উখিয়া-টেকনাফের ৩৩ টি ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে প্রায় ৫ লক্ষাধিক শিশুর শিক্ষা অধিকার নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে চার হাজার স্থানীয় শিক্ষক কাজ করছেন।
মাত্র ১৪ হাজার ৬ শত টাকা বেতনে চাকরি করে জ্ঞানের বাতি ছড়ানো এসব শিক্ষকদের করতে হচ্ছে মানবেতর জীবন যাপন, ক্যাম্পের যাতায়াত সহ নানা প্রতিবন্ধকতা জয় করে দিতে হয় পাঠদান।
সম্প্রতি যাদের মাত্র ৯০০ টাকা বৃদ্ধির বিপরীতে রোহিঙ্গা শিক্ষকদের বেড়েছে ৫০০০ টাকা, এমন বৈষম্যের শিকার হয়ে এবার চার দফা দাবীতে আন্দোলনে নেমেছেন তারা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই উখিয়া সদরের রাজপথ ভারী হয়ে উঠে “আমাদের দাবী মানতে হবে” স্লোগানে, প্রায় ৫ ঘন্টার মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি শেষ হয় উখিয়া উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে গিয়ে।
যেখানে দুভোর্গ থেকে শান্তিপূর্ণ পরিত্রাণ পেতে উচ্চারিত হয় -সর্বনিম্ন বেতন ২২ হাজার ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা, শিক্ষিকাদের মাতৃত্বকালিন ছুটি’র পাশাপাশি ভাতা প্রদান, ক্লাস্টার সিস্টেম বাতিল সহ বিনা কারণে ছাটাই না করা এবং প্রতি বছরে ২টি উৎসব ভাতা প্রদান করার যৌক্তিক দাবী।
দাবী না মানলে কর্মবিরতি অব্যাহত রাখা সহ রবিবার থেকে লাগাতার কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন আন্দোলনকারীরা।
জাগরণী চক্র ফাউন্ডেশন (জেসিএফ) পরিচালিত একটি শিখন কেন্দ্রের (লার্নিং সেন্টার) শিক্ষক মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ” আমাদের আর্তনাদ কেউ শুনছে না, অনেক কষ্টে জীবন কাটছে। আমরা চাই দাবীগুলো দ্রুতই মেনে নেওয়া হোক।”
মুক্তি কক্সবাজারের শিক্ষিকা তানিয়া আক্তারের কন্ঠেও একই অভিব্যক্তি। তিনি জানান,”মাতৃকালীন ছুটি নারী কর্মজীবীদের অধিকার, অথচ আমরা যেটি থেকে বঞ্চিত”।
এসময় রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মী সহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ কেও সংহতি প্রকাশ করতে দেখা যায়।
রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব সাদমান জামী চৌধুরী বলেন, ” রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চাকুরিতে স্থানীয়দের অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ। বৈষম্য অব্যাহত থাকলে জনগণ তা শক্ত হাতে প্রতিরোধ করে নায্যতা নিশ্চিত করবে।”
উত্থাপিত দাবীগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগতি করার আশ্বাস দেন উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেন।