রাজধানীর শাজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতি হত্যা মামলায় আসামি তৌফিক হাসান ওরফে বিডি বাবুকে জামিন দেননি হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ জামিন আবেদন বাতিল করে এটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন।
এদিন শুনানিতে আসামি পক্ষে আইনজীবী হিসেবে ছিলেন রুহুল কুদ্দুস কাজল। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহমদ ভূঁইয়া।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আসামি তৌফিক হাসান ওরফে বিডি বাবুর দেখানো মতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করা হয়। তাই সে জামিন পেতে পারে না। এছাড়া এ মামলাটি এখনও তদন্তাধীন রয়েছে। তাই আদালত তাকে জামিন না দিয়ে আবেদনটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন।
এদিকে গত বছরের ২৪ মার্চ রাত ১০টার দিকে বাসায় ফেরার পথে শাজাহানপুর আমতলা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে দুর্বৃত্তদের এলোপাথাড়ি গুলিতে নিহত হন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু। এসময় রিকশা আরোহী কলেজছাত্রী প্রীতি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। পরে এ ঘটনায় টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি মামলা করেন।
অপরদিকে এ মামলায় অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়েছিল। পরে গ্রেপ্তার শুটার মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশের স্বীকারোক্তিতে মূল পরিকল্পনাকারী ও সমন্বয়কারী হিসেবে মুসার নাম আসে। পরে জানা যায়, মুসা ঘটনার আগেই ওই বছরের ১২ মার্চ দেশ ছেড়ে আমিরাত চলে যান। পরে পুলিশ সদর দপ্তর ৮ এপ্রিল মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ইন্টারপোলের মাধ্যমে যোগাযোগ শুরু করে।
এর দুমাস পর ৮ মে জানা যায়, মুসা দুবাই থেকে ওমানে প্রবেশ করেছে। এরপর ইন্টারপোলের ওমান পুলিশ এনসিবির সহযোগিতায় গত ১২ মে মুসাকে গ্রেপ্তার করে। পরে গত ৯ জুন বাংলাদেশ পুলিশের একটি দল ওমানে গিয়ে মুসাকে দেশে নিয়ে আসে। পরে ১০ জুন তাকে ৬ দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
রিমান্ড শেষে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন মুসা। কিলিং মিশনে কার কী ভূমিকা ছিল সে বিষয়ে তথ্য দেয় সে। মুসার দেওয়া তথ্য যাচাই করতে বিভিন্ন সময় আরও বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি। এর মধ্যে টিপু হত্যা পরিকল্পনায় টিটু, রবিন ও সোহেল সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে টিটু নিহত সাবেক যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক খান মিল্কির ঘনিষ্ঠ ছিল বলে জানা যায়।
অপরদিকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত বছরের ১৬ আগস্ট ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ সংবাদ সম্মেলনে মোটরসাইকেল চালক শামীম হোসাইন ওরফে মোল্লা শামীম (৩৫), তৌফিক হাসান ওরফে বাবু (৩৪), সুমন হোসেন (৩৫), এহতোশাম উদ্দিন চৌধুরী অপু (৩৭) ও শরিফুল ইসলাম হৃদয়কে (২৭) গ্রেপ্তাররের কথা জানান। এরপর গত বছরের ২৮ নভেম্বর মহানগর দায়রা জজ আদালত বাবুর জামিন আবেদন বাতিল করেন। পরে তিনি হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
সূত্র: ঢাকাটাইমস
,