শিরোনাম ::
তারেক রহমানের প্রতিনিধি হয়ে ‘ন্যাশনাল প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে’ যাচ্ছেন জাইমা আজ বিপজ্জনক পর্যায়ে রাজধানীর বায়ু এলপি গ্যাসের দাম বাড়বে না কমবে, জানা যাবে আজ বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য জরুরি উন্নয়নের আহ্বান আইসিইউ নয়, এইচডিইউতে সাবিনা ইয়াসমিন পঙ্গু হাসপাতালের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের সড়ক অবরোধ প্রিয়াঙ্কা চোপরার অভিযোগ, অন্তর্বাস দেখতে চেয়েছিলেন পরিচালক! গাজীপুরে পুলিশের ওপর হামলা করে আসামি ছিনতাই ফরিদা পারভীন গুরুতর অসুস্থ, নেওয়া হয়েছে আইসিইউতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি প্রত্যাখ্যান, তিতুমীরের অনশন ‘চলবে’
রবিবার, ০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৪৬ অপরাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য জরুরি উন্নয়নের আহ্বান

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

সংবাদ বিজ্ঞপ্তি:

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় চলতি সপ্তাহে “অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন ২০২৪” প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশনের (এএ) রূপান্তরকারী সম্ভাবনাকে তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনটি ২০২৪ সালে অর্জিত উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির বিবরণ আছে। পাশাপাশি বাংলাদেশে জলবায়ুজনিত দুর্যোগের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি থেকে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষিত রাখতে অর্থায়ন ও কভারেজ ঘাটতি মোকাবিলার জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।

অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন দুর্যোগের প্রভাব কমাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। ২০২৪ সালের প্রধান অর্জনগুলোর মধ্যে রয়েছে:
• বাংলাদেশ সরকার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাঠামোর সাথে অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন (এএ) আরও একীভূত করেছে, যার মধ্যে ২০১৯ সালে এটি দুর্যোগ বিষয়ক স্থায়ী আদেশ (SOD)-এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
• ২০২৪ সালে ১৫টি অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন (এএ) কার্যকর করা হয়েছে, যা ২০টি জেলাকে অন্তর্ভুক্ত করেছে এবং চারটি প্রধান বিপর্যয়ের সময়—বর্ষার বন্যা, আকস্মিক বন্যা, ঘূর্ণিঝড় এবং তাপপ্রবাহ—প্রায় ৪ লাখ ৩০ হাজার মানুষের কাছে পৌঁছেছে।
• বহুপক্ষীয় অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন টেকনিক্যাল ওয়ার্কিং গ্রুপ (AA TWG) গঠন করা হয়েছে, যা জাতীয় অগ্রাধিকারের সাথে আরও সুসংগত হয়েছে।
• অ্যান্টিসিপেটরি পরিকল্পনায় এল নিনো পূর্বাভাস ও অন্যান্য পূর্বাভাসমূলক মডেল যুক্ত করা হয়েছে, যা সময়োচিত ও লক্ষ্যভিত্তিক প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করেছে।
• অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন কার্যক্রমের জন্য মোট ১০.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সংগ্রহ করা হয়েছে, যেখানে বহুপাক্ষিক দাতাগণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।

এই প্রতিবেদন সম্পর্কে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর রহমান বলেন, “এই প্রতিবেদনটি অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশনের মূল শিক্ষা, প্রভাব এবং প্রসারের সুযোগ তুলে ধরেছে। ২০২৪ সালে, আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য অর্জন করেছি, যা অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশনের গুরুত্ব প্রমাণ করেছে। ঘূর্ণিঝড় রেমালের আগে নগদ সহায়তা প্রদান করে আমরা উপকূলীয় জনগোষ্ঠীর ক্ষয়ক্ষতি কমিয়েছি, জীবিকা সুরক্ষিত রেখেছি এবং মানুষের জন্য জরুরি সম্পদ নিশ্চিত করেছি। একইভাবে, জুলাই মাসের বন্যা ও স্থানীয় দুর্যোগের সময় অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশনের সহায়তা বড় ধরনের অর্থনৈতিক ক্ষতি প্রতিরোধে সহায়ক হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশনের কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত করে আরও দূর্যোগ মোকাবিলা করা, আগাম সতর্কতামূলক টুল উন্নতকরণ, এবং কমিউনিটি লেভেলে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।

