এম জিয়াবুল হক, চকরিয়া::
পাকিস্তান সরকার আমলে বিমান বাহিনীর মতো সরকারি গুরুত্বপুর্ণ একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরীতে কর্মরত ছিলেন ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদ। সেই তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আর্দশে অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর আহবানে উজ্জেবিত হয়ে ১৯৬৭ সালে সরকারি চাকুরী নামক সোনার হরিণ ছেঁেড় দিয়ে দেশ মাতৃকার টানে স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে অংশ নেন।
সরকারি চাকুরী ছেঁেড় দিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনার আলোকে তিনি প্রথমে মাতৃভুমি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় এসে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করার জন্য কাজ শুরু করেন। এরই অংশহিসেবে ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদ ১৯৬৭ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ জাতির পিতার ঐতিহাসিক ভাষনের মধ্যদিয়ে তিনি দেশ মাতৃকার টানে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশনেয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করেন। এরই ফলশ্র“তিতে সেসময় চকরিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থাপিত মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদ।
মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদের জন্মভুমি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার সাহারাবিল ইউনিয়নের মাদারাসাপাড়া (সাহারবিল আনোয়ারুল ফাজিল মাদরাসা) গ্রামে। তার বাবার নাম মরহুম আমির হোসেন। ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদ ১৯৭১ সাল থেকে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত চকরিয়া উপজেলার বৃহত্তর ফাসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। একইসঙ্গে তিনি ১৯৭৫ সাল থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭১ সালে চকরিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন সীমাবদ্ধ রাখেননি ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদ। একইসঙ্গে তিনি সর্তীথদের সঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে সম্মুখ প্রতিরোধ যুদ্ধ করেছেন চকরিয়া লামা মহেশখালী ও চট্টগ্রামের কালুরঘাট এলাকায়।
ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদ ছাড়াও ১৯৭১ সালের সেই মহান মুক্তিযুদ্ধে তাঁর পরিবার সদস্যরা বিভিন্নভাবে অংশ নিয়েছিলেন। বিশেষ করে চকরিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে প্রশিক্ষন কালীণসময়ে স্বামী ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদকে যেমন শাররীক ও মানসিকভাবে সহযোগিতা ও উৎসাহ দিয়েছেন তাঁর সহধর্মীনি মনোয়ার জাহান, তেমনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এলাকায় পাকিস্তানি সৈন্যদের উপস্থিতি, অত্যাচার নির্যাতন ও তাদের দোসরা কে কোথায় যাচ্ছেন তাঁর খবরা-খবর নিয়মিত দিয়েছেন স্বামী ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদ ও সর্তীথ মুক্তিযুদ্ধাদেরকে।
বাবা ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদ ও গর্ভধারিণী মাতা মনোয়ার জাহানের মতো দেশ মাতৃকার টানে উজ্জেবিত হয়ে সেইদিন মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তাদের দুই ছেলে সেই ১৯৭১ সালের টগবগে যুবক মোহাম্মদ জাহাংগীর ও এসএম আলমগীর। তাদের মধ্যে মোহাম্মদ জাহাংগীর বাবার সঙ্গে চকরিয়া লামা মহেশখালী ও চট্টগ্রামের কালুঘাট এলাকার পাকিস্তানী সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। পাশাপাশি তিনি বৃহত্তর চকরিয়া উপজেলা জয়বাংলা বাহিনীর সংগঠক হিসেবে সেসময়ে স্বাধীনতাকামী বাঙ্গালী পরিবারের পাশে থেকে সার্বিক সহযোগিতাও করেছেন। সেইসময় বৃহত্তর চকরিয়া উপজেলা জয়বাংলা বাহিনীর প্রধান ছিলেন সাংবাদিক এসএম সিরাজুল হক।
আর ছোট ছেলে এসএম আলমগীর মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন চট্টগ্রামের পাহাড়তলী, উত্তর পাহাড়তলী এলাকায়। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দুই সহোদর মোহাম্মদ জাহাংগীর ও এসএম আলমগীর পরিবার নিয়ে সংসার পাতেন চট্টগ্রামের উত্তর পাহাড়তলী এলাকায়। আওয়ামী ঘরনার এই পরিবারটি পর্যায়ক্রমে উত্তর পাহাড়দলী এলাকায় হয়ে উঠে সাধারণ মানুষের মাঝে আস্থার ঠিকানা। এরই বদৌলতে ২০০১ সালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরশেন নির্বাচনে উত্তর পাহাড়তলী (৯নং ওয়ার্ড) থেকে বিপুল ভোটে কমিশনার নির্বাচিত হন এসএম আলমগীর। এছাড়া ২০০৫ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত টানা ১৫বছর ধরে উত্তর পাহাড়তলী (৯নং ওয়ার্ড) আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ২০২০ সালে মরণঘাতি ভাইরাস করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক এসএম আলমগীর।
