জে,জাহেদ, মহেশখালী থেকে ফিরে::
কক্সবাজারের বিছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মহেশখালী। এ উপজেলার কুতুবজুম-ঘটিভাঙ্গার প্রধান সড়কটি যাত্রীদের জন্য বিষফোড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়কের প্রায় ৬ কিলোমিটার জুড়ে পিচঢালাই আর ইট-পাথর উঠে হাজার হাজার গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে এ সড়ক দিয়ে সিএনজি, অটো রিক্সাসহ যেকোন ইঞ্জিন চালিত গাড়ি চলা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। বিশ মিনিটের পথ পাড়ি দিয়ে যেতে আসতে সময় লাগে দেড় ঘণ্টা। কখনো কখনো গভীর গর্তে চাকা আটকে গিয়ে বিকল হয়ে পড়ে গাড়ি। সব মিলিয়ে এ সড়কে চলতে গিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়ে পথযাত্রীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ সড়ক দিয়ে কুতুবজুমের তাজিয়াকাটা, ঘটিভাঙ্গা ও সোনা দিয়াসহ বরদিয়ার ১০ হাজার মানুষ প্রতিদিন উপজেলা কিংবা হাটে বাজারে যাতায়াত করেন। কিন্তু খানাখন্দ আর গর্তের এ সড়কে গাড়ি চালাতে গিয়ে বিপাকে পড়ে চালকরা। নষ্ট হয় সময়, বাড়ছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। অনেকের মাজা ভাঙ্গে। রোগীরা হাসপাতালে যেতেও ভয় পান। এসব কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে স্থানীয় লোকজন ও পথচারীরা বলেছেন, এ লজ্জা জনগণের নয়, এ লজ্জা যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন সে সব জনপ্রতিনিধিদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, কুতুবজুমের মেহেরিয়া পাড়া থেকে ঘটিভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়ক বর্তমানে চলাচলের জন্য অযোগ্য। সড়কের প্রায় ৯০ শতাংশই ভাঙাচোরা। সড়ক দিয়ে গাড়ি চলে হেলেদুলে। এ সময় দেখলে মনে হবে যেন যাত্রীদের নিয়ে নাচানাচি করছে ব্যাটারী চালিত টমটম গাড়িগুলো। বেশ কয়েকটি স্থানের অবস্থা ভয়ংকর। এসব স্থানে গর্তের গভীরতা বেশি হওয়ায় প্রায়ই গাড়ির চাকা আটকে যায়।
সড়কে চলাচলকারী সিএনজি চালক সোনা মিয়া জানান, ভাঙাচোরা সড়ক হওয়ায় প্রতিদিন কোথাও না কোথাও দুর্ঘটনা ঘটছে। বড় বড় খাদে আটকে পড়ায় মাঝেমধ্যেই গাড়ি বিকল হয়ে যায়। অনেক সময় ভাঙা অংশ এলে যাত্রীরা ঝাঁকুনির ভয়ে গাড়ি থেকে নেমে যেতে চায়। টমটম চালক খালেক ও নাছির বলেন, ‘নয়া পাড়া তাজিয়াকাটা ও ঘটিভাঙ্গা সড়ক বেহাল। আমাদের গাড়িগুলো গর্তে পড়ে ঘন ঘন বিকল হয়ে যাচ্ছে। ধীরগতিতে চলার কারণে সময় নষ্ট হচ্ছে। বিভিন্ন স্থানে যানজট থাকায় যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়ছে। ’
সড়কটি সংস্কার হচ্ছে কী? না হবে এসব তথ্য জানতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শরীফ বাদশা ও কুতুবজোমের চেয়ারম্যান শেখ কামালকে একাধিকবার কল করা হলেও ফোন রিসিভ না করায় তাঁদের মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে মহেশখালী উপজেলা প্রকৌশলী সবুজ কুমার দে ও উপ সহকারী প্রকৌশ মোঃ আবুস উদ্দিন বলেন, ‘এরই মধ্যে ঘটিভাঙ্গা বেরিবাধ সড়কটির সংস্কার কাজ শুরু করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আনসার এন্টারপ্রাইজ। এখন কুতুবজুম টু ঘটিভাঙ্গা প্রধান সড়কটি ভেঙ্গে পড়েছে সেটা সত্য। অনেকদিন সংস্কার করা হয়নি। একবার টেন্ডার হয়ে ঠিকাদার নিয়োগ পেলেও নির্মাণসামগ্রীর দাম বাড়ায় সে ঠিকাদার ১০ লাখ টাকা লস দেখিয়ে কাজ না করে চলে গেছেন। এখন নতুন করে পুনরায় আবার টেন্ডার দেওয়া হচ্ছে। এক মাসের মধ্যে কাজের ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে কাজ শুরু করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: ইয়াছিন জানান, বিষয়টি আমি অবগত। সড়কটি বেয়ে ঘটিভাঙ্গা যাওয়া খুব কষ্টকর। দ্রুত সময়ে এ সড়কটি সংস্কারের জন্য উপজেলা এলজিইডি অফিসকে জানানো হয়েছে। দরপত্রের প্রক্রিয়া চলমান। আশা করা যায় খুব দ্রুত বিষয়টি সমাধান হবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহ্বাজ আশেক উল্লাহ রফিক এর মুঠোফোনে কল করা হলে অপর প্রান্ত থেকে মিটিং এ আছেন পরে কথা বলবেন বলে কেউ একজন জানান। পরে কল দিলেও ফোন রিসিভ করা হয়নি।