চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন পেকুয়ার বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হকের বিরুদ্ধে অবৈধ গাছ পাচারের জন্য প্রতি মাসে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, পেকুয়ায় অবৈধভাবে গড়ে উঠা ৩২টি করাতকলের জন্য মাদার ট্রি গর্জনসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ আসে বান্দরবানের লামা উপজেলার আজিজনগর, ফাইতং, চকরিয়ার হারবাং, ডুলাহাজারা, পঁহরচাদা, পেকুয়ার বারবাকিয়া, শিলখালী ও টইটং পাহাড়ী এলাকা থেকে। এসব গাছ করাতকল পর্যন্ত নির্বিঘ্নে পৌঁছাতে বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হককে প্রতিমাসে মাসোহারা দিতে হয়। আর এই মাসোহারা তুলে দেন পেকুয়া কাঠ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফরিদুল আলম।
বারবাকিয়ার বাসিন্দা ও কাঠ ব্যবসায়ী মো. রিদুয়ান বলেন, পেকুয়ার করাতকলে গাছ আনার জন্য প্রতিমাসে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিতে হয় রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হককে। আর এ টাকা মাসের শুরুতেই তাঁর কাছে পৌঁছে দিতে হয়। অন্যথায় সে গাছের গাড়ি জব্দ করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার ভয় দেখায়। আবার মাঝেমধ্যে টাকা দিলে জব্দ করা গাছের গাড়িও ছেড়ে দেয়।
এদিকে গাছ পাচারে রেঞ্জ কর্মকর্তাকে প্রতিমাসে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বুঝিয়ে দিতে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি শুরু করেছে পেকুয়া বাজার কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ফরিদুল আলম। রেঞ্জ কর্মকর্তাকে ১ লাখ টাকার উপরে তুলে দেওয়ার কথা বলে প্রতিমাসে ৩ লাখ টাকার উপরে চাঁদা তুলেন বলে জানায় পেকুয়ার হরিণাফাঁড়ি এলাকার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী মো. কায়সার। তিনি বলেন, করাতকলে গাছ আনতে রেঞ্জ কর্মকর্তাকে প্রতি মাসে দিতে হয় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। কিন্তু ফরিদ প্রতিমাসে তুলেন ৩ লাখ টাকার উপরে। এ যেন চাঁদাবাজি উপরে আরেক চাঁদাবাজি।
অবৈধ গাছ পাচার করতে গিয়ে পেকুয়ায় চাঁদাবাজির এ উৎসব একাধারে পরিবেশের ক্ষতির পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিও ঘটাচ্ছেন বলে মত দিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম। তিনি বলেন, অবৈধভাবে গাছ এনে পেকুয়ায় আশেপাশের বনভূমি উজাড় করছে গাছখেকো ও তাঁদের সাথে জড়িতরা। এছাড়া এই অবৈধ গাছ পাচারে প্রত্যক্ষ চাঁদাবাজির কারনে এলাকার আইনশৃঙ্খলা বিনষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি আমি আগামী মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় তুলে ধরবো।
অভিযোগ অস্বীকার করে বারবাকিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুল হক বলেন, এসব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। বনভূমি রক্ষায় আমি অবৈধ গাছ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় তাঁরা এসব অভিযোগ করতেছে।
এব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, পেকুয়ায় এভাবে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি কোনভাবে হতে দেওয়া হবেনা। যথাযথ অভিযোগ পাওয়া মাত্রই আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।
###