটি ৭১ লাখ টাকার বেনামি শেয়ার ও ৭৫০ কোটি টাকার ঋণে গুরুতর অনিয়মের তথ্য মেলে। শাহীন তার স্ত্রীর নামে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকে ১ কোটি ৩৩ লাখ ৪ হাজার ৮০০টি শেয়ার কেনেন। এসব অর্থ আসে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের গুলশান শাখায় সাখীর নামে খোলা একটি বৈদেশিক হিসাব থেকে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের নামে হস্তান্তরের মাধ্যমে এসব শেয়ার কেনা হয়।



আরো খবর: