সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২২ অপরাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

রিজার্ভ গণনা ছাড়া আইএমএফের শর্ত বাস্তবায়ন করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: বুধবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৩


ঢাকা, ২৫ এপ্রিল – আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের শর্ত হিসাবে জুড়ে দেওয়া সংস্কারের অগ্রগতি প্রতিনিধি দলের কাছে তুলে ধরেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

দাতা সংস্থাটির আরোপিত নিট আন্তর্জাতিক রিজার্ভ (এনআইআর) গণনা পদ্ধতি ছাড়া অন্যান্য শর্ত জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকর গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আইএমএফের প্রতিনিধি দলের সদস্যদের সংস্কার সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

বৈঠক সূত্রে এসব জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দিনভর খণ্ড খণ্ড বৈঠক করে ঢাকা সফররত আইএমএফ প্রতিনিধি দল। বৈঠকগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, আবু ফরহা মো. নাছের ও বিভিন্ন বিভাগের নির্বাহী পরিচালক, পরিচালক এবং টিম সদস্যরা অংশ নেন।

সূত্র জানায়, আইএমএফের সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে সুদের হারের সীমা তুলে দেওয়া, ডলারের একক রেট নির্ধারণ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মুদ্রানীতির ভূমিকা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, জ্বালানিতে ভর্তুকি কর্তন, ঋণের যথাযথ ব্যবহার, খেলাপি হ্রাস, ব্যাংকের পরিদর্শন পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে ঝুঁকিভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করা, ঋণ বিতরণে স্বচ্ছতা আনা এবং এসব প্রতিষ্ঠানের পর্ষদের ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ব্যাংক কোম্পানি আইন সংস্কার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে বাস্তবায়নে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর রউফ তালুকদার।

আর আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতিতে রিজার্ভ গণনার (এনআইআর) প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং এটা বাস্তবায়নে অতিরিক্ত সময় লাগতে পারে বলে জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া এক বৈঠকে আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের ১ম কিস্তির ঋণের অর্থের ব্যবহার, জিডিপি, অর্থনীতির ব্যবস্থাপনা অগ্রগতি আইএমএফের সামনে তুলে ধরা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব প্রয়োজনে কিছু রিফর্ম (সংস্কার) নিয়ে কাজ করছি। বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার একাধিক রেট একটিতে নিয়ে আসা, সুদহার বাজারমুখী করা ও রিজার্ভ হিসাব আইএমএফ-এর বিপিএম৬ পদ্ধতিতে করার বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি। রিজার্ভ হিসাবে আমাদের গ্রস হিসাবটিও থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘আইএমএফের স্টাফ ভিজিট একটি নিয়মিত কাজ। সদস্য সব রাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির আলোকে সংস্থাটি সংস্কার নিয়ে বৈঠকের মাধ্যমে নিয়মিত তদারকি করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অর্থনৈতিক সূচকগুলোর হালনাগাদ তথ্য নিয়ে আলোচনা করেন তারা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে অগ্রগতি অর্জন সম্ভব হবে বলে জানানো হয়েছে।

বৈশ্বিক সংকটের কারণে দেশের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভে চাপ তৈরি হওয়া ও বাজেট বাস্তবায়নসহ অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফেরাতে গত বছর আইএমএফের কাছে ঋণের আবেদন করে বাংলাদেশ।

ফেব্রুয়ারিতে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের মধ্যে প্রথম কিস্তিতে ৪৭ কোটি ৬২ লাখ ডলার পাওয়ার আগে ও পরে আইএমএফের পরামর্শ অনুযায়ী বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়িয়ে ভর্তুকি কমানোসহ আর্থিক খাতের কাঠামো ও নীতি সংস্কারে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া শুরু করে বাংলাদেশ।

সংস্থাটির কাছ থেকে ঋণ নিতে চুক্তির সময় বাংলাদেশ এসব বিষয়ে সংস্কারের বিষয়ে সম্মতি দিয়েছিল।

আগামী অক্টোবর মাসে দ্বিতীয় কিস্তি ছাড় ও অগ্রগতি মূল্যায়নের জন্য আইএমএফ মিশন আসবে ঢাকায়। তার আগে নিয়মিত সফরের অংশ হিসেবে স্টাফ ভিজিটে আসে সংস্থার কয়েকজন প্রতিনিধি।

নিয়মিত এ সফরের তথ্য নেয়ার পাশাপাশি ঋণের অর্থ ব্যবহার ও পরিশোধে বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির সংশ্লিষ্ট সূচকের মধ্যে প্রকৃত রিজার্ভ, রেমিট্যান্স প্রবাহ, সুদহার, বিনিময় হার, মূল্যস্ফীতি অবস্থান, সরকারের রাজস্ব আদায় পরিস্থিতি ও ব্যাংক ঋণ, বাণিজ্য ও চলতি হিসাবের ঘাটতি ইত্যাদি হালনাগাদ তথ্য জেনে নিচ্ছে আইএমএফ।

আলোচনার সূচিতে প্রাধান্য পেয়েছে আর্থিক খাতের সংস্কার, বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন ও আইনি ক্ষমতার ব্যবহার, নতুন নীতি বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ।

সূত্র: দেশ রূপান্তর
আইএ/ ২৫ এপ্রিল ২০২৩


আরো খবর: