গাজী মোহাম্মদ আবু তাহের মহেশখালী::
দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রনব চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশের একাধিক ইউনিট উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের বারঘর পাড়ার পাহাড়ী এলাকায় রাতে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে পাহাড়ের মাটি ভর্তি ৫ টি ডাম্পার জব্দ করেছে মহেশখালী থানা পুলিশ
এসময় পুলিশের উপস্থিত টের পেয়ে পাহাড় খেকোর মূলহোতা ও ডাম্পার চালক পালিয়ে যায়।
শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ০৯.৩০ টার দিকে মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রনব চৌধুরীর নেতৃত্বে এস আই আবু বক্কর, এস আই বাপ্পি সরদার,এস আই সজল কান্তি নাথ,এএসআই জসিম,এএসআই ইলিয়াস ও সঙ্গী ফোর্স সহ পুলিশের একাধিক ইউনিট হোয়ানক ইউনিয়নের বারঘর পাড়ার পাহাড়ী এলাকায় দীর্ঘ ৬ ঘন্টা ব্যাপি সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করেন।
মহেশখালী থানা সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে মাটি ভর্তি ৫ টি ডাম্পার গাড়ি জব্দ ও মাটি কাটার সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
এসময় ঘটনাস্থল থেকে কাউকে আটক করা যায়নি। পাহাড় কাটাসহ অপরাধ দমনে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। আটককৃত ডাম্পার গাড়ীর মালিক স্বাপন পাল ও জাহেদ সিকদার বলে সূত্রে জানা গেছে।
এস আই সজল কান্তি নাথ বাদী হয়ে পাহাড় কাটার সাথে সম্পর্কিত এবং আটককৃত ৫ ডাম্পার সংক্রান্তে চারজনকে এজাহারনামীয় এবং অজ্ঞাত নামা আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে মহেশখালী থানায় নিয়মিত মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।
মামলা নং ৯ তারিখ ১৫/৯/২০২২ ধারা পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ এর ১৫ এবং বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ১৫ ধারা।
এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন, ছোট মহেশখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মৃত শামসুল ইসলামের পুত্র শ্রমিক লীগ নেতা জাহেদ সিকদার (৩০)। মহেশখালী পৌরসভার নতুন পালপাড়া এলাকার মৃত মাস্টার সুভাষ পালের পুত্র স্বপন পাল (৪৫)। ছোট মহেশখালী নলবিলা এলাকার আবুল হাশেম প্রকাশ সুইন্নার পুত্র সরওয়ার (৩৮)। হোয়ানক ইউনিয়নের পানির ছড়া জৈয়ারকাটা এলাকার মৃত রশিদ আলীর পুত্র সেলিম প্রকাশ সল্লু(৩০) সহ অজ্ঞাত নামা আরো অনেক জন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উক্ত পাহাড় খেকোদের মহেশখালী জুড়ে একটি বড় সিন্ডিকেট রয়েছে,তারা দীর্ঘদিন ধরে বনবিভাগের লোকদের ও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ’কে মাসোহারা দিয়ে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। ইতিপূর্বে পাহাড় খেকো সিন্ডিকেটের সদস্যরা ঐ এলাকায় একটি পাহাড় কেটে বন উজাড় করেছে। পাহাড় খেকো সিন্ডিকেট’টি জনপ্রতিনিধি ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের গুটিকয়েক নেতার ছত্রছায়ায় প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে এলাকার লোকজন প্রতিবাদ করার সাহস করেনা। তাদের সামনে পাহাড় ধ্বংসের চিত্র দেখে আসছে নীরবে।
মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রনব চৌধুরী বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার্থে পাহাড় ও বনায়ন রক্ষা করা সকলের দায়িত্ব ও কর্তব্য। যারা এসব ধ্বংসের কাজে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। এ ঘটনায় পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ এর ১৫ এবং বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ১৫ ধারায় জড়িত ৪ জন ও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উক্ত বিষয়ে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ ইয়াছিন বলেন, মহেশখালীর পাহাড় ও বন রক্ষায় সবাইকে সচেতন হতে হবে। পরিবেশ রক্ষা হলে সবাই নিরাপদ থাকবে। এসময় তিনি পাহাড় ও বন খেকোদের বিরুদ্ধে তথ্য দিয়ে প্রশাসনকে সহযোগিতা করার অনুরোধ জানান।