নিজস্ব প্রতিবেদক,চকরিয়া::
কক্সবাজারের পেকুয়ায় পুরানো বর্গাচাষী মালিক সেজে বসে এবার মুল মালিকের ১১.১১ একর নাল জমি জবর দখলে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পেকুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন জমির মালিক ফাহিমা বেগম। তিনি চট্টগ্রাম মহানগরের রহমতগঞ্জ এলাকার রফিকুল ইসলামের স্ত্রী। তার নানার বাড়ি চকরিয়া উপজেলার ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের জমিদারপাড়া এলাকায়।
ভুক্তভোগী বাদি ফাহিমা বেগম লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের পূর্ব বিলহাসুরা এলাকার বাসিন্দা মো. বাচ্চুর নেতৃত্বে একদল ভূমিদস্যু পেকুয়া মৌজার ১১.১১ একর জায়গা জবর দখল করে আছেন। যার বিএস খতিয়ান নং ১৩৯২। বিএস দাগ নং ১১২৯০, ১১২৬৮, ১১২৫৭, ১১২৬৩ ও ১১২৬১। উল্লেখিত জমি আমার মায়ের ওয়ারিশসুত্রে প্রাপ্ত অংশের সম্পত্তি।
অভিযোগে তিনি বলেন, অভিযুক্ত বাচ্চু গত ১৬ জুন আমার বর্গাচাষীদের অকথ্য গালিগালাজ করে জমি থেকে উঠে যেতে বলেন। পাশাপাশি তাঁদের প্রাণে হত্যার হুমকি দেন। এ অবস্থায় যেকোন সময় ওই জমিকে কেন্দ্র করে অপ্রীতিকর কিছু ঘটে যেতে পারে।
অভিযুক্ত মো. বাচ্চু বলেন, প্রায় ৫০ বছর আগে থেকে এ জমিগুলো ফাহিমা বেগমের নানার কাছ থেকে আমরা বর্গা নিয়ে চাষ করে আসছি। এরমধ্যে কিছু জমি তাঁদের কাছ থেকে আমরা কিনেও নিয়েছি। কিন্তু ফাহিমা বেগম বর্তমানে অন্যায্য এক দাবী নিয়ে এসেছে। এছাড়া তিনি মিথ্যা অভিযোগ করতেছেন। আদালতে এ বিরোধীয় জায়গা নিয়ে মামলা চলতেছে।
জানতে চাইলে ফাহিমা বেগম বলেন, বাচ্চু গং একটা সময় আমাদের এই জমিগুলো দেখভাল করতো তা সত্য। কিন্তু গত দশ বছর ধরে তাঁরা আমার জমির কোন খাজনা দিচ্ছেনা। ইতিমধ্যে ঘরবাড়ি নির্মাণ করে অবৈধভাবে অনেক জমি জবর দখল করে ফেলছে। মাটির টপ সয়েল বিক্রি করে জমি নষ্ট করে ফেলছে। আরও কিছু জমিতে ঘরবাড়ি নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাই তাঁদের কাছ থেকে নিয়ে অন্য বর্গাচাষিদের দায়িত্ব দিয়েছি আমি। এতে তাঁরা বড় ধরনের জামেলা সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। খুন-খারাবির হুমকি দিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন,২০১৪ সালে লিখিত চুক্তির মাধ্যমে বাচ্চু মিয়াকে জমির দেখভালো করার জন্য নিয়োজিত করেছিলাম। অদ্যবদি জমি লাগিয়তের কোন টাকাও দেয়নি। চুক্তির শর্তসমুহ তিনি ভঙ্গ করেছেন। তাঁর সাথে করা চুক্তিনামা বাতিল করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন বলেন,এগুলো জমিদারি জায়গা। ফাহিমা বেগম বাচ্চুকে জমির রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কারবারি নিয়োগ করছিলেন। কিন্তু বাচ্চু নিজেই জমি জবর দখলের চেষ্টা করছে।
স্থানীয়রা বলেন,এখানকার জমিগুলি অভিশপ্ত। জবর দখলকে কেন্দ্র করে গত কয়েক বছরে ৬জন খুন হয়েছে। আমরা আবারো খুন-খারাবির মতো পরিস্থিতি লক্ষ্য করছি।
এব্যাপারে পেকুয়া থানার উপপরিদর্শক (এস আই) মো. রোকনুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর আমি ঘটনাস্থলে সরেজমিন তদন্ত করেছি। উভয় পক্ষকে ডাকা হয়েছে। এখন ওদের বক্তব্য শোনে পরবর্তী আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ##