আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে প্রতিদিনই নিত্যনতুন ঘটনার জন্ম হচ্ছে। কাগজে কলমে ৭ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করলেও মাঠে প্রচার প্রচারণায় রয়েছেন মাত্র তিনজন প্রার্থী। বাকীদের অণুবীক্ষণ যন্ত্র দিয়েও খুজে পাওয়ার যাচ্ছে না।
উখিয়া-টেকনাফ আসনে প্রতিদ্বন্দি ৭ প্রার্থীরা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নুরুল বশর (ঈগল), আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য শাহীন আক্তার (নৌকা), জাতীয় পার্টির নুরুল আমিন সিকদার ভুট্টো (লাঙল), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) ফরিদুল আলম (আম), তৃণমূল বিএনপির মুজিবুল হক মুজিব (সোনালী আঁশ), ইসলামি ঐক্যজোটের মোহাম্মদ ওসমান গনি চৌধুরি (মিনার) ও বাংলাদেশ কংগ্রেসের মোহাম্মদ ইসমাইল (ডাব)।
এদের মধ্যে মূল নির্বাচনী প্রতিযোগীতায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী, বর্তমান সংসদ সদস্য শাহিন আক্তার (নৌকা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবরণে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল বশর (ঈগল)। জাতীয় পার্টির প্রার্থী নুরুল আমিন ভুট্টো মাঠে গণসংযোগে থাকলেও সেটা সম্পুর্ন উখিয়া উপজেলা কেন্দ্রিক।
শাহিন আক্তার ও নুরুল বশর উখিয়া উপজেলা ও টেকনাফ উপজেলায় প্রতিদিন জন্ম দিচ্ছেন নতুন নতুন চমক। এই চমকের অংশ হিসাবে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মুর্শেদ ও হৃীলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী দুই ভাই পৃথক প্রার্থীর পক্ষে ভোট যুদ্ধের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। হৃীলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মোহাম্মদ আলী নৌকার প্রার্থী শাহিন আক্তারের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করে হৃীলা ইউনিয়নে চষে বেড়াচ্ছেন। অপর দিকে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব মুর্শেদ ঈগল প্রতীকের প্রার্থী নুরুল বশরের পক্ষে উখিয়া-টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামগঞ্জে ভোট কামনা করে মিছিল, মিটিং, গণসংযোগ করে যাচ্ছেন দিন-রাত। মাহবুব মুর্শেদ এবার নির্বাচনে অন্যতম একজন দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও উখিয়া-টেকনাফ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলীর বড় ছেলে মাহবুব মুর্শেদ ও মেজ ছেলে রাশেদ মোহাম্মদ আলীর পৃথক প্রার্থীর পক্ষে এই ভোট প্রার্থনা ভোটারদের মধ্যে বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছে। মাহবুব মুর্শেদ ও রাশেদ মোহাম্মদ আলী দুই জন আপন ভাই। নৌকার প্রার্থী নাকি ঈগল প্রার্থীর মধ্যে শেষ পর্যন্ত কে জিতবে সেটা উপর নির্ভর করবে বড় ভাই নাকি ছোট ভাই বিজয়ের মালা পড়বে সেটা!
অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী একজন পরিচ্ছন্ন, ত্যাগী, ব্যক্তিত্ববান রাজনীতিবিদ হিসাবে পুরো কক্সবাজার জেলায় সুখ্যাতি ছিলো। অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী হৃীলা ইউনিয়ন পরিষদের ৩ বারে চেয়ারম্যান ছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসাবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে ছিলেন। এছাড়া তিনি ১৯৯১ ও ২০০১ সালেও আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসাবে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পাশাপাশি তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কক্সবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষক ছিলেন।