পেকুয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি
কক্সবাজারের পেকুয়ায় খালার বাড়ি থেকে মো. আরিফুল ইসলাম (১৬) নামের এক কিশোর এর মরদেহ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। গত পহেলা জুন সকালে বাড়ির একটি কক্ষ থেকে বৈদ্যুতিক পাখার সাথে রশি পেঁচানো তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। এসময় মরদেহের শরীরে কোন ধরণের আঘাতে চিহ্ন পায়নি বলে জানান সুহতহাল প্রতিবেদনকারী পেকুয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাশেকুর রহমান।
জানাগেছে, গত ২৯ জুন রাতে সদর ইউনিয়নের মেহেরনামা নন্দীর পাড়া তার খালাতো ভাই আশরাফ আলীর সাথে খালার বাড়িতে বেড়াতে যান আরিফ। পহেলা জুলাই তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ে।
এদিকে আরিফুল ইসলামের রহস্যজনক মৃত্যু মেনে নিতে নারাজ তার পরিবার। তাদের দাবি বাড়িতে ডেকে নিয়ে আরিফকে হত্যা করে। পরে আত্মহত্যা করেছে বলে অপ্রচার চালায়। আইনি সহায়তা ও হত্যার বিচারের দাবিতে গত ৪জুলাই মঙ্গলবার মানববন্ধন করে আরিফের পরিবার। একদিকে আরিফের হত্যার আইনি সহায়তা পাবে কিনা অপরদিকে মিথ্যা অভিযোগে হয়রানির আশঙ্কা নিয়ে দুপরিবারের মধ্যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এ ব্যাপারে আরিফুল ইসলাম এর খালা শাহেনা বেগম বলেন, গত ২৯ জুন আরিফ আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে। পরেরদিন সকালে খাবার খেয়ে বাড়িতে চলে যাবে বলে বের হয় সে। বিকেলে আমি প্রতিবেশি হাসিনা বেগমের বাড়িতে গেলে সেখানে আরিফকে দেখতে পাই। বিকেলে দুপুরের খাবারও খায় আমার বাড়িতে। রাতে সে খাবার খেয়ে বাড়ির একটি কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখে আমি হতভম্ব হয়ে যাই। কি কারনে আরিফ আত্মহত্যা করেছে এখনো জানতে পারিনি।
তিনি আরো বলেন, আমার তিনজন পুত্রবধু আছে। বড় ছেলের আলাদা সংসার। দুই ছেলের বউ ঘটনার এক সপ্তাহ আগে বাপের বাড়িতে বেড়াতে গেছে। ছেলে আশরাফ আলীও শশ্বর বাড়িতে ছিল। আমার স্বামী বারেক অনেকদিন ধরে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি মাইজভান্ডার শরীফে আছে। আমি আর আরিফ ছাড়া বাড়িতে কেউ ছিলোনা। আরিফ আমার মা মরা ভাগিনা। তাকে আমরা মারতে পারিনা। আমাদের হয়রানির উদ্দেশ্যে এসব মানববন্ধন, অপপ্রচার করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে আশরাফ আলী বলেন, আরিফ আমার সাথে বাড়িতে বেড়াতে আসে। এক রাত আমার সাথে বাড়িতে ছিলো। যেদিন সে আত্মহত্যা করেছে সেদিন আমি শশ্বর বাড়িতে ছিলান। সে ছোট ছেলে। তার সাথে আমাদের শত্রুতা থাকার প্রশ্নেই আসেনা। তবু আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপির সদস্য আবু ছালেক বলেন, পুলিশ, স্থানীয় লোকজনসহ আমরা মরদেহ উদ্ধার করেছি। আমার মনে হয়না এটি হত্যাকান্ড। এরপরেও পুলিশ রহস্য বের করবে। হত্যাকান্ড হলে জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।
পেকুয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাশেকুর রহমান জানায়, লাশ উদ্ধারের সময় স্থানীয় মেম্বার, সাংবাদিক, সমাজপতিরা উপস্থিত ছিলো। সুরতহালের সময় শরীরে কোন ধরণের আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। এরপরেও প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।
উল্লেখ্য, নিহত আরিফুল ইসলাম সদর ইউনিয়নের পশ্চিম বাইম্যাখালী এলাকার আলী হোসেন এর ছেলে।