নিখাদ আওয়ামী ঘরণার একটি পরিবার, আবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে উজ্জেবিত হয়ে দেশ মাতৃকার টানে পরিবারের সবাই একসঙ্গে অংশ নিয়েছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। ৯ মাসের দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী লড়াই সংগ্রামের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেছে একান্নটি বছর। মুক্তিযুদ্ধের প্রতি পরম আস্থাশীল স্বাধীনতার স্বপক্ষের রাজনৈতিক সংগঠক আওয়ামী লীগ এখন টানা রাষ্ট্র ক্ষমতায়। গেল ৫১ বছরে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হয়েছে। কিন্তু বারবার আবেদন নিবেদন করেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতিটা পাচ্ছে না সেই আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামি ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদ ও তাঁর পরিবার সদস্যরা। স¤প্রতি চকরিয়া প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি না পাওয়া প্রয়াত বাবা ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদ এবং পরিবারের অভিযোগ অনুরাগ ও বঞ্চনার কথাগুলো তুলে ধরেছেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মোহাম্মদ জাহাংগীর।
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক মোহাম্মদ জাহাংগীর (৭৩) বলেন, পাকিস্তান সরকার আমলে নৌ বাহিনীর মতো সরকারি গুরুত্বপুর্ণ একটি প্রতিষ্ঠানে চাকুরীতে কর্মরত ছিলেন আমার বাবা ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদ। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আর্দশে অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর আহবানে উজ্জেবিত হয়ে ১৯৬৭ সালে সরকারি চাকুরী নামক সোনার হরিণ ছেঁেড় দিয়ে দেশ মাতৃকার টানে স্বাধীন বাংলাদেশ গড়ার সংগ্রামে অংশ নেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশনার আলোকে তিনি প্রথমে মাতৃভুমি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় এসে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করার জন্য কাজ শুরু করেন। এরই অংশহিসেবে ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদ ১৯৬৭ থেকে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ জাতির পিতার ঐতিহাসিক ভাষনের মধ্যদিয়ে তিনি দেশ মাতৃকার টানে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশনেয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করেন।
এরই ফলশ্র“তিতে সেসময় চকরিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থাপিত মুক্তিযোদ্ধা প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদ। প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন সীমাবদ্ধ রাখেননি তিনি, একইসঙ্গে সর্তীথদের সঙ্গে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে পাকিস্তানি সৈন্যদের বিরুদ্ধে সম্মুখ প্রতিরোধ যুদ্ধ করেছেন চকরিয়া লামা মহেশখালী ও চট্টগ্রামের কালুরঘাট এলাকায়। তার আগে তিনি ১৯৬২ সালে পাকিস্তান সরকারের ইংরেজী শিক্ষা কমিশন ও ১৯৬৬ সালে ৬দফা আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকাও পালন করেন। সেইসময় পাকিস্তানের সামরিক সরকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে এক নম্বর আসামি করে স্বাধীনতাকামী এক হাজার থেকে বারোশত মানুষের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র নামক একটি মামলা করেছিলেন। পরে চুড়ান্তপর্যায়ে ৩৫জনকে আসামি রাখা হয়। ওই মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন আমার বাবা ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদ।
মোহাম্মদ জাহাংগীর আরও বলেন, বাবা ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদ ছাড়াও মহান মুক্তিযুদ্ধে আমার পরিবার সদস্যরা বিভিন্নভাবে অংশ নিয়েছিলেন। বিশেষ করে চকরিয়া সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে প্রশিক্ষন কালীণসময়ে স্বামী ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদকে যেমন শাররীক ও মানসিকভাবে সহযোগিতা ও উৎসাহ দিয়েছেন তাঁর সহধর্মীনি মনোয়ার জাহান, তেমনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এলাকায় পাকিস্তানি সৈন্যদের উপস্থিতি, অত্যাচার নির্যাতন ও তাদের দোসরা কে কোথায় যাচ্ছেন তাঁর খবরা-খবর নিয়মিত দিয়েছেন স্বামী ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদ ও সর্তীথ মুক্তিযুদ্ধাদেরকে।
