নিজস্ব প্রতিবেদক: স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, বঙ্গবন্ধু তার সারা জীবনে জেল-জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন এবং লাঞ্ছনা সহ্য করেছেন কিন্তু বাঙালির অধিকার আদায়ে অন্যায়ের সাথে কোনো আপোষ করেননি।
রোববার বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অডিটোরিয়ামে স্থানীয় সরকার বিভাগ আয়োজিত মহান বিজয় দিবস-২০২১ উদযাপন উপলক্ষে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে জাতীয় সমৃদ্ধি অর্জন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালিকে পাকিস্তানের শাসন-শোষণ, জুলুম-অত্যাচার, নির্যাতন এবং সকল বৈষম্য থেকে মুক্তি দিয়ে তাদের অধিকার আদায়ে সারা জীবন ত্যাগ স্বীকার করেছেন। ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের মাধ্যমে পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। তিনি নিজে অত্যাচারিত, নির্যাতিত ও লাঞ্চিত হয়েছেন কিন্তু মানুষের অধিকার আদায়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েও কোনো আপোষ করেননি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে দেশ ২০০০ সালের মধ্যেই উন্নত দেশে পরিণত হতো। কিন্তু ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে মূলত বাংলাদেশের স্বপ্নকেই ধ্বংস করা হয়েছে। পাকিস্তানের প্রেতাত্মা এবং যারা ২৫ বছরের শাসন শোষণ করেছে তারা আবার দেশকে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। যত ষড়যন্ত্রই করা হোক না কেন ২০৪১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ উন্নত-সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় পরিণত হবে বলেও জানান তিনি।
পাকিস্তান, ভারত, নেপালসহ পার্শবতী অনেক দেশের তুলনায় আমাদের মাথাপিছু আয় বেশি উল্লেখ করে মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বিদ্যুৎ-গ্যাস, যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য, কৃষিসহ সকল খাতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাঙালি এখন আর ফকির-মিসকিনের জাতি নয়। সারা বিশ্বে বাংলাদেশ আজ মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত এবং উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, পদ্মা সেতু চালু হলে ওই অঞ্চলে অনেক শিল্প-কলকারখানা সৃষ্টি হবে। সারা দেশে অর্থনৈতিক জোন করা হচ্ছে। এসব চালু হলে তৈরি হবে লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান। বদলে যাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। দেশ পৌঁছে যাবে কাঙ্খিত লক্ষ্যে।
বিএনপি’র আমলের প্রসঙ্গ তুলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, তারা ক্ষমতায় থাকাকালে বিশ্ব কনসোর্টিয়াম ও উন্নয়ন সহযোগীর দ্বারে দ্বারে ঘুরতো দেশের বাজেটের টাকার জন্য। আর এখন দেশের নিজস্ব টাকায় বাজেট প্রণয়ন করা হচ্ছে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে উন্নয়ন সহযোগীরা অর্থায়ন যাচাই-বাছাই করে দেশের স্বার্থ বিবেচনা করে গ্রহণ করা হচ্ছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খান, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী আব্দুর রশিদ খান, অতিরিক্ত সচিব কাজী আশরাফ উদ্দীন, জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সালেহ আহমদ মোজাফফর বক্তব্য রাখেন। এসময়, স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং এর আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে, মো. তাজুল ইসলাম এলজিইডি’র বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্যোগে আয়োজিত বিজয় মেলার উদ্বোধন করে স্টল পরিদর্শন করেন।
পরে, মহান বিজয় দিবস-২০২১, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন মন্ত্রী।
সান নিউজ/এনএএম