ঢাকা, ২০ এপ্রিল – ঈদুল ফিতরের জন্য জাতীয় ঈদগাহ ময়দান প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে দেশের প্রধান ঈদ জামাতের সার্বিক প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা জানান তিনি।
ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘আমরা আশা করছি মহামান্য রাষ্ট্রপতি আমাদের সঙ্গে ঈদের জামাতে অংশ নেবেন। পাশাপাশি মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, সংসদ সদস্যরা, সচিব, কূটনৈতিকরা ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিরা অংশ নেবন। ঢাকাবাসী ও সাধারণ মুসল্লিদের সবার জন্য সুষ্ঠু আয়োজন করা হয়েছে। ওজুখানাসহ মহিলাদের জন্য আলাদা পথ রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত খাবার পানির ব্যবস্থা রেখেছি যাতে করে এই ভ্যাপসা গরমে কেউ যেন কষ্ট না পায়।’
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ‘সবদিক বিবেচনা করে হঠাৎ করে ঝড়-বৃষ্টি হলে যাতে পানি জমতে না পারে বা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত না হতে পারে, তাই পুরোটাই আমরা ত্রিপল দিয়েছি এবং পর্যাপ্ত পাখা ও চিকিৎসা সহযোগিতার ব্যবস্থাও রেখেছি। গতবারের তুলনায় এবার স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্র বেশি রাখা হয়েছে, চিকিৎসক বেশি রাখা হয়েছে। কারণ, যে তীব্র দাবদাহ চলছে তাতে কেউ অসুস্থ হলে যেন সেবা দেওয়া যায়, সেজন্য সিভিল সার্জন অফিসসহ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আলাদা স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের ব্যবস্থা করেছে।’
ব্যারিস্টার তাপস বলেন, ‘আর যেহেতু মহামান্য রাষ্ট্রপতি আসবেন, তাই এসএসএফসহ আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছেন। আমরা আশাবাদী, একটি সুন্দর, সুষ্ঠু পরিবেশে ব্যাপক মুসল্লির অংশ্রগহণে আমরা ঈদের মূল জামাত আয়োজন করতে পারছি। সুতরাং আমরা পরিপূর্ণভাবে প্রস্তুত রয়েছি। জাতীয় ঈদগাহে সবাইকে সাদরে অভ্যর্থনা জানাতে আমরা অপেক্ষায় আছি।’
মুসল্লিদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি, বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে এবং তীব্র দাপদাহ রয়েছে। সুতরাং সবাইকে এ ব্যাপারে সচেতন-সতর্ক থাকবে আহ্বান করছি। দয়া করে কেউ কোনো দিয়াশলাই অথবা লাইটারজাতীয় কোনো বস্তু আনবেন না। নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যরা এ ব্যাপারে সজাগ থাকবে, সতর্ক থাকবে। তাই সবাইকে বিনয়ের সঙ্গে আহ্বান করছি, আপনারা কেউ এ ধরনের বস্তু আনবেন না।’
জাতীয় ঈদগাহে সবাইকে নামাজ আদায়ের আমন্ত্রণ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মহিলাদের নামাজের জন্য এখানে যেমন আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে তেমনই বের হওয়ার জন্যও আলাদা গেটেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে। নামাজ শেষে মুসল্লিরা বের হওয়ার সময় যেন কোনো হুড়োহুড়ি না হয়, সে কারণে বের হওয়ার জন্য আমরা পর্যাপ্ত পথ রেখেছি। ঝড়-বৃষ্টি হলে ভেতরে যেন পানি ঢুকতে না পারে তার জন্যও বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সুতরাং আমরা সবাই মিলে খুব সুন্দর একটা পরিবেশে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করব। ঢাকাবাসীসহ সবাইকে আহ্বন করব, আপনারা আসবেন। জামাতে অংশগ্রহণ করবেন। আমরা একইসঙ্গে সবাই মিলে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করব।’
এ সময় জানানো হয়, ২৫ হাজার ৪০০ বর্গমিটার আয়তনের জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের প্যান্ডেলে এক সঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি ঈদের জামাতে শরিক হতে পারবেন। এছাড়া প্যান্ডেলের বাইরে চারপাশের রাস্তাগুলোতেও আরও অর্ধ-লক্ষাধিক ব্যক্তিবর্গ ঈদ জামাতে অংশগ্রহণ করে থাকেন।
পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মধ্যে দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, ভারপ্রাপ্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. হায়দর আলী, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. ফজলে শামসুল কবির, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ২০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ রতন, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর, গণপূর্ত অধিদপ্তর, পুলিশ এবং র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: আমাদের সময়
এম ইউ/২০ এপ্রিল ২০২৩