জেরুজালেম, ২৯ নভেম্বর – অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের সাথে আরও চারদিনের যুদ্ধবিরতির আগ্রহ প্রকাশ করেছে হামাস। বুধবার গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধবিরতিতে হামাসের আগ্রহের এই তথ্য জানিয়েছে।
ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুই দফার যুদ্ধবিরতি গাজায় জিম্মি করে রাখা বন্দীদের বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগারে আটক ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এই সময়ে উপত্যকায় মানবিক ত্রাণ সহায়তাবাহী শত শত ট্রাক প্রবেশ করেছে।
এর আগে, গত শুক্রবার হামাসের সাথে ইসরায়েলের মাঝে প্রথম দফায় চারদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বাস্তবায়ন শুরু হয়। পরে চুক্তির শেষ দিনে তা আরও দুদিনের জন্য বৃদ্ধি করা হয়। দ্বিতীয় দফায় দুদিনের যুদ্ধবিরতির শেষ দিন চলছে বুধবার।
হামাসের ওই সূত্র এএফপিকে বলেছে, ‘‘হামাস মধ্যস্থতাকারীদের জানিয়েছে, তারা চলমান যুদ্ধবিরতি আরও চারদিনের জন্য বাড়ানোর বিষয়ে আগ্রহী। অতিরিক্ত যুদ্ধবিরতির শর্ত বিদ্যমান চুক্তির মতোই থাকবে। এই সময় গাজায় বন্দী করে রাখা জিম্মিদের মুক্তি দেবে হামাস। আর এর বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের মুক্তি দিতে হবে।’’
গত শুক্রবার চুক্তির বাস্তবায়ন শুরু হওয়ার পর থেকে সোমবার পর্যন্ত হামাস ইসরায়েলি ৫০ জিম্মিকে ছেড়ে দিয়েছে; যাদের মধ্যে ৩০ শিশু ও ২০ নারী রয়েছেন। এছাড়াও রাশিয়ার এক, থাইল্যান্ডের ১৭ ও ফিলিপাইনের এক নাগরিককে মুক্তি দিয়েছে হামাস। জিম্মিদের বিনিময়ে ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী ১৫০ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল।
অতিরিক্ত দুদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় মঙ্গলবার ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ৩০ ফিলিস্তিনি। একই দিন গাজা থেকে আরও ১২ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। মুক্তিপ্রাপ্তদের ১০ জন ইসরায়েলি এবং দু’জন বিদেশি নাগরিক।
এর আগে, ইসরায়েলি এক কর্মকর্তা ইসরায়েলের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, তারা প্রতিবার অতিরিক্ত ১০ জিম্মিকে মুক্ত করার জন্য অতিরিক্ত একদিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি আছে। আর মুক্তি পাওয়া জিম্মির বিপরীতে একই সময়ে ইসরায়েলি কারাগারে বন্দী ৩০ জন ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল। যুদ্ধবিরতি চুক্তি মোট ১০ দিন করার কথা ভাবছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি ভূখণ্ডে হামলার প্রতিশোধে গাজার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসকে ধ্বংস করার অঙ্গীকার করে গত ৭ অক্টোবর উপত্যকায় হামলা শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। একই দিন ইসরায়েল থেকে ধরে নিয়ে গাজায় ২৪০ জনকে জিম্মি করে রাখে হামাস। ইসরায়েলি হামলায় গাজা উপত্যকায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে। আর হামাসের হামলায় ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন এক হাজার ২০০ জন; যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
সূত্র: ঢাকা পোস্ট
আইএ/ ২৯ নভেম্বর ২০২৩