★ গুলশান আক্তার ★
নানান রঙের খেলাধুলার মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের নৈতিকতা শিক্ষার বিকশিত হয়।এতে উৎসাহিত হয় ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা। বাড়ে সচেতনতা, স্বপ্ন দেখে ভবিষ্যৎ গড়ার। বিদ্যালয়ের নির্ধারিত পড়ালেখার পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের আরো উৎসাহিত করতে খেলাধুলার এ কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
খেলাধুলা একদিকে শিশুর শারীরিক বিকােশ ভূমিকা রাখে অপরদিকে মানসিক ও নৈতিকতা বিকাশে ও সহায়তা করে। বিভিন্ন রঙের মিশ্রণে তৈরি উপকরণ দ্বারা খেলার সামগ্রী শিশুর মনকে রাঙ্গিয়ে তুলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ জুড়ে উৎফুল্ল আবেগে সাজে শিক্ষার্থীরা। বিভিন্ন রংয়ে শিশুর মনকে ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্নকে জাগিয়ে তুলে। গ্রুপে ভাগ করে হাতে-কলমে শেখানো খেলা একত্রে থাকার ও যেকোনো কাজে অন্যকে সহযোগিতা ও নিজের উপকারিতার শিক্ষা লাভ করে। হাতে-কলমে শেখানো কালার বল গেম,আমি হতে চাই, নৈতিক শিক্ষার গণপরিবহন, কল্পনায় গল্প বলি, স্বপ্নপুরী, পাজল গেম, স্বপ্ন হাসি, মাদককে না বলি, বাল্যবিবাহ কে না বলি সহ এসব ব্যতিক্রমী খেলার মাধ্যমে শিক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীরা বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা লাভ করে। এতে অভিভাবকগণ ও খুব খুশি হয়।
খেলাধূলা সমাজের সুবিধাবঞ্চিত, চরাঞ্চল, উপকূলীয় ও সীমান্তবর্তী শিশু শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ গঠনে ভূমিকা রাখে। খেলাধূলার কাজে সম্পৃক্ত হতে পেরে শিশুরা নিজেদেরকে গর্বিত একজন মনে মনে করে। কেননা এতে শিক্ষার্থীরা তাদের সুন্দর ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে বেড়ে উঠতে পারে। খেলাধুলার উপকরণ এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন রং চিনতে পারে।ঘুড়ি, নৌকা,মাছ,বিভিন্ন ফুল,ফলসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিস বানানো শিখে। যেগুলো আগে কখনো তারা শিখেনি।ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে বুঝতে পারে। মাদককে কিভাবে না বলতে হবে সেটা শিখে এবং মাদকের ধর্মীয় ও সামাজিক কুফল সম্পর্কে জানতে পারে। বাল্য বিয়ে ও যৌন হয়রানির বিষয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করে।পাশাপাশি তারা লেখাপড়া শেষ করা করে কি হতে চায় সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত কিভাবে নিতে হয় সেই অভিজ্ঞতা অর্জন করে।
এসব খেলাধুলায় শিশুদের অংশগ্রহণের ফলে শিক্ষার্থীদের আনন্দ ও নৈতিক শিক্ষার বিকাশ শিক্ষকগণও অভিভাবকগণ উৎসাহিত হন। এতে শিক্ষার্থীদের পড়া লেখার উৎসাহ আরো বেড়ে যায়। শিক্ষার্থীদের পাঠদান এর সাথে খেলাধূলা সম্পৃক্ত হওয়ায় এতে তারা ব্যাপক উৎসাহে অংশ নিয়ে নৈতিকতা সহ বিভিন্ন বিষয় বুঝতে পারে। তাদের লেখাপড়ার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আরো বেশি ধারণা লাভ করে।
প্রতিটি বিদ্যালয় এধরনের খেলাধুলার মাধ্যমে উপকৃত হতে পারে। মাদককে না’ বলা গেম এর মাধ্যমে সীমান্তবর্তী যেসব শিশুদের মাদক বহনের কাজে ব্যবহার করা হয় তাদের এসব কাজ থেকে বিরত রাখতে এসব খেলাধুলার বিকল্প নেই। চরাঞ্চলের শিশুরা যারা মাছ ধরা বা কৃষিকাজে ও গৃহস্থালির কাজে নিয়োজিত থাকে বিদ্যালয় হতে ঝরে পড়ে সেটি রোধ করতেও খেলাধুলার ভূমিকা রাখে। এতে শিশুরা এসব কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখে এবং বিদ্যালয়ে আসতে উৎসাহিত হয়। অভিভাবকগণ ও দেখে তার সন্তান কাজের চেয়ে বিদ্যালয়ে আসতে আগ্রহী এবং বিদ্যালয় থেকে বিভিন্ন ধরনের নৈতিক শিক্ষা গ্রহণ করে তার বাড়িতে ও সমাজে ব্যবহার করছে।
ফলে অভিভাবক ও জনগণ এতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে তাদের সন্তানরা নৈতিক শিক্ষার পাশাপাশি ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে মানুষ হয়ে উঠতে পারে।যা মান সম্মত প্রাথিক শিক্ষায় গুরুত্বপূড়ণ ভূমিকা রাখবে বলে প্রতযাশা,করা যায়।
লেখক
গুলশান আক্তার
উপজেলা শিক্ষা অফিসার
উখিয়া,কক্সবাজার।