কক্সবাজারে স্বামী-সন্তান নিয়ে বেড়াতে আসা নারী পর্যটক ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার জিয়া গেস্ট ইন হোটেল ম্যানেজার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। শনিবার সন্ধ্যায় কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ রিয়াজ উদ্দিনকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হামীমুন তানজিনের আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করলে আদালত শুনানি শেষে ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের এসপি মো: জিল্লুর রহমান কক্সবাজার ভয়েসকে জানিয়েছেন, নারী পর্যটককে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার হোটেল ম্য্যনেজার রিয়াজ উদ্দিনকে এই মামলার তদন্তের জন্য জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। তাই, তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
তিনি কক্সবাজার ভয়েসকে আরও জানিয়েছেন, মামলাটির তদন্ত গুরুত্ব সহকারে নেয়া হচ্ছে। ধর্ষণের ঘটনায় সনাক্ত মুল আসামি আশিক, বাবু ও জয় সহ আরো যারা জড়িত তাদের গ্রেফতারে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
জিল্লুর রহমান কক্সবাজার ভয়েসকে জানান, ‘কক্সবাজারে আলোচিত নারী পর্যটক ধর্ষণ মামলাটি থানায় রুজু হওয়ার পর তদন্ত করে করার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশকে দেয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে ট্যুরিস্ট পুলিশ ট্যুরিস্ট পুলিশ ভিকটিম নারীকে মেডিকেল রিপোর্ট সহ নানা প্রয়োজনীয় কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। আসামীদের ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন-‘মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ন তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে। আমরা চাই মামলাটি তদন্ত সাপেক্ষে আসল ঘটনা উৎঘাটিত হউক এবং ন্যায় বিচার নিশ্চিত হউক। ’
এর আগে ধর্ষিতা নারী পর্যটকের জবানবন্দি গ্রহণ করেছে আদালত। শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হামীমুন তানজীনের আদালতে হাজির করে জবানবন্দি গ্রহন করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক রুহুল আমিন সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, গত ২২ ডিসেম্বর রাতে স্বামী-সন্তান নিয়ে কক্সবাজার বেড়াতে আসা ধর্ষণের শিকার হন নারী পর্যটক। ধর্ষণের শিকার নারীর ভাষ্য, ‘স্বামী-সন্তান নিয়ে ওইদিন সকালে ঢাকা থেকে কক্সবাজারে পৌঁছেন। উঠেন শহরের হলিডে সী-ল্যান্ডের ২০১নং কক্ষে। ওই দিন বিকালে স্বামী-সন্তানকে নিয়ে লাবণি বিচে যান। রাতে হোটেলে ফেরার পথে এক যুবকের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগে। এতে স্বামীর সঙ্গে বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে ওই যুবক। বাধা দিলে তার সঙ্গেও তর্কে জড়ায় যুবক। ওই সময় আরও দুই যুবক ঘটনাস্থলে এসে হাজির হয়। তারা স্বামী-সন্তানকে ইজিবাইকে তুলে দিয়ে ওই নারীকে আলাদা করে ফেলে। পরে ওই এলাকার একটি ঝুপড়ি ঘরে নিয়ে তিন জনে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এরপর স্বামী-সন্তানকে হত্যার ভয় দেখিয়ে শহরের জিয়া গেস্ট ইন নামের একটি হোটেলে নিয়ে যায়। এই ঘটনায় ধর্ষিতা নারীর স্বামী মামুন মিয়া বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলায় আশিকুল ইসলাম আশিক, বাবু, জয় ও রিয়াজ উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে আরো দুই তিন জনকে অজ্ঞাত আসামি দেখানো হয়েছে।