হেলাল উদ্দিন, টেকনাফ::
আগামী ১০ জুলাই পবিত্র ঈদুল আজহা অর্থাৎ কুরবানির ঈদ। ঈদকে সামনে রেখে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন টেকনাফের বিভিন্ন এলাকার কামাররা। দিন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে তাদের ব্যস্ততা। এই ঈদে গরু, ছাগল, গয়াল কুরবানি পশু হিসেবে জবাই করা হয়। এসব পশুর গোশত কাটতে দা-বটি, ছুরি-ছোরা, চাপাতি ইত্যাদি ধাতব হাতিয়ার অপরিহার্য।
যেহেতু কুরবানির পশু কাটাকুটিতে চাই ধারালো দাঁ, বটি, চাপাতি ও ছুরি। তাই কয়লার চুলায় দগদগে আগুনে গরম লোহার পিটাপিটিতে টুং টাং শব্দে মুখর হয়ে উঠেছে টেকনাফ পৌর শহর, হ্নীলা, হোয়াইক্যং, বাহার ছড়া, সাবরাং-শাহ পরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিন দ্বীপে।
এবার কামার শালাগুলো ব্যাপক ভাবে ব্যাস্ত হয়ে পড়েছে। আর সামনে আগুনের শিখায় তাপ দেয়া হাতুড়ি পেটানোর টুং টাং শব্দে তৈরি হচ্ছে দা-বটি, চাপাতি ও ছুরি। পশু কুরবানিতে এসব অতীব প্রয়োজনীয়। তাই যেন দম ফেলারও সময় নেই কামারদের। নাওয়া-খাওয়া ভুলে কাজ করছেন কামাররা। কাকডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছেন তারা। সারা বছর তেমন কাজ না থাকলেও কুরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে কয়েকগুণ ব্যস্ততা বেড়ে যায় কামারদের।
কয়েকজন কামারের সাথে আলাপ করে জানা যায়, পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, দা ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা, বটি ২৫০ থেকে ৫০০, পশু জবাইয়ের ছুরি ৩০০ থেকে ১ হাজার টাকা, চাপাতি ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আসন্ন কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে অনেক ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা।
পশু জবাইয়ের সরঞ্জামাদি কিনতেও লোকজন ভিড় করছেন তাদের দোকানে। আগে যে সব দোকানে দু,জন করে শ্রমিক কাজ করতো, এখন সে সব দোকানে ৫-৬ জন করে শ্রমিক কাজ করছেন।
কামার দোকানদারদের অভিযোগ কুরবানির ঈদ উপলক্ষে কয়লার দাম ও শ্রমিকদের দাম বেড়ে গেছে। অপরদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ ঈদ উপলক্ষে দাঁ, চাপাতি ও ছুরির দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে। ছুরি শান দেওয়ার জন্য ৫০ টাকা থেকে শুরু করে কাজের গুণাগুণের উপর ভিত্তি করে ২০০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। কুরবানির ঈদ উপলক্ষে কামারদের বেচা কেনা দ্বিগুণ বেড়ে গেছে। কয়লার দাম ও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
ঈদকে সামনে রেখে কাজের চাপ বেশি। কাজের চাপে কখন খাওয়ার সময় চলে যাচ্ছে আমরা টেরও পাই না। চাপাতি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকায়। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে আমাদের বিক্রি তত বাড়ছে।
নতুন করে অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এই অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে বাইরের এলাকা থেকেও অর্ডার নেওয়া হয়।
সারা বছর কাজের চাপ থাকে না। যা লাভ এই ঈদ মৌসুমেই। তাই ঈদে সামান্য একটু বেশি নিয়ে থাকি। তবে এবারের ঈদে চাপ বেশি যেহেতু লকডাউনে দোকান বন্ধ ছিল, এ কারণে কাজের চাপ বেড়েছে। কামাররা বলছে ঈদ এলে লোহার দাম না বাড়লেও কয়লার দাম বৃদ্ধি পেয়ে যায়।