এই অর্জন সত্ত্বেও প্রতিবেদনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাটতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যা দ্রুত সমাধান করা প্রয়োজন। ২০২৫ সালের জন্য একটি বড় অর্থায়ন ঘাটতি রয়ে গেছে—প্রয়োজনীয় ৪২ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে এখনও অর্ধেকের বেশি অর্থের যোগান নিশ্চিত করা যায়নি।

এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অর্থায়নের প্রয়োজন বর্ষার বন্যার জন্য (২৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার), ঘূর্ণিঝড়ের জন্য (১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) এবং আকস্মিক বন্যার জন্য (৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার)। এছাড়া, ২০২৪ সালে প্রয়োজনীয়তার মুখোমুখি ৫৪% এরও বেশি পরিবার সহায়তা পায়নি, যেখানে আকস্মিক বন্যার ক্ষেত্রে ৮৮.২% কভারেজ ঘাটতি ছিল। কভারেজ সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তা এখনও অত্যন্ত জরুরি।

প্রতিবেদনটি ২০২৫ সালে বাড়তে থাকা ঝুঁকির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশনের অব্যাহত প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেছে। এটি কভারেজের জন্য ২৩টি জেলা চিহ্নিত করেছে, যার মধ্যে শৈত্যপ্রবাহ, ভূমিধ্বস, খরা এবং ভারী বৃষ্টিপাতের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে নতুন কাঠামো অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

৪.১ মিলিয়ন এরও বেশি পরিবার বড় ধরনের বিপদে পড়ার সম্ভাবনায় রয়েছে, যার মধ্যে ২.৭ মিলিয়ন পরিবার উল্লেখযোগ্য প্রভাবের শিকার হতে পারে। এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার জন্য, প্রতিবেদনটি ঝুঁকি পুলিং, অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন বীমা এবং বহু-বছরের অর্থায়ন প্রতিশ্রুতি অনুসন্ধানের পরামর্শ দেয়, যাতে দীর্ঘমেয়াদী টেকসইতা নিশ্চিত করা যায়।

এই চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার জন্য প্রতিবেদনটিতে ঝুঁকি কমিয়ে আনা, অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন বীমা এবং বহু-বছরের অর্থায়ন প্রতিশ্রুতি অনুসন্ধানের পরামর্শ দেয়, যাতে দীর্ঘমেয়াদী টেকসই নিশ্চিত করা যায়।

“প্রতিবেদনটিতে বাংলাদেশে অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশন প্রতিষ্ঠা এবং কার্যকরী করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি তুলে ধরেছে, সেখানে অর্থায়ন এবং কভারেজ ঘাটতির চ্যালেঞ্জগুলো এখনও বিদ্যমান। এই ঘাটতিগুলি উন্নত সমন্বয়, উদ্ভাবনী অর্থায়ন এবং বিপদে কভারেজের মাধ্যমে সমাধান করা গেলে, বাংলাদেশ তার অ্যান্টিসিপেটরি অ্যাকশনে বৈশ্বিক নেতা হিসেবে অবস্থান শক্তিশালী করতে সক্ষম হবে,” বলেন রিকার্ডো সাপ্পো, হেড অফ প্রোগ্রামস, ডব্লিউএফপি বাংলাদেশ ।

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে এএ প্রচেষ্টায় সমর্থন দেওয়ার জন্য দাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে, যেমন ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, ইউএন সার্ফ, কইকা, এবং অন্যান্যদের ধন্যবাদ জানাই।”


আরো খবর: