কক্সবাজারে পিকআপ চাপায় একসঙ্গে প্রাণ হারানো পাঁচ ভাইয়ের শ্রাদ্ধ সম্পন্ন হচ্ছে শুক্রবার। ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী এ কাজ করবে নিহতদের শিশুপুত্ররা। এ জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার ক্ষৌরকর্মাদি সম্পন্ন হয়।
একই সঙ্গে মহাশ্মশানে গিয়ে প্রতিটি চিতায় মাটি দিয়ে ভরানোর কাজ করে শিশুপুত্ররা। এ সময় সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য তৈরি হয়।
নিহতদের কাকা চিত্তরঞ্জন সুশীল বলেন, আমাদের সম্প্রদায়ের কোনো লোক মারা গেলে ১০ দিনের মাথায় ক্ষৌরকর্ম এবং পরদিন পারলৌকিক ক্রিয়ানুষ্ঠান করা হয়। সেই অনুযায়ী আমার বড় ভাই সুরেশ চন্দ্র শীলের পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে বুধবার। কিন্তু তার পাঁচ পুত্র গাড়িচাপায় নিহত হওয়ায় ধর্মীয় বিধান মতে চার দিনের মাথায় শুক্রবার পারলৌকিক ক্রিয়াদি সম্পন্ন করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে পাঁচ ভাইয়ের স্ত্রীরা কেঁদে কেঁদে বলেন, যে গাড়ির চালক আমাদের বিধবা করেছে, আমরা তার চেহারা দেখতে চাই। আমরা তার কঠিন শাস্তি চাই।
পরিচিত কোনো স্বজন দেখলেই কাঁদছেন নিহত পাঁচ ভাইয়ের মা মৃণালিনী শীল। স্বামী সুরেশ চন্দ্র শীলের মৃত্যুর ১০ দিনের মাথায় ছেলেরা একসঙ্গে প্রাণ হারানোর ঘটনায় তিনি শোকে মুহ্যমান। বাড়ির উঠানের এক পাশে সাদা কাপড়ে বসে থাকা মৃণালিনী বলেন, আমার তো সব শেষ হয়ে গেল। একে একে সব ছেলেকে কেড়ে নেয়া হলো। তাদের বউয়েরা অল্প বয়সে বিধবা হয়ে গেল। আরেক ছেলে এখনো জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। পা কেটে ফেলতে হলো আমার মেয়ে হীরার। আমাদের কী দোষ ছিল? এখন আমার নাতি-পুতিরা কিভাবে খেয়ে পড়ে বাঁচবে?
মঙ্গলবার ভোরে চকরিয়া উপজেলার মালুমঘাটে পিকআপ চাপায় একসঙ্গে পাঁচ ভাই নিহত এবং অন্য ভাই-বোন গুরুতর আহত হওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। ঘটনাস্থল মহাসড়কে হওয়ায় নিয়মানুযায়ী এই মামলার তদন্ত কার্যক্রম, আসামি গ্রেপ্তারসহ সার্বিক বিষয়ে দায়-দায়িত্ব হাইওয়ে পুলিশের।
চকরিয়া থানার ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী মামলাটি হাইওয়ে পুলিশ তদন্ত করলেও আসামি গ্রেফতারের বিষয়ে সার্বিক সহায়তা দেওয়া অব্যাহত রয়েছে। একই সঙ্গে র্যাব মাঠে তৎপর রয়েছে। আশা করছি, অতি দ্রুত চালক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জালে আটকা পড়বে।