কক্সবাজারে বর্জন-কারচুপির অভিযোগে ভোটগ্রহণ শেষ
ভোটে কারচুপি ও এজেন্ট বের করে দেওয়ার অভিযোগে কক্সবাজারের তিন আসনে তিন প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। কয়েকজন চলমান ভোট স্থগিত করে পুনরায় ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়ে আবেদন করেছেন।
রোববার (৭ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে কক্সবাজার জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহম্মদ শাহীন ইমরানের কার্যালয়ে ভোট স্থগিত চেয়ে আবেদনের পর ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন কক্সবাজার-৩ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ।
জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ব্যারিস্টার মিজান গণমাধ্যমকে বলেন, কক্সবাজার-৩ আসনে ১৬৭ কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর নেতৃত্বে ১৩০টি কেন্দ্র দখল করে ব্যালেটে জোরপূর্বক সিল মারা হয়েছে। বিষয়টি লিখিতভাবে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জানানো হয়। আবেদনে ভোট স্থগিত করে পূণঃনির্বাচনের দাবি জানিয়ে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছি।
কক্সবাজার-৩ আসনে ভোটার রয়েছে চার লাখ ৮৯ হাজার ৬১০ জন। ১৬৭টি ভোটকেন্দ্রের মাঝে রামুতে ৬৪টি, কক্সবাজার সদরে ৭৬টি ও নবগঠিত ঈদগাঁও উপজেলায় ৩৬টি।
এ আসনের জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তারেকও বলেছেন, নৌকা প্রতীকের পক্ষে রামু উপজেলার বিভিন্ন কেন্দ্রে নানা প্রভাব বিস্তারের তথ্য রয়েছে। কিছু কেন্দ্র দখলের খবরও রয়েছে তার কাছে। বিষয়টি প্রশাসনকে দ্রুত নজর দেয়ার দাবি জানিয়েছি।
কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন (হাতঘড়ি) বলেন, আমি ভোটের মাঠে রয়েছি। বিভিন্ন কেন্দ্রে এজেন্ট বের করে দেওয়া হচ্ছে। কিছু কর্মীদের মারধরও করা হচ্ছে। প্রভাব বিস্তার লক্ষণীয়।
এ আসনের প্রার্থীরা হলেন, আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের বর্তমান সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার মিজান সাঈদ, জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ তারেক, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আব্দুল আউয়াল মামুন, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির শামীম আহসান ভুলু, ও বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের মোহাম্মদ ইব্রাহিম।
অপরদিকে ভোট কারচুপি ও কেন্দ্র থেকে এজেন্টের বের করে দেয়ার অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করেছেন কক্সবাজার-৪ আসনের জাতীয় পার্টি মনোনীত নাঙ্গল প্রতীকের প্রার্থী নুরুল আমিন সিকদার ভুট্টো। দুপুর ১টার দিকে উখিয়ায় তার নিজ অফিসে কক্ষে গণমাধ্যমকর্মীদের ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে তিনি এ ঘোষণা দেন।
ভূট্টো বলেন, সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়। কিন্তু যেসব কেন্দ্রে আমি ভোট পাব সেসব কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে।
একই অভিযোগ তুলে বেলা ৩টার দিকে ভোট বর্জন করেছেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি নুরুল বশর।
তিনি বলেন, কেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতি, জাল ভোট, এজেন্ট বের করে দেওয়া ও নজিরবিহীন অনিয়ম, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষপাত করে আমার নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাই আমি এই ভোট বর্জন করলাম।
কক্সবাজার-৪ এর সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা উখিয়ার ইউএনও তানভীর হোসেন জানান, কোনো প্রার্থীর পক্ষে কেউ লিখিত বা মৌখিকভাবে বিষয়টি জানাননি। প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তা কর্মী, ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম জানান, কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। কোথাও কেন্দ্র দখলের তথ্য পাওয়া যায়নি। পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করেছেন।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মুহম্মদ শাহীন ইমরান জানিয়েছেন, সকাল থেকে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ চলে নিয়মমতো বিকেল ৪টায় শেষ হয়। এরমধ্যে কয়েকজন প্রার্থী ভোট স্থগিত চেয়ে লিখিত আবেদন দিয়েছেন। ব্যস্ততার কারণে সেসব আবেদন পড়া হয়নি।
সুত্র:জাগো নিউজ