বাবা-মায়ের পথ ধরে সেইসময় দেশ মাতৃকার টানে উজ্জেবিত হয়ে লেখাপড়া গুটিয়ে রেখে আমি এবং আমার ছোট ভাই এসএম আলমগীর মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম। ১৯৭১ সালে আমরা ছিলাম টগবগে যুবক। আমি বাবার সঙ্গে চকরিয়া লামা মহেশখালী ও চট্টগ্রামের কালুঘাট এলাকার পাকিস্তানী সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। পাশাপাশি বৃহত্তর চকরিয়া উপজেলা জয়বাংলা বাহিনীর সংগঠক হিসেবে সেসময়ে স্বাধীনতাকামী বাঙ্গালী পরিবারের পাশে থেকে সার্বিক সহযোগিতা দিয়েছি। সেইসময় বৃহত্তর চকরিয়া উপজেলা জয়বাংলা বাহিনীর প্রধান ছিলেন সাংবাদিক এসএম সিরাজুল হক।
আর আমার ছোটভাই এসএম আলমগীর মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন চট্টগ্রামের পাহাড়তলী, উত্তর পাহাড়তলী এলাকায়। ১৯৭১ সালের মে মাসে আমারদের গ্রামের বাড়িতে পাকিস্তানী সৈন্যরা তাদের দোসরদের মাধ্যমে সীমাহীন নির্যাতন নিপীড়িন চালিয়েছে। পরিবারের পুরুষ সদস্যরা যুদ্ধকালীন সময়ে বাইরে থাকায় বাড়িতে নারী সদস্যদের উপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন করতো হানাদার বাহিনীর সদস্যরা। এমনকি বাড়ির অদুরে টিউবওয়েল থেকে পুরো গ্রামের মানুষের খাবার পানি সংগ্রহও বন্ধ করে দিয়েছিলো পাকিস্তানী সৈন্যরা। এসময় প্রতিবাদ করতে গিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে আমার বাবাকে আটক করে পাকিস্তানী সৈন্যরা। পরে রাষ্ট্রদ্রোহি মামলায় তিনি প্রায় তিনমাস কারাভোগ করেন। তিনি ১৯৮৮ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
মোহাম্মদ জাহাংগীর বলেন, আমার বাবা ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদ ও আমার পরিবার দেশমাতৃকার টানে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে স্বাধীনতার পক্ষে বলিষ্ঠ ভুমিকা থাকলেও আমরা কোনদিন মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি নিয়ে চিন্তা করেনি। আমাদের চাওয়া ছিল বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করুক। তাতে আমরা বাবা খুশি। মারা যাবার পর ২০১৪ সালে বাবা ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদ ও আমার (মোহাম্মদ জাহাংগীর) নামে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেতে অনলাইনে প্রথম আবেদন করি বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ কাউন্সিল (জামুকা) কার্যালয়ে।
পরে ২০১৭ সালে জামুকার চুড়ান্ত তালিকায় আমার বাবা ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদের নাম নথিভুক্ত করা হলেও আমাকে বাদ দেওয়া হয়। এ নিয়ে আমি আপীল করেছি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে। বিষয়টি এখনো নিস্পত্তি হয়নি সেখানে। এরই মধ্যে ২০২১ সালে পুনরায় উপজেলা ভিত্তিক মুক্তিযোদ্ধা যাছাই বাছাই করা হয়। ওইবছরের ২৩,২৪ ও ২৫ আগস্ট চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরে বাছাই অনুষ্ঠিত হয়।
বাছাই শেষে তৎকালীন চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ সামসুল তাবরীজ চকরিয়া থেকে বাছাইকৃত মুক্তিযোদ্ধার দুইটি তালিকা প্রেরণ করেন উর্ধ্বতন দপ্তরে। তদমধ্যে সর্বসম্মতিক্রমে ২৩ জনের ও পরস্পর বিরোধী মতামতে ১৩ জনের মিলিয়ে মোট ৩৬ জনের নতুন প্রস্তাব পাঠানো দুইটি তালিকায় আমার বাবার নাম থাকলেও এখনো তা গেজেটভুক্ত হয়নি। এখন আমার পরিবারের একটাই চাওয়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) এর কাছে আমার প্রয়াত বাবা ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদকে মৃত্যুর পর হলেও মুক্তিযোদ্ধার একটি স্বীকৃতি দিন।
বিষয়টি প্রসঙ্গে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জেপি দেওয়ান বলেন, দেশমাতৃকার টানে যিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন, দেশকে পরাধীনতার শৃঙ্খলমুক্ত করেছেন, সেইধরণের প্রতিভার অধিকারী ব্যক্তি মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি না পাওয়ার বিষয়টি খুবই দু:খজনক। তিনি বলেন, ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির আহমদের পরিবারকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলুন। মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে যেসব ডকুমেন্ট তাদের কাছে রক্ষিত আছে দেখি এগুলো পর্যালোচনা করে উর্ধ্বতন প্রশাসনে পাঠাবো। এব্যাপারে আমার পক্ষথেকে ফ্লাইট সার্জেন্ট জমির উদ্দিন আহমদের পরিবারকে সবধরণের সহযোগিতা দেওয়া হবে। ##