বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৪০ পূর্বাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

মহেশখালীতে বন বিভাগ কর্তৃক অবৈধ ভাবে টোল আদায়ের প্রতিবাদে মানবন্ধন অনুষ্টিত!

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১

গাজী মোহাম্মদ আবু তাহের মহেশখালী::

দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর কাকঁড়া ব্যবসায়ী সমিতির ব্যানারে এক বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধন ৩০শে ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলা পরিষদ চত্তরে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন- বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ী দ্বীপ অর্থনৈতিক সম্ভাবনাময়ী মহেশখালী উপজেলা। এ উপজেলার মাতারবাড়ী, ধলঘাটা, সোনাদিয়া, হোয়ানক, কালারমারছড়া, কুতুবজোম ও বড় মহেশখালী নিয়ে সরকার ব্যাপক উন্নয়নের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।

দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর জনবসতির ৫০ ভাগ মানুষ সাগরে মৎস্য আহরণ, চিংড়ী উৎপাদন, কাকঁড়া উৎপাদনসহ সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদ আহরণের মাধ্যমে জীবন জীবিকা নির্বাহ করে থাকি।

একদিকে এই এলাকার প্রান্তিক লবণ চাষীদের উৎপাদিত লবণ নায্যমূল্য বঞ্চিত। অপরদিকে সাধারণ মানুষের আয়ের উৎস হিসাবে লবণ ও চিংড়ী ঘেরের জমি সরকার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতাভুক্ত করায় অসংখ্যা মানুষ কর্ম হারিয়ে বেকারত্ব জীবন-যাপন করছে। এমনি মুহুর্তে মহেশখালী উপজেলার বিভিন্ন ব্যাক্তির মালিকানাধীন কাক*কা প্রজেক্ট রয়েছে।

তাদের হতে চুক্তি ভিত্তিক ঘের লাগিয়ত নিয়ে নিন্মোক্ত কাঁকড়া চাষীরা নিয়মিত চাষাবাদ করে আসতেছি। আমরা মহেশখালী দ্বীপের প্রায় ২০ হাজারের অধিক লোক বিভিন্ন চিংড়ী ঘের ও সামুদ্রিক জলাশয়ে কাকঁড়ার হ্যাচাড়ি ও ঘেরের মাধ্যমে কাকঁড়া উৎপাদন বিপনন ও সরবরাহ করে থাকি। মহেশখালী থেকে অন্তত ২০০টি কাকঁড়া ব্যবসায়ীদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আড়ত থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করে থাকে। যা সরকারের রাজস্ব খাতে অর্থনৈতিক যোগানে ব্যাপক ভূমিকা রাখে।

সরকারের বিভিন্ন দপ্তরও কাকঁড়া উৎপাদন ও বিপনন কাজে সংশ্লিষ্টদের আধুনিক প্রশিক্ষণ ও ঋণসহ প্রণোদনা দিয়ে আসছে। আমাদের কাকঁড়া বিভিন্ন জোন থেকে একত্রিত করে ছোট ছোট গাড়ী করে চকরিয়া হয়ে চট্টগ্রাম ও ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। বাণিজ্যিক কাকঁড়াগুলি সঠিক সময়ে গন্তব্যস্থানে পৌঁছে দেওয়া না হলে পচঁন ধরে ব্যবসায়ীদের ব্যপক ক্ষতি হয়। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, দেশের কোথাও সড়ক বা মহাসড়কে আমাদের কাকঁড়ার ঝুঁিড় কিংবা গাড়ী বা নৌকা কোন আইন শৃংঙ্খলা বাহিনী জব্দ কিংবা ধৃত করে না।

মহেশখালীর নদী চ্যানেল এ নৌকা, সড়ক ও উপসড়কে রিক্সা, টমটম, ট্রলি অথবা পিকআপে করে নিয়ে যাওয়ার সময় বনবিভাগের লোকজন বিভিন্ন অজুহাতে মোকামে মোকামে কাকঁড়া ভর্তি গাড়ী আটকিয়ে বিনা টোকেনে অর্থ দাবি আদায় করে থাকে। আমরা দরিদ্র, দিনমজুর, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী হিসাবে উক্ত চাদাঁ না দিয়ে ছাড় না পাওয়াতে সম্ভাবনা থাকা ব্যবসায়ীক ব্যাপক ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে কোন মতে প্রতি ঝুড়িতে ৩শ/৪শ/৫শ টাকা চাঁদা দিয়ে গাড়ী ছাড়িয়ে নিয়ে যেতে হয়। আর্থিক ক্ষতি ছাড়াও বন কর্মীরা আমাদের কাকঁড়ার ঝুঁড়ি আটকে রেখে মামলার ভয় দেখিয়ে নিজেদের ভোগের জন্য কাকঁড়া ও চাঁদা হিসাবে হাতিয়ে নেয়। আমরা অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ক্ষুদ্র এনজিওদের থেকে সাপ্তাহিক বা মাসিক ঋণ নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে থাকি।

সম্প্রতি গত ২৮ শে ডিসেম্বর আমাদের ব্যবসায়ীদের ১১ ঝুঁড়ি মুখবন্ধ কাকঁড়া একটি ছোট মিনি পিকআপে করে বড় মহেশখালী থেকে চকরিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। ১১টি ঝুঁড়িতে কম বেশী প্রায় ১ হাজার কেজি বানিজ্যিক সাইজের কাকঁড়া ভর্তি ছিল। আমাদের কাকঁড়া বহনকারী গাড়ীটি ইউনুছখালী বাজারে পৌছালে ঝাপুয়া বিটের বন কর্মীরা গাড়ীটি আটকে রেখে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।

আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীগন উক্ত দাবিকৃত চাঁদা দিতে অপরগতা করলে গাড়ীসহ ঝুঁড়ি গুলি আটক করে রাখে। ১১ ঝুঁড়িতে থাকা কাকঁড়ার পরিমাণ শুধু মাত্র ৩২ কেজি দেখিয়ে আদালতে উপস্থাপন করে। আমরা তাদের ভয়ে গাড়ী রেখে চলে আসলে উক্ত গাড়ী ও কাকঁড়া রাতের মধ্যে শাপলাপুর বিটে নিয়ে আসে। পরের দিন সকালে আমরা উক্ত কাকঁড়া ছাড়িয়ে নিতে গেলে দেখতে পায় প্রায় কাকঁড়ার ঝুঁড়ি ছুরি দিয়ে কেটে ছিদ্র করে কাকঁড়া নিয়ে নেয়। আমরা কাকঁড়া ব্যবসা বনবিভাগের এমন চাঁদাবাজি উৎকোচ থেকে পরিত্রাণ ও তদন্তপূর্বক অপরাধীদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনপূর্বক কাকঁড়া ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়ীক নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রশাসনের কাছে আশুহস্তক্ষেপ কামনা করছি। বক্তব্য রাখেন, উপজেলা কাঁকড়া ব্যবসায়ি সমিতির সভাপতি কালাচান, সাধারন সম্পাদক, রবিউল আলম, বাবুল, আব্দুল আজিজ, সেলিম, ফারুক, সাংবাদিক, আমিনুল হক, এসএম রুবেল, মাওলান্ াইউনুচ, যুবলীগ নেতা জিল্লুর রহমান মিন্টু, কষ্ট বেলাল, আবদুস সালাম বাঙ্গালী, নজরুল ইসলাম পুতু প্রমুখ। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে কাকঁড়া ব্যবসায়িরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত স্বারকলিপি প্রদান করেন।


আরো খবর: