শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৫৮ অপরাহ্ন
নোটিশ::
কক্সবাজার পোস্ট ডটকমে আপনাকে স্বাগতম..  

টেকনাফের হ্নীলায় শত্রুতার জেরে বৃদ্ধের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর-লুটপাট

প্রতিবেদকের নাম:
আপডেট: রবিবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা বড় লেচুয়াপ্রাংয়ে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একদল চিহ্নিত দুর্বৃত্ত বৃদ্ধের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বাসগৃহ ভাঙচুর এবং ঘরে থাকা লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

শুক্রবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে এঘটনা ঘটে। এলাকার চিহ্নিত বখাটে যুবক আব্দুল গফুর এবং আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে এই হামলা ও লুটের ঘটনা সংঘটিত হয় বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কিছুদিন আগে এলাকায় একটি অনাকাঙ্খিত হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। ওই ঘটনায় পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে আক্রান্ত বৃদ্ধ আবুল হোছেনের স্ত্রী সহ পরিবারের কমপক্ষে ৭ সদস্যকে আসামী করে। মামলায় ষড়যন্ত্রমূলক ভাবে আসামী হবার পর যখন পরিবারের সকল সদস্যরা ঘর বাড়ি ছেড়ে আত্মগোপনে চলে যায় তখন এই সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে চিহ্নিত ওই দুর্বৃত্তের দল। ঘরে কেউ না থাকায় দিনে দুপুরে অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে এলাকার বখাটে মাদকাসক্ত এবং মাদক ব্যবসায়ী আবুল কাসেমের পুত্র আব্দুল গফুর এবং গুরা মিয়ার পুত্র আব্দুর রহমান তাদের দলবল সহ সাথে নিয়ে হামলা চালায় আবুল হোছেন ও আবছার উদ্দিনের বাসগৃহে। দুজনের ঘরবাড়ি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে কেটে ফেলে। ঘরের ভেতরে থাকা আসবাব পত্র ভাঙচুর করে। এবং যাওয়ার সময় নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার সহ লক্ষাধিক টাকার গুরুত্বপূর্ণ মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।

জানা যায়- আবুল হোছেন ও তার ভাইয়ের পুত্র আবছার উদ্দিনের সাথে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী আব্দুল গফুর ও আব্দুর রহমানের পরিবারের অপরাপর লোকজনের সাথে দীর্ঘদিনের পূর্ব শত্রুতা ছিলো। এর জের ধরে শুক্রবার সকালে দলবদ্ধ হয়ে বৃদ্ধের বাড়িতে হামলা চালায়। এসময় আব্দুর রহমানের সাথে দেশীয় অস্ত্র ও দা কিরিচ সহ সঙ্গ দিয়েছিলো- ছৈয়দ আলম প্রকাশ গুরা মিয়ার পুত্র আবু বক্বর (২৫), আবু ছিদ্দিক (৩০), হাছান আহম্মদ (২২), মুক্তারের স্ত্রী আরেফা বেগম (৩৫) এবং নুর হোসেনের স্ত্রী নুর বাহার (২৭)।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়- একটি স্পর্শকাতর মামলার আসামী হয়ে বৃদ্ধ আবুল হোসেনের পরিবারের প্রায় সব সদস্যই এলাকাছাড়া হয়ে আছেন। আক্রান্ত ঘর দুটির চতুর্দিকের টিনের বেড়া ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে। আর কিছু অংশের বেড়া টেনে হিচড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ঘরের ভেতরের সমস্ত আসবাব পত্র কেটে ফেলা এবং চুর্নবিচুর্ণ করা হয়েছে। মামলার আসামী হয়ে ঘরটির গৃহীনি মহিলা সারা খাতুন এলাকাছাড়া হওয়ায় তার দুই অবুঝ সন্তান ঘরের ভেতরে অনেকটাই মানবেতর জীবন যাপন করতে দেখা গেছে।

সার্বিক বিষয়ে খবরাখবর সংগ্রহ শেষে গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করলে সাংবাদিকদের ঘটনার বিষয়ে অবগত করা ও তথ্য দেওয়ার অপরাধে অভিযুক্ত ওই সন্ত্রাসীরা পূণরায় ফিরে এসে ঘরে থাকা বৃদ্ধ আবুল হোছন (৫০) ও তার দুই ছেলে রিয়াজ উদ্দিন ও হেলাল উদ্দিনকে বেদড়ক পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করে। আহত তিনজনকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন এলাকার প্রবীন মুরুব্বী আব্দুশ শুক্কুর।

ভুক্তভোগী আবুল হোছেন জানান- সম্প্রতি যে হত্যাকান্ড হয়েছে এতে আমরা সকলেই ব্যথিত। কিন্তু দুঃখজনক ভাবে ষড়যন্ত্রমূলক ও হয়রাণিমূলক পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমার স্ত্রী ও সন্তানদের আসামী করা হয়েছে। এখন তারা সবাই এলাকাছাড়া হয়ে আছে। এটাকে সুযোগ হিসেবে নিয়ে উল্লেখিত দুর্বৃত্তরা এখন ঘরবাড়িতে হামলা চালিয়ে আমাকেও উচ্ছেদ করতে চাইছে। লুটপাট চালাচ্ছে। এমনকি আমার বড় ছেলে জালাল উদ্দিন যে দীর্ঘদিন ধরে ঢাকায় থাকে তাকেও আসামী করা হয়েছে। অথচ আমার ছেলে জালাল বিমানে ঢাকা থেকে এসে হত্যাকান্ডে নিহত ওই যুবকের জানাজায় অংশগ্রহণ করে। যার প্রমাণ আমাদের হাতে আছে। তাকেও এই মামলায় আসামী করা হয়েছে।

এবিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হ্নীলার ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন- কয়েকদিন আগে একটি হত্যাকন্ড সংঘটিত হয়েছিল। এতে যাদের বিবাদী করা হয়েছে তাদের ঘরবাড়িতে গিয়ে বাদী পক্ষের লোকজন আব্দুল গফুর ও আব্দুর রহমানের নেতৃত্বে হামলা চালিয়েছে। ঘটনাটি নজরে আসার পর হামলাকারীদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে। পরবর্তীতে সাংবাদিকরা চলে যাবার পর ঘরে থাকা বৃদ্ধ আবুল হোসেন ও তার দুই ছেলের উপর হামলার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে হামলাকারীদের কঠোরভাবে সতর্ক করা হবে বলেও জানান তিনি।

এবিষয়ে মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মো. রফিকুল ইসলাম রাফির বক্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলে তিনিও ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন- আক্রান্ত পরিবারটি জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে সহায়তা চেয়েছিলো। এর প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে একজন কর্মকর্তা গিয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত করে আসেন বলেও দাবী করেন।

এবিষয়ে টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন- হত্যাকান্ডের বিষয়টি নজরে আছে। তবে ঘটনা পরবর্তী হামলার বিষয়ে এখন জানলাম। সংক্ষুব্ধ পক্ষ অভি


আরো খবর: