নিয়ামে, ০৭ এপ্রিল – পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজারের মরুভূমিতে বাংলাদেশিসহ কয়েক হাজার অভিবাসী আটকা পড়েছেন। ইউরোপ যাওয়ার জন্য দেশটির তপ্ত মরুভূমিতে হেঁটে বেড়াচ্ছেন তাঁরা। মরুভূমির তীব্র গরম থেকে বাঁচার জন্য পর্যাপ্ত আশ্রয়শিবিরও নেই সেখানে। ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার মধ্যে তাঁরা দেয়াল ও ত্রিপলের নিচে আশ্রয় নিয়েছেন। খবর এএফপির।
আলজেরিয়া থেকে বিতাড়িত শত শত অভিবাসী নাইজারের সীমান্তবর্তী এলাকা আসামাকায় জড়ো হন। অভিবাসীদের দীর্ঘ এই সারিতে অনেকে দুর্বল হয়ে পড়েছেন। যাঁরা একটু সবল তাঁরা এগিয়ে যাচ্ছেন এবং পিছিয়ে পড়ছেন দুর্বলেরা। এখন পর্যন্ত সাড়ে চার হাজারেরও বেশি অভিবাসনপ্রত্যাশী উত্তর নাইজারের সিলুয়েত্তে এলাকার সমতল মরুভূমিতে ভিড় করেছেন। তাঁদের মধ্যে মালি, আইভরি কোস্ট, সিরিয়া ও বাংলাদেশি নাগরিক রয়েছেন। ইউরোপে যাওয়ার আশায় তাঁরা ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ মরুভূমি পাড়ি দিয়েছেন।
জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) পরিচালিত একটি ট্রানজিট সেন্টার বিপুল সংখ্যক মানুষকে সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে পৌঁছানো অভিবাসীদের মাত্র এক-তৃতীয়াংশকে আশ্রয় দিতে পেরেছে সংস্থাটি।
আসামাকার পানির ট্যাঙ্ক শেষ হয়ে যাওয়ার পথে। খাবারের রেশনও অপর্যাপ্ত এবং সূর্যের কড়া তাপ থেকে রক্ষা পাওয়ার মতো যথাযথ আশ্রয়ের ব্যবস্থাও নেই সেখানে।
অভিবাসনপ্রত্যাশীদের দাবি, ইউরোপ যাত্রার আশায় আলজেরিয়া থেকে বের করে দেওয়ার আগে তাঁদের সবকিছু কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাঁদের কাছে বাড়িতে ফেরার মতো অর্থ নেই। এমনকি স্বজনদের সঙ্গে কথা বলার মতো সমর্থও নেই তাঁদের। ফলে তপ্ত মরুভূমির উন্মুক্ত কারাগারে তাঁদের মাসের পর মাস কাটাতে হচ্ছে।
নাইজারের মরুভূমিতে আটকা অভিবাসীদের মধ্যে চিকিৎসক, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীও আছেন। কিন্তু আইওএমের কাঁটাতারে ঘেরা দেয়ালের মাঝখানে কে কী, তার সবই ভুলে যেতে হচ্ছে।
আইভোরি কোস্টের নাগরিক হারমান এই অভিবাসীদের একজন। তিনি বলেন, আমরা গবাদি পশুর মতো হয়ে গেছি। অভিবাসীদের অনেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থ, নানা রোগে ভুগছেন। আমাদের সবাই ক্ষুধার্ত।
সূত্র: সমকাল
এম ইউ/০৭ এপ্রিল ২০২৩