ঢাকা, ২৮ সেপ্টেম্বর – ওমর সানী ও মৌসুমীর সন্তান ফারদিন এহসান স্বাধীন দুই কোটি টাকা খুইয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন। নিশাত বিন জিয়া রুম্মান নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে এ অভিযোগ এনেছেন তিনি। ফেসবুকের এক পোস্টের মাধ্যমে এ বিষয়টি সামনে আনেন ফারদিন, যা নিয়ে মুখ খুলেছেন ওমর সানীও।
ফারদিন এহসান স্বাধীন জানিয়েছেন, লাভের প্রত্যাশায় চলতি বছর সর্বমোট ২ কোটি ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা নিশাত বিন জিয়া রুম্মানের হাতে তুলে দেন তিনি। তবে এক মাস লাভ দেওয়ার পরই ভোল পাল্টে ফেলেন ওই ব্যক্তি। নানা টালবাহানা করতে থাকেন সেই ব্যক্তি।
ফারদিন লেখেন, ‘৪০-৫০ কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং অর্থ পাচার করেছেন নিশাত বিন জিয়া। আপনারা হয়তো এমটিএফই এবং এরকম অনেক অ্যাপের মাধ্যমে প্রতারণার কথা শুনেছেন। তবে কোনো অ্যাপ নয়, আজ একজন ভণ্ড প্রতারক এবং অর্থ পাচারকারীর বাস্তব ঘটনা আপনাদের সামনে তুলে ধরব।’
ফারদিনের সঙ্গে নিশাত বিন জিয়া রুম্মানের পরিচয় ২০২২ সালে। তারপরই ব্যবসায়িক লেনদেনে জড়িয়ে পড়েন তারা। ফারদিন লিখেছেন, ‘নিশাত বিন জিয়া রুম্মানের সঙ্গে আমার পরিচয় ২০২২ সালের মাঝামাঝি। তিনি নিজেই আমাকে দাওয়াত দেন। তারপর থেকেই জানাশোনা। বিভিন্ন সময় নিশাত নিজে নিজেই তার একটি আইটি ব্যবসার ব্যাপারে আমাকে ও আমার কিছু বন্ধুদের বলতে থাকেন। পরিচয় হওয়ার চার মাস পর আমাকে এবং আমার কিছু পরিচিত মানুষদের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গভীর হওয়ার পর কিছু নগদ অর্থ ব্যবসায়িক পুঁজি হিসেবে নিতে শুরু করেন। যদিও পরে জানা যায়—তার কোম্পানির নামে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট তো দূরের কথা, বৈধ কোনো ট্রেড লাইসেন্সই নেই।’
ফারদিন আরও জানান, তিনি ১০ থেকে ৩০ শতাংশ মুনাফার ফাঁদে পড়েছেন। বললেন, ‘আমার টাকাকে এক প্রকার ব্যবসায়িক লোন বলতে পারেন। এসব লেনদেন যেন বাংলাদেশ সরকারের চোখে না পড়ে তাই বিটকয়েন কিংবা ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে করে থাকে তারা। যা আমি পরে জেনেছি। ধাপে ধাপে তাকে ব্যবসায়িক ইনভেস্টমেন্ট ধার আকারে ২ কোটি ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা প্রদান করেছি এবং তার বিপরীতে তাকে আমি বলেছি, আমাকে সিকিউরিটি হিসেবে আমার ইনভেস্টমেন্ট মূল্যের ব্যাংকের চেক প্রদান করতে হবে। সেই চেক প্রদান করে সে আমার থেকে জানুয়ারি ২০২৩ সাল ২ কোটি ৫ লাখ ৭০ হাজার টাকা বুঝে নেন। বিভিন্ন সময় তার কাছে আমার হকের টাকা চাইতে গিয়ে আমাকে এবং আমার অফিসের কর্মচারীদের হয়রানির শিকার হতে হয়।’
অর্থপাচারের অভিযোগও এনেছেন ফারদিন। তার ভাষ্য, ‘নিশাত বিন জিয়া প্রতারণা করে অর্থ দুবাই পাচার করে ৩,০০,০০০ দেরহাম অর্থাৎ প্রায় এক কোটি টাকা এক সপ্তাহে ব্যবধানে খরচ করেন। পরে জানা যায়, তিনি প্রতারণার টাকা দিয়ে তার উচ্চবিলাসী জীবন দেখিয়ে গত ৮ মাসে প্রায় ৩০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করেছেন।’
ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে আইনি নোটিশ ও অভিযোগ জানিয়েছেন ফারদিন। তিনি বলেন, ‘আমি ঢাকা ডিবি অফিসে গত এক মাস আগে একটি লিখিত অভিযোগ প্রদান করেছি। আমার পাশাপাশি সব ভুক্তভোগীদের আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি। অনেকেই এখন মামলা করবে বলে এগিয়ে যাচ্ছেন। চেক দিয়েছে অর্থ আমাকে প্রদান করতে পারেনি তাই আমি চেকের মামলা দিচ্ছি, কিন্তু এত প্রতারণা অর্থপাচার এগুলোর জন্য কি কোনো বিচার হবে না?’
উল্লেখ্য, ফারদিন হলেন ওমর সানী ও মৌসুমীর প্রথম সন্তান। তিনি ফিল্ম মেকিংয়ে পড়াশোনা করেছেন। তা ছাড়া রেস্তোরাঁ ব্যবসার সঙ্গেও যুক্ত।
আইএ/